সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: হলমার্ক ছাড়া আর কোনও সোনার গয়না (Gold Ornaments) বিক্রি নয়। গ্রাহকদের যাতে কোনওভাবে না ঠকতে হয় এবং পাশাপাশি বিক্রেতারা যাতে বিশুদ্ধ সোনা বিক্রি করে সেকারণেই এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে কেন্দ্রের ক্রেতা সুরক্ষা দপ্তর। আগেই এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেওয়া হলেও বুধবার থেকে কার্যকর হল এই নিয়ম। তবে এখনই গোটা দেশে নয়, আপাতত দেশের ২৫৬টি জেলায় এই নিয়ম কার্যকর হয়েছে। আগামিদিনে ধাপে ধাপে তা গোটা দেশে কার্যকর করা হবে।
এই প্রসঙ্গে মঙ্গলবার একটি টুইটও করেছিলেন কেন্দ্রীয় বাণিজ্য মন্ত্রী পীযূষ গোয়েল। টুইটে লেখেন, “গ্রাহকদের আরও ভাল পরিষেবা ও সুরক্ষা দিতে ২৫৬টি জেলায় ১৬ জুন থেকেই সোনার গয়নায় হলমার্ক আবশ্যিক করা হচ্ছে। তবে ২০২১ সালের আগষ্ট মাস পর্যন্ত কোনও পেনাল্টি নেওয়া হবে না। সরকারের এই সিদ্ধান্তে বিশ্বের সোনার বাজারে ভারত আরও অগ্রণী ভূমিকা নেবে।’
[আরও পড়ুন: রাতারাতি ২৫ শতাংশ পড়ল শেয়ারের মূল্য! আম্বানির প্রতিপক্ষ হওয়ার পথে বড় ধাক্কা আদানি গোষ্ঠীর]
প্রসঙ্গত, সোনার গয়নায় হলমার্কিংয়ের প্রাথমিক পরিকল্পনাটি কার্যকর করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে। ডেডলাইন দেওয়া হয়। কিন্তু স্বর্ণব্যবসায়ীরা আরও কিছুদিন সময় দেওয়ার জন্য আবদন জানান। তারপরই ডেডলাইন বাড়িয়ে ১৫ জুন করা হয়। কিন্তু সোনার গয়নায় থাকা হলমার্ক আসলে কী? খাঁটি সোনা দিয়ে গয়না তৈরি করা সম্ভব নয়। তাই তার সঙ্গে নির্দিষ্ট পরিমাণমতো খাদ মেশানো হয়। এরপরই তা থেকে বিভিন্ন উপায়ে তৈরি করা হয় হরেক রকমের গয়নাগাটি। কিন্তু গয়না তৈরির সময় সোনার মধ্যে কোন প্রস্তুতকারক কতটা খাদ মেশাচ্ছেন হলমার্ক না থাকলে তা বোঝা সম্ভব নয়। সংশ্লিষ্ট সংস্থা হলমার্ক গয়না কাগজপত্র ছাড়া বিক্রি করতে পারে না। সেক্ষেত্রে ওই কাগজপত্রেই উল্লেখ করা থাকে ঠিক কত পরিমাণ খাদ মেশানো রয়েছে আপনার গয়নায়। আর তাই এবার থেকে হলমার্কযুক্ত গয়নাই কিনতে হবে ক্রেতাদের।
এরপরও যদিও কোনও গ্রাহকের মনে গহনার শুদ্ধতা নিয়ে প্রশ্ন জাগে তাহলে বিএসআই স্বীকৃত কোনও গয়না পরীক্ষণ কেন্দ্রে গিয়ে তা পরীক্ষা করাতে পারবেন ক্রেতারা। প্রসঙ্গত, সারা দেশে ৫৭৮টি হলমার্ক গহনা পরীক্ষণ কেন্দ্র রয়েছে। এর মধ্যে পশ্চিমবঙ্গে রয়েছে ৫৪টি। আর কলকাতায় রয়েছে ২৮টি পরীক্ষণ কেন্দ্র। সোনার প্রতিটি গয়না পরীক্ষা করাতে খরচ ৩৫ টাকা। এর সঙ্গে ধার্য প্রযোজ্য পরীক্ষণ শুল্ক দিতে হয়। মূলত গ্রাহকদের সুবিধার কথা ভেবে সোনার গয়নায় হলমার্ক বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। এদিকে, কেন্দ্র জানিয়েছে, যে সব গয়না সংস্থা বা ব্যবসায়ীর বার্ষিক ব্যবসার পরিমাণ ৪০ লক্ষ বা তার কম, তাদের ক্ষেত্রে হলমার্কিং বাধ্যতামূলক নয়। এছাড়া ২০, ২৩, ও ২৪ ক্যারাট সোনা হলমার্কিংয়ের যোগ্য হবে। সরকারের ঘোষণার পরে অনেকেরই মনে আশঙ্কা দেখা দিয়েছে, পুরনো সোনার ক্ষেত্রে কী হবে। সেগুলি তো হলমার্কিং নয়। এ ক্ষেত্রে কেন্দ্রের আশ্বাস, পুরনো সোনার গয়না, যেগুলি হলমার্কিং নেই, সেগুলি নিয়ে দুশ্চিন্তার কিছু নেই। এই নির্দেশিকা শুধুমাত্র বিক্রেতাদের জন্য। ক্রেতাদের জন্য নয়।