বিশেষ সংবাদদাতা, নয়াদিল্লি: হাসপাতালে চিকিৎসাধীন গুরুতর অসুস্থদের লাইফ সাপোর্ট থাকবে নাকি তা তুলে নেওয়া হবে, কিংবা কীভাবে সেই সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে, সে বিষয়ে নির্দেশিকা তৈরি করছে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রক। সেই নির্দেশিকার একটি খসড়া প্রকাশ্যে এসেছে। যা নিয়ে চিকিৎসক মহলে বিতর্কও তৈরি হয়েছে। তবে এই খসড়া নিয়ে সাধারণ নাগরিকরাও নিজেদের মতামত জানাতে পারবেন।
কেন্দ্রের নয়া খসড়ায় চারটি শর্তের উল্লেখ রয়েছে। রোগীর ‘ব্রেন ডেথ’ ঘোষণা হয়ে গেলে, রোগীর পরিবার-পরিজন আর লাইফ সাপোর্ট না রাখতে চাইলে, লাইফ সাপোর্ট থাকলেও রোগীর পরিস্থিতি যদি একবারে গুরুতর হয় ও তার কোনও উন্নতির সম্ভাবনা না থাকে তখন এবং লাইফ সাপোর্টের কারণে রোগীর যন্ত্রণা বৃদ্ধি পাচ্ছে ও মর্যাদাহানি হচ্ছে এমন প্রসঙ্গ উঠলে, লাইফ সাপোর্ট তুলে নেওয়া যাবে।
কেন্দ্রের ওই খসড়ায় বলা হয়েছে, লাইফ সাপোর্ট সিস্টেমের ব্যাপারে চিকিৎসকরাই রোগীর স্বার্থের কথা ভেবে সিদ্ধান্ত নেবেন। তবে যদি কোনও ক্ষেত্রে মনে হয়, লাইফ সাপোর্ট সিস্টেমে রেখেও রোগীর বিশেষ কোনও উপকার হবে না। বা রোগীর অবস্থার উন্নতির সম্ভাবনা থাকবে না, তাহলে লাইফ সাপোর্ট তুলে নেওয়া যাবে। কেন্দ্রের খসড়ায় বলা হয়েছে, রোগীকে লাইফ সাপোর্ট সিস্টেমে রাখা হবে কিনা, সেটা ঠিক করবে ন্যূনতম ৩ সদস্যের মেডিক্যাল বোর্ড। সেই বোর্ডে একজন জেনারেল ফিজিশিয়ান থাকবেন। দুজন থাকবেন নির্দিষ্ট রোগের বিশেষজ্ঞ। তাও অন্তত পাঁচ বছরের অভিজ্ঞতা সম্পন্ন।
স্বাস্থ্যমন্ত্রকের লাইফ সাপোর্ট সংক্রান্ত এই চার শর্তাবলির খসড়া সামনে আসতেই অসন্তোষ প্রকাশ করেছে দেশের চিকিৎসক মহল। ইন্ডিয়ান মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশন (আইএমএ)-এর সভাপতি ডা. আর বি অশোক বলেন, এই সমস্ত শর্তাবলি চিকিৎসকদের আইনের আওতায় নিয়ে আসবে এবং তাদের উপর চাপ বৃদ্ধি করবে। তাছাড়াও এই ধরনের শর্তাবলি আরোপ করা দেখে মনে হতে পারে, চিকিৎসকরা ভুল সিদ্ধান্ত নেন এবং সিদ্ধান্ত নিতে অহেতুক দেরি করেন। কিছু বিষয়কে বিজ্ঞান ও পরিস্থিতি হিসাবে পরিজন, বাবা মা এবং চিকিৎসকদের উপরেই ছেড়ে দেওয়া উচিত।