বুদ্ধদেব সেনগুপ্ত, নয়াদিল্লি: গতবারের তুলনায় লোকসভা ভোটে আসন সংখ্যা বেড়েছে দলের। কিন্তু সামগ্রিক ফলাফল নিয়ে চরম অসন্তুষ্ট কমরেডকুলের নেতারা। বিশেষ করে কেরল ও বাংলার ফলাফল পার্টিকে হতাশ করেছে। সিপিএম কেন্দ্রীয় কমিটির বৈঠকে সেই হতাশা চেপে রাখতে পারলেন না দলের সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরি। ৩ বছর আগে দ্বিতীয়বারের জন্য দল কেরলে ক্ষমতায় এলেও লোকসভা ভোটে মাত্র একটি আসনে জয় পেয়েছে তারা। অর্থাৎ ২০১৯ সালের ফলাফলে ফিরে গিয়েছে। রাজ্যে ক্ষমতায় থেকেও কেন এমন ভরাডুবি, তার গভীর অনুসন্ধান করতে হবে বলে ইয়েচুরি জানান। অন্যদিকে, বাংলায় নবীন মুখ সামনে এনেও কেন মানুষের মন জয়ে ব্যর্থ হল দল, তার প্রকৃত কারণ খুঁজে বের করা হবে বলেও জানা গিয়েছে সিপিএম সূত্রে।
লোকসভা নির্বাচনে (2024 Lok Sabha Election) পার্টির ভরাডুবির কারণ খুঁজতে শুক্রবার থেকে দিল্লিতে শুরু হয়েছে সিপিএম কেন্দ্রীয় কমিটির বৈঠক। বৈঠকের প্রথমদিনই নির্বাচনে ভরাডুবি নিয়ে রিপোর্ট পেশ করেন সীতারাম ইয়েচুরি (Sitaram Yechuri)। রিপোর্টে কেরল ও বাংলা নিয়ে হতাশা গোপন করেননি তিনি। তবে তামিলনাড়ু ও রাজস্থানে পার্টির শক্তি বাড়ায় আশাপ্রকাশ করেন। বিশেষ করে রাজস্থান থেকে জয়ী হয়ে সংসদে গিয়েছেন কৃষক নেতা আমরা রাম। কিন্তু সবচেয়ে বেশি হতাশ করেছে কেরল (Kerala)। দক্ষিণের এই রাজ্যে এবার একটি মাত্র আসন পেয়েছে পার্টি। গতবারও একই অবস্থা হয়েছিল। টানা দু’বার ক্ষমতায় থাকার ফলে প্রতিষ্ঠান বিরোধী হাওয়া কাজ করেছে নাকি বিজেপি শক্তি বাড়িয়ে ভোট কেটেছে তাও খতিয়ে দেখার প্রয়োজন রয়েছে বলে পরামর্শ দেন ইয়েচুরি।
[আরও পড়ুন: সায়ন্তিকা-রেয়াতের শপথ জট নিয়ে বিধানসভার স্পিকার-AG কথা, আইনই ভরসা?]
আর বাংলার (West Bengal) ক্ষেত্রে জোট করার পরেও কেন মানুষের মন জয় সম্ভব হলো না, তা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন কেন্দ্রীয় কমিটির একাধিক সদস্য। তবে বঙ্গ কমরেডদের তরফে সাফাই, প্রথমত তৃণমূল ও বিজেপির মেরুকরণের রাজনীতির মাঝেও চারটি আসনে জয় নিয়ে আশা ছিল। কিন্তু সেই আসনগুলোতে আগেরবারের তুলনায় কিছু ভোট বাড়লেও জয়ের জায়গায় পৌঁছনো যায়নি। কেন ভোটবাক্সে মানুষের সমর্থন টানতে ব্যর্থ হলো সিপিএম, তা জানতে এবার সাধারণ মানুষের কাছে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে সাফাই দিলেন আলিমুদ্দিনের কর্তারা।
[আরও পড়ুন: ‘ষড়যন্ত্র করে ৫ মাস আটকে রেখেছিল’, জেল থেকে বেরিয়েই তোপ হেমন্তের]
সূত্রের খবর, এসব সাফাইয়ের মাঝেই পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটির (CPM Central Committee) এক সদস্য বৈঠকে জানান, ভোটের প্রচারে অর্থের অভাব থাকলেও পুরনো অনেক কর্মী যাঁরা বসে গিয়েছেন, তাঁরা সাহায্য করেছেন। কিন্তু প্রচারে তৃণমূলের বিরুদ্ধে সুর সপ্তমে তোলা হলেও বিজেপির ক্ষেত্রে কিছু নরম অবস্থান ছিল দলের। INDIA জোটে থেকেও কেন তৃণমূলের (TMC)বিরুদ্ধে অন্ধ বিরোধিতা, তা নিয়ে মানুষের মধ্যে প্রশ্ন দেখা দিয়েছিল। তাই বিজেপি (BJP) বিরোধী বহু মানুষ শেষ মূহুর্তে মত পরিবর্তন করেছেন বলেই মনে হয়। আগামী দিনে রাজ্যে বিজেপিকে প্রধান শত্রু হিসেবে চিহ্নিত করে এগোনোর প্রস্তাব দেন কেন্দ্রীয় কমিটির ওই সদস্য বলে সূত্রের খবর।