অর্ণব আইচ: পার্ক স্ট্রিটের একটি নামী হোটেলে খেতে এসে বিল মেটানো নিয়ে গোলমাল। আর এই ঝামেলা থেকেই ধরা পড়ে গেলেন কলকাতায় গা ঢাকা দেওয়া মধ্যপ্রাচ্যের বাহরিনের জার্মান রিফিউজি। যদিও ওই ব্যক্তির দাবি, কলকাতায় নাকি তাঁর পরিবার থাকে। এদিকে পুলিশের কাছে খবর রয়েছে, জার্মানিতে যে শরণার্থীরা থাকেন, তাঁদের মধ্যে একাংশের বিভিন্ন ধরনের অপরাধ করার প্রবণতা রয়েছে। ফলে, ওই ব্যক্তি কোনও অপরাধ করার পর কলকাতায় পালিয়ে এসে গা ঢাকা দিয়েছিলেন কি না, তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ।
পুলিশ সূত্রে খবর, সোমবার দুপুরে পার্ক স্ট্রিটের একটি রেস্তরাঁয় আসেন জালাল জাসিম খাসিম নামে ৪২ বছরের এক ব্যক্তি। কিন্তু খাওয়ার পর বিল নিয়ে রেস্তরাঁ কর্তৃপক্ষের সঙ্গে তাঁর গোলমাল হয়। খবর পেয়ে ওই রেস্তরাঁয় যান পার্ক স্ট্রিট থানার পুলিশ আধিকারিকরা। ওই ব্যক্তির মুখে ভাঙা ভাঙা ইংরেজি শুনে পুলিশের সন্দেহ হয়। তল্লাশি চালানোর পর জাসিমের কাছ থেকে একটি জার্মান রিফিউজি বা শরণার্থীর কার্ড উদ্ধার হয়। তাঁকে পার্ক স্ট্রিট থানায় নিয়ে এসে পুলিশ জানতে পারে, তিনি আসলে বাহরিনের বাসিন্দা। পরে সেখান থেকে জার্মানিতে গিয়ে তিনি শরণার্থীর কার্ড পান। তার ভিত্তিতেই পাসপোর্ট ও ভারতে আসার পর্যটন ভিসা সংগ্রহ করেন।
[আরও পড়ুন: CAA চালু হতেই শুভেন্দুর মুখে মতুয়াদের ‘হরি বোল’, ধরনার হুঁশিয়ারি মমতাবালার]
জানা গিয়েছে, ২০২১ সালের জুলাইয়ে জাসিম কলকাতায় এসেছিলেন। এর পর তাঁর পাসপোর্ট ও ভিসার মেয়াদ ফুরিয়ে যায়। এনিয়ে লিগ্যাল এইডের আইনজীবী নবনীতা মণ্ডল জানান যে, ধৃত ওই বিদেশি তাঁকে জানিয়েছে , তাঁর স্ত্রী ও পরিবারের সদস্যরা কলকাতায় রয়েছেন। সেই টানেই তিনি এই শহরে এসেছেন। তদন্তে পুলিশের কাছে জাসিম দাবি করেন, তাঁর স্ত্রী ও মেয়ে ট্যাংরা এলাকায় থাকেন।
যদিও পুলিশের মতে, প্রায় তিন বছর আগে কলকাতায় চলে আসার পর এখানেই থেকে গিয়েছেন। আর দেশে ফিরে যাননি। সেই ক্ষেত্রে তাঁর স্ত্রী আগে থেকেই কলকাতায় থাকতেন নাকি, কলকাতায় আসার পর সে ট্যাংরায় বিয়ে করে শ্বশুরবাড়িতে গা ঢাকা দিয়েছিল, পুলিশ তা জানার চেষ্টা করছে। এদিন ধৃতকে ব্যাঙ্কশাল আদালতে তোলা হলে তাকে ১৪ দিনের জন্য জেল হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেন বিচারক। সে কলকাতায় থেকে এতদিন ধরে কী কাজ করত, তার সঙ্গে বাহরিনের যোগাযোগ ছিল কি না, তা জানতে তদন্ত চলছে।