সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: নিষ্পাপ শিশু নগ্ন হবে এ আর আশ্চর্য কী? তবে হৃদয়হীন কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বেঁধে দেওয়া নিয়মে ‘ফারাক’ বোঝে না। তাঁর সাজানো চোখে নগ্নতা ক্ষমাহীন অপরাধ। তা সে শিশুই হোক বা প্রাপ্তবয়স্ক। সোশাল মিডিয়ায় (Social Media) সেই নিয়মের বেড়াজালে ‘আটকা পড়ে’ আদালতের দ্বারস্থ হলেন গুজরাটের (Gujarat) এক ব্যক্তি। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার কাণ্ডজ্ঞান দেখে তাজ্জব খোদ আদালত। পালটা নোটিস গেল ‘টেক গুরু’ গুগলের দপ্তরে।
গুগলের বিরুদ্ধে আদালতে নালিশ করেন পেশায় কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়র নীল শুক্লা নামে বছর ২৪-এর এক যুবক। গত বছর গুগল ড্রাইভে নিজের ২ বছর বয়সী একটি ছবি পোস্ট করেন। যেখানে দেখা যায়, এক নগ্ন শিশুকে স্নান করাচ্ছেন তার ঠাকুমা। শিশুটি আর কেউ নয়, নীলের কম বয়সের ছবি। যদিও বিষয়টি সাদা চোখে অত্যন্ত স্বাভাবিক মনে হলেও যন্ত্রের চোখে হয়ে ওঠে স্পর্শকাতর। শিশুকে ‘নির্যাতন’ এবং ‘যৌন হেনস্তা’র অভিযোগে ওই ছবির বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ নেয় কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা। গত প্রায় এক বছর হল ‘ব্লক’ রয়েছে নীলের ইমেল আইডি। এমন কড়া শাস্তির জেরে চরম সমস্যার মুখে পড়তে হয় তাঁকে। অতঃপর গত ১২ মার্চ গুগলের বিরুদ্ধে গুজরাট হাই কোর্টের (Gujarat High Court) দ্বারস্থ হন তিনি। মামলা শুনে রীতিমতো আশ্চর্য হন বিচারপতি। এমন অতিসক্রিয়তায় ‘টেক গুরু’ গুগলকে জবাবদিহি করে নোটিস পাঠায় আদালত।
[আরও পড়ুন: নমাজের সময় কেন বাজছে হনুমান চল্লিশা? কর্নাটকে ব্যবসায়ীকে বেধড়ক মার]
আদালতে মামলাকারীর দাবি করেন, নিজের ২ বছর বয়সী নগ্ন ছবি কীভাবে ‘অশ্লীল’ হতে পারে? যার জন্য গত বছর এপ্রিল মাস থেকে তাঁর ইমেল অ্যাকাউন্ট বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে? আদালতে নীলের আইনজীবী বলেন, ‘এই ঘটনায় আমার মক্কেল ব্যবসায়িক ক্ষেত্র তো বটেই ব্যক্তিগত জীবনেও প্রবল সমস্যার মুখোমুখি।’ সমস্যার গুরুত্ব বুঝে আদালতের তরফে গুগলকে নোটিস পাঠানো হয়েছে। এই ঘটনায় নীল বলেন, ‘গত বছর এপ্রিম মাসে অ্যাকাউন্ট ব্লক করার পর গুজরাট পুলিশ এবং কেন্দ্রের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিভাগের সঙ্গে যোগাযোগ করি। কিন্তু কোনও কিছুতেই কিছু হয়নি। তাই বাধ্য হয়ে আদালতের দ্বারস্থ হয়েছি।’
[আরও পড়ুন: নির্বাচন ঘোষণার পরেও কেন্দ্রীয় ওয়েবসাইটে মোদি-শাহ-রাজনাথের ছবি! শুরু বিতর্ক]
অবশ্য গুগলের এমন কীর্তি নতুন কিছু নয়। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাকে বোকা বানিয়ে একদিকে যেমন বেড়েছে অপরাধের বাড়বাড়ন্ত, ঠিক অন্যদিকেই আবার প্রযুক্তির যান্ত্রিক চোখে নিয়মভঙ্গের অভিযোগে কড়া শাস্তির মুখে পড়তে হয়েছে গ্রাহককে। এবার এই ঘটনা আরও একবার প্রমাণ করল যন্ত্র আসলে যন্ত্রই। মেধার সীমাবদ্ধতায় হোচোঁট খায় সে।