সুমিত বিশ্বাস ও সঞ্জিত ঘোষ: রাজ্যের দুই প্রান্তে সোনার নামী বিপণির দুই দোকানে দুঃসাহসিক ডাকাতি। একদিকে পুরুলিয়ার নামো বাজার এলাকার দোকান থেকে ৮ কোটি মূল্যের সোনার গয়না লুট করা হয়েছে। অন্যদিকে নদিয়ার রানাঘাটে একই কায়দায় ডাকাতি হয়। সেখানে কত টাকার গয়না খোয়া গিয়েছে তা এখনও স্পষ্ট নয়। তবে রানাঘাটে ডাকাতি করতে এসে গুলি ছোঁড়ে দুষ্কৃতীরা। এই ঘটনায় চারজনকে আটক করেছে পুলিশ।
পুরুলিয়া শহরে নামোপাড়া এলাকায় সোনার বিপণীটি রয়েছে। মঙ্গলবার দুপুরে অন্যান্য দিনের তুলনায় দোকানে কম কর্মচারী ছিলেন। স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রথমে ক্রেতা সেজে দোকানে ঢোকে দুই দুষ্কৃতী। বিভিন্ন সোনার গয়না দেখছিল তারা। পরে তাদের দলের আরও পাঁচজন সেখানে আসে। এরপর দোকানের দুই নিরাপত্তারক্ষীকে দড়ি দিয়ে বেঁধে ফেলে ক্রেতাদের কাছ থেকে ও দোকান থেকে কয়েক কোটি টাকার সোনার গয়না লুট করে। এমনকী, দোকানের ক্যাশবাক্স থেকে লক্ষাধিক টাকা নগদ নিয়ে চম্পট দেয় তারা। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছেছে পুরুলিয়া সদর থানার পুলিশ। দোকান সংলগ্ন রাস্তায় ব্যাপক যানজট। বন্ধ সোনার বিপণীও। জানা গিয়েছে, দুষ্কৃতীরা হিন্দি-বাংলা মিশিয়ে কথা বলছিল। বাইকে চেপে এসেছিল তারা। সঙ্গে হেলমেটও ছিল।
জানা গিয়েছে, দোকানের মালিক সৌরভ দাঁ অন্য আরেকটি বিপণীর ফ্র্যাঞ্চাইজি নিয়েছেন। এদিন দুপুরেই তার উদ্বোধন। সেই উপলক্ষে দোকানের অধিকাংশ কর্মচারী ব্যস্ত। ফলে অন্য়ান্য দিনের তুলনায় এদিন কম সংখ্যক কর্মচারী ছিলেন দোকানে। এদিন যে দোকানে কম কর্মচারী থাকবে, তা কি আগেই জানতে পেরেছিল দুষ্কৃতীরা, সেই সুযোগেই সোনার দোকানটি টার্গেট করা হয় এদিন? দোকানের অভ্যন্তরের কেউ কি দুষ্কৃতীদের সঙ্গে যুক্ত? তাঁরাই কি আগেভাগে খবর পৌঁছে দিয়েছিল? এই সমস্ত প্রশ্ন উত্তর খুঁজছে পুরুলিয়া পুলিশ। এ প্রসঙ্গে পুরুলিয়ার পুলিশ সুপার অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছেন, “ঘটনার তদন্ত চলছে।” স্থানীয়রা বলছেন, বহুদিন পর পুরুলিয়ার বুকে এরকম দুঃসাহসিক ডাকাতির ঘটনা ঘটল।
অন্যদিকে ফিল্মি কায়দায় ক্রেতা সেজে ৯ জন দুষ্কৃতী আগ্নেয়াস্ত্র দেখিয়ে, প্রায় কুড়ি মিনিটের মধ্যে সাফ করে দেয় রাজ্যের মধ্যে একই স্বর্ণ বিপণির রানাঘাটের চাবি গেটের দোকানে। তিনটি বাইকে চেপে পালিয়ে যাওয়ার সময় দুষ্কৃতীদের সঙ্গে রানাঘাট থানার পুলিশের গুলির লড়াই চলে। এরপরেই চারজন কে ধরে ফেলেন তাঁরা। উদ্ধার হয় একটি ব্যাগ।সোনা, রুপো বিভিন্ন মূল্যবান ধাতুর অলংকার তো বটেই, হিরে এবং অন্যান্য মূল্যবান পাথর সহ কয়েক কোটি টাকার অলঙ্কার লুঠ হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে আন্দাজ করা হচ্ছে।