নন্দিতা রায়, নয়াদিল্লি: প্রচারে বেরিয়ে পদে পদে বাধা পাচ্ছে দলের প্রার্থীরা। বিজেপির (BJP) ইশারায় রাজ্য নির্বাচন কমিশন বাধা দিচ্ছে তৃণমূলকে। বৃহস্পতিবার দিল্লিতে নির্বাচন কমিশনের ফুল বেঞ্চের সামনে গোয়া নিয়ে একগুচ্ছ নালিশ জানিয়ে এল তৃণমূল কংগ্রেস (TMC)। দাবি করল, গোয়ায় অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন চায় তৃণমূল। কিন্তু তাঁদেরই পদে পদে বাঁধা দেওয়া হচ্ছে।
ইতিমধ্যেই গোয়া ভোটের জন্য তিন দফায় নিজেদের প্রার্থী তালিকা ঘোষণা করে দিয়েছে তৃণমূল। মনোনয়ন পর্বও শুরু হয়ে গিয়েছে। কিন্তু প্রচারে বেরিয়েই পদে পদে বাঁধার সম্মুখীন হতে হচ্ছে। এরাজ্যের শাসকদলের দাবি অবাধ এবং সুষ্ঠু ভোট হলেই গোয়ার মাটিতে ভাল ফল করবে তৃণমূল। বৃহস্পতিবার সৌগত রায়ের নেতৃত্বে চার সদস্যের এক প্রতিনিধিদল সেরাজ্যে অবাধ এবং সুষ্ঠু নির্বাচনেরই দাবি জানিয়ে এসেছে। ওই প্রতিনিধি দলে ছিলেন সাংসদ অপরূপা পোদ্দার, আবীর বিশ্বাস এবং শান্তনু সেন। এই প্রথম গোয়া নিয়ে নির্বাচন কমিশনের দ্বারস্থ তৃণমূল।
[আরও পড়ুন: ‘ভারতে বিপন্ন গণতন্ত্র’, ফের মোদি সরকারের সমালোচনায় প্রাক্তন উপ-রাষ্ট্রপতি হামিদ আনসারি]
গত ২১ জানুয়ারি মাঝরাতে পানাজিতে তৃণমূলের পার্টি অফিসে হঠাত হানা দেয় নির্বাচন কমিশনের (Election Commission) একটি প্রতিনিধি দল। সেসময় পার্টি অফিসে কেউ না থাকা সত্ত্বেও অফিসের সামনেকার হোর্ডিং খুলে দেওয়া হয়। মূলত সেই নিয়েই এদিন অভিযোগ জানিয়ে এসেছে তৃণমূলের প্রতিনিধি দল। দিল্লিতে কমিশনের ফুল বেঞ্চের সামনেই নিজেদের বক্তব্য পেশ করেন তৃণমূলের প্রতিনিধিরা। বৈঠক শেষে তৃণমূল সাংসদ সৌগত রায় (Sougata Roy) জানিয়েছেন, “আমরা ন্যায়বিচার চাই। কমিশনের সঙ্গে কথা বলে সন্তুষ্ট। আমাদের অভিযোগ ওঁরা শুনেছেন। কমিশনের নিয়ম অনুযায়ী, সি-ভিজিল অ্যাপে কেউ অভিযোগ করলে ১০০ মিনিটের মধ্যে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। মাঝরাতে কেউ বদমায়েশি করে সি-ভিজিল অ্যাপে তৃণমূলের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছে। যাতে আমাদের উপর হানা দেওয়া হয়। সেকারণেই নির্বাচন কমিশন আমাদের অফিসে হানা দেয়।” সৌগতর বক্তব্য, “আমরা গোয়াতে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন চায়। আমাদের কেন টার্গেট করা হচ্ছে? সেটা আমরা কমিশনের কাছে জানতে চায়। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Mamata Banerjee) ছবিতে আগেও কালী লাগানো হয়েছে। আমাদের গোয়ার দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতা সৌরভ চক্রবর্তীর গাড়ি আটকে তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। কমিশন বলেছে ওঁরা নিশ্চিত করবে যে গোয়ায় নির্বাচন সুষ্ঠু ও অবাধ হবে।”
[আরও পড়ুন: মোদির চাপে কমানো হচ্ছে ফলোয়ার সংখ্যা! টুইটারের সিইও পরাগ আগরওয়ালকে চিঠি রাহুলের]
এদিকে, বৃহস্পতিবারই নিজের ইস্তফা নিয়ে যাবতীয় গুজব উড়িয়ে দিলেন গোয়ার তৃণমূল নেতা লুইজিনহো ফ্যালেইরো। গোয়ায় তৃণমূলের প্রার্থী তালিকা প্রকাশের পরই জল্পনা ছড়িয়ে পড়ে লুইজিনহো (Luizinho Faleiro) নাকি নিজের আসন নিয়ে অসন্তুষ্ট। যেখান থেকে তিনি ভোটে লড়তে চেয়েছিলেন, সেই কেন্দ্র তাঁকে দেওয়া হয়নি। তারপর থেকে লুইজিনহোর সঙ্গে তৃণমূল শীর্ষনেতাদের দূরত্ব বাড়া নিয়েও বিস্তর গুজবও ছড়িয়েছে। কিন্তু বৃহস্পতিবার লুইজিনহো সব গুজব উড়িয়ে দিয়ে জানিয়েছেন, “তৃণমূল থেকে আমার ইস্তফার খবর ভুয়ো এবং বিভ্রান্তিমূলক। গোয়ায় তৃণমূলের প্রতি জনসমর্থন টলাতে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে এই ধরনের খবর ছড়াচ্ছে। তৃণমূলই একমাত্র দল যারা গোয়ার জন্য লড়ছে এবং জিতবে।”