অভিষেক চৌধুরী, কালনা: সাংসদ তহবিলের অর্থে গড়ে ওঠা শৌচালয়ে জামা, কাপড় ঢেলে রমরমিয়ে চলছে ব্যবসা! কালনা হাসপাতালের ভিতর এমনই এক দৃশ্য দেখে স্বাভাবিক কারণেই চোখ কপালে ওঠে সাংসদ সুনীলকুমার মণ্ডলের। রীতিমত ক্ষুব্ধ হন তিনি। ধমকও দেন ওই ব্যবসায়ীকে। এরপরেই তিনি জানান, টেন্ডার পাওয়া ব্যক্তিকে শোকজ করা হবে।
কালনা হাসপাতাল সুপারের অফিস সংলগ্ন এলাকাতেই কয়েক বছর আগে সাংসদ তহবিলের টাকায় গড়ে উঠেছিল একটি শৌচালয়। সেটি চালানোর জন্য টেন্ডারও পান সুশান্ত মজুমদার ওরফে পুটান নামের এক ব্যক্তি। কিন্তু সেই শৌচালয়কে টাকার বিনিময়ে অন্য একজনের হাতে তুলে দেন তিনি। আর এরপরেই সেই শৌচালয় বর্তমানে বস্ত্র প্রতিষ্ঠানের রূপ নিয়েছে। থরে থরে ঢেলে সাজানো রয়েছে জামাকাপড়। শুধু তাই নয়,পাশে থাকা আরও একটি ঘরে ঠাঁই হয়েছে সাইকেল ও বাইকের। সোমবার হাসপাতালে এসে তা নজরে পড়তেই ক্ষুব্ধ হন সাংসদ সুনীলকুমার মন্ডল। এরপরেই অবিলম্বে তিনি শৌচালয় থেকে দোকান সরানোর নির্দেশ দেন।
[আরও পড়ুন: রাজ্যে বৃষ্টি আসতে ঢের দেরি, কতদিন চলবে তাপপ্রবাহ? অস্বস্তিকর পূর্বাভাস হাওয়া অফিসের]
দোকান খুলে বসা কালনার রংপাড়ার বাসিন্দা গোকুল মণ্ডল জানান, “এর টেন্ডার পায় পুটান নামের একজন। মোটা টাকার বিনিময়ে এই ঘর দুটি আমাকে ভাড়া দেয় ওই ব্যক্তি। শৌচাগার ঠিকমত চলে না। দু-পাঁচ টাকায় হয় না। পেটের দায়েই করতে হচ্ছে। আমার সংসার চলে না। তাই করছি।” হাসপাতালে আসা রোগীর পরিবারের কয়েকজনের দাবি,“দীর্ঘদিন ধরেই শৌচালয়টি বন্ধ হয়ে গিয়েছে। এভাবেই একজনকে জামাকাপড় বিক্রি করতে দেখা যায়।”
সাংসদ সুনীল মণ্ডল বলেন, “এর আগে একটি গরিব ছেলেকে ঘরটা দেওয়া হয়। তার আগে ঘরটা বন্ধ ছিল। আজ খোলা অবস্থায় ওভাবে দেখতে পাই। সঙ্গে সঙ্গে ব্যবস্থা নিতে বলেছি। ওখানে খুব তাড়াতাড়ি দু’জনকে রাখা হবে। তাঁরা ২৪ ঘন্টা দু-পাঁচ টাকা নিয়ে পরিষেবা দেবেন।” হাসপাতাল সুপার চন্দ্রশেখর মাইতি বলেন, “টয়লেটটা চলছে অনেকদিন ধরে। এই অবৈধ জামা, প্যান্ট বিক্রির ঘটনাটা বেশিদিন নয়। আমি আসার কিছুদিন আগে থেকেই এটা চলছে। আমরা বন্ধ করার উদ্যোগ নিয়েছি। দু-চারবার বন্ধ করলেও মাঝেমধ্যেই উনি খুলতেন। সাংসদ আসার পর এটা যাতে বন্ধ হয়, ওই ব্যক্তিকে ডেকে বলেছি। আগামিদিনে এটা চালুর উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে।”