সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: রাজ্য বিধানসভায় পাশ হওয়া 'অপরাজিতা' বিলে এখনই ছাড়পত্র দেবে না রাজভবন। স্পষ্ট ইঙ্গিত দিলেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। রাজ্যপালের দাবি, "এই বিলের সঙ্গে রাজ্যের তরফে কোনও টেকনিক্যাল রিপোর্ট পাঠানো হয়নি। যা বিলে ছাড়পত্র দেওয়ার জন্য জরুরি। সেটা জানা সত্ত্বেও রাজ্য কোনও টেকনিক্যাল রিপোর্ট পাঠায়নি।"
বৃহস্পতিবার রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস বলেন, "বাংলার অপরাজিতা বিল নতুন কিছু নয়। অন্ধ্র, অরুণাচল, মহারাষ্ট্রের নারী সুরক্ষা বিলের অনুকরণ মাত্র। এই বিলগুলি এখন রাষ্ট্রপতির কাছে পড়ে রয়েছে। সেটা জানা সত্ত্বেও মুখ্যমন্ত্রী ইচ্ছাকৃতভাবে একই রকম বিল এনেছেন।" রাজভবনের তরফে এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, "বিলের সঙ্গে তার টেকনিক্যাল রিপোর্ট পাঠানোটা রাজ্য সরকারের কর্তব্য। রাজ্য সরকার সেটা পাঠায়নি। এই প্রথমবার নয়, এর আগেও একাধিকবার টেকনিক্যাল রিপোর্ট না পাঠিয়েও বিল আটকে রাখার জন্য রাজভবনকে দুষেছে রাজ্য সরকার।" ওই বিবৃতিতে বলা হয়েছে, "রাজ্যপাল এ বিষয়ে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন। এবং জানিয়েছেন, বিল পেশের আগে আরও হোমওয়ার্ক করা উচিত রাজ্যের।"
[আরও পড়ুন: মেট্রোর সুড়ঙ্গের শ্যাফটের নিচে ‘লিকেজ’! পুজোর মুখে নতুন করে বিপত্তি বউবাজারে]
গত মঙ্গলবার বিধানসভায় সর্বসম্মতিক্রমে পাশ হয় ‘অপরাজিতা নারী ও শিশু বিল’ (পশ্চিমবঙ্গ ফৌজদারি আইন সংশোধনী বিল, ২০২৪)। ধর্ষণের মতো অপরাধের ক্ষেত্রে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে মামলার নিস্পত্তির কথাও বলা আছে বাংলার বিলে। রীতি অনুযায়ী, বিধানসভায় পাশ হওয়া যে কোনও বিল পাঠানো হয় রাজভবনে। সেই বিলে রাজ্যপাল স্বাক্ষর করলে তা আইনে পরিণত হয়। রাজ্যপাল যদি বিল নিয়ে নিজে সিদ্ধান্ত নিতে না পারেন তাহলে সেটি রাষ্ট্রপতি ভবনে পাঠাতে পারেন। এই ধরনের ক্ষেত্রে রাষ্ট্রপতিই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেন। বিল পাশের পরদিনই সেটি রাজভবনে পাঠিয়ে দেন।
[আরও পড়ুন: সাতসকালে সন্দীপের দুয়ারে ইডি, তালাবন্ধ দরজার বাইরে অপেক্ষায় আধিকারিকরা]
‘অপরাজিতা’ বিল(Aparajita Bill) পেশের দিন বিধানসভায় শুভেন্দু অধিকারী বলেন, দায়িত্বশীল বিরোধী হিসাবে বিলটিকে পাশ করাতে সাহায্য করবেন তাঁরা। এটিকে আইনে পরিণত করার দায়িত্ব সরকারের। আবার মুখ্যমন্ত্রী বলেছিলেন, ‘‘বিরোধী দলনেতা রাজ্যপালকে বলুন বিলে তাড়াতাড়ি অনুমোদন দিতে।’’ বস্তুত রাজভবনের উপর চাপ সৃষ্টি করার চেষ্টা করেন মুখ্যমন্ত্রী। তৃণমূলের মহিলা মোর্চার তরফেও জানানো হয়, রাজ্যপাল বিলে ছাড়পত্র না দিলে রাজভবনের সামনে ধরনা দেবেন মহিলা কর্মীরা। তবে সেসব চাপে মাথা নোয়াতে নারাজ সি ভি আনন্দ বোস।