অর্ণব দাস, বারাকপুর: জুট মিলের ইতিহাসে নজির। টানা ২৭ বছর বন্ধ থাকার পর খুলছে নৈহাটির প্রাচীন গৌরীপুর জুট মিল। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে বন্ধ কারখানা খোলার উদ্যোগ নেয় শ্রম দপ্তর। চত্বরে আগাছা গজিয়ে ওঠা একটি জুট মিলকে আইনি ঝামেলা থেকে বাঁচিয়ে খোলার তৎপরতাও হয়। মঙ্গলবারই শ্রমমন্ত্রী মলয় ঘটক ও সেচমন্ত্রী তথা নৈহাটির বিধায়ক পার্থ ভৌমিকের উপস্থিতিতে সমঝোতা চুক্তি সই হল গৌরীপুরের পাঁচটি ট্রেড ইউনিয়ন ও নতুন সংস্থার মধ্যে। এভাবে বন্ধ কারখানার দরজা খোলা অর্থাৎ শিল্পের ধ্বংসস্তূপ থেকে ফিরে আসার নজির দেশে বিরলই বটে।
চুক্তি অনুসারে ২০ ফেব্রুয়ারি থেকে মিলের রক্ষণাবেক্ষণের কাজ শুরু হবে। এক মাসের মধ্যে মিলের উৎপাদন প্রক্রিয়া ধাপে ধাপে চালু হবে। চুক্তি অনুসারে কর্মক্ষম ও ইচ্ছুক শ্রমিকদের, সন্তানদের এবং এলাকার ইচ্ছুক যুবকদের কাজে অগ্রাধিকার দেওয়া হবে। আইএনটিটিইউসি-র রাজ্য সভাপতি ঋতব্রত বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, বাম জমানায় যে মিলগুলি বন্ধ করে অন্ধকার ঘনিয়ে দেওয়া হয়েছিল শিল্পাঞ্চলে, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে সেখানেই আলো জ্বলছে। হাজার হাজার মানুষের কর্মসংস্থান হবে।
[আরও পড়ুন: এক কোটি পরিবারকে বিনামূল্যে বিদ্যুৎ! প্রকল্পের সূচনা মোদির, কীভাবে আবেদন করবেন?]
বস্তুত ১৯৯৭ সালের শেষ দিকে বন্ধ হয়ে যায় নৈহাটি-গরিফা এলাকার গৌরীপুর জুট মিল। কাজ হারান হাজারও মানুষ। আশপাশের হুকুমচাঁদ খোলা থাকলেও নিষ্প্রভ হয়ে পড়ছিল শিল্পাঞ্চল। সেই সময় যাঁরা কাজ করতেন তাঁদের কিছুজন তৎকালীন বিহার-ওড়িশা বা উত্তরপ্রদেশে ফিরে গিয়েছেন। এদিনের চুক্তিতে বাম সংগঠনও সায় দিয়েছে। ৫টি ট্রেড ইউনিয়ন, নতুন প্রোমোটার আশ্রয় ব্যাপার প্রাইভেট লিমিটেডের মধ্যে একটি সমঝোতা চুক্তি স্বাক্ষরের পর স্থানীয় পুরনো শ্রমিক বা শ্রমিক পরিবারের মানুষের মধে্য খুশির হাওয়া। বকেয়া টাকা কীভাবে ফিরে পাবেন, তা নিয়ে দুশ্চিন্তায় ছিলেন তাঁরা। এদিনের চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে ছিলেন আইএনটিটিইউসি-র রাজ্য সভাপতি ঋতব্রত বন্দ্যোপাধ্যায়, বিধায়ক তথা তৃণমূল শ্রমিক সংগঠনের জুট ইউনিটের রাজ্য সভাপতি সোমনাথ শ্যাম, বিসিএমইউর সুব্রত সেনগুপ্ত, আইএনটিইউসির নিজাম মাস্টার, বিএমএস-এর বিনোদ সিং, এআইসিসিটিইউ-এর নবেন্দু দাশগুপ্ত, শেখ সামাদ-সহ অতিরিক্ত শ্রম কমিশনার তীর্থঙ্কর সেনগুপ্ত-সহ শ্রম ও শিল্প পুনর্গঠন দপ্তরের আধিকারিকরা।