সঞ্জিত ঘোষ, নদিয়া: দশভুজার আরাধনার দায়িত্বে মেয়েরাই। ১৫ জন মহিলার হাত ধরেই মায়ের আগমন নদিয়ার রানাঘাটের পুজোয়। বিশ্বকে শান্তির বার্তা দিতে এবার ক্রিকেট অ্যান্ড অ্যাথলেটিক ক্লাব নিজেদের ৬১ তম বর্ষে তৈরি করছে বৌদ্ধ গুম্ফা। দিনরাত এক করে সেই মণ্ডপসজ্জায় ব্রতী ১৫ জন মহিলা।
রানাঘাট ক্রিকেট অ্যান্ড অ্যাথলেটিক ক্লাবের পুজো (Gram Banglar Durga Puja) উদ্যোক্তাদের প্রথম থেকেই ইচ্ছে ছিল, চারদিকে যে যুদ্ধ আর হিংসার দামামা বাজছে, তা থেকে রেহাই পেতে শারদোৎসবের মধ্যে দিয়ে বিশ্বকে শান্তির বার্তা দেওয়া। সেই মতো তারা যোগাযোগ করেন রানাঘাটের স্বনামধন্য চিত্রশিল্পী সঞ্জু কুণ্ডুর সঙ্গে। এর পরেই তাদের সম্মিলিত আলোচনায় ঠিক হয়, এবার দুর্গাপুজোয় তারা তৈরি করবেন বৌদ্ধগুম্ফা। একই সঙ্গে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় সম্পূর্ণই মণ্ডপ সেজে উঠবে মহিলা চিত্রশিল্পীদের হাত ধরে। যেমন ভাবনা, তেমন কাজ। ১৫ দশভুজার নিরলস প্রচেষ্টায় রূপ পাচ্ছে পুজো।
[আরও পড়ুন: তিরন্দাজি ফাইনালে দুই ভারতীয়, সোনা ও রুপো নিশ্চিত টিম ইন্ডিয়ার]
এই সব মহিলা শিল্পীদের কেউই পেশাগতভাবে চিত্রশিল্পী নন। তাঁরা বেশিরভাগই পড়ুয়া কিংবা গৃহবধূ। তবে তাঁরা সঞ্জু কুণ্ডুর কাছে চিত্রকলার প্রশিক্ষণ নেন। যদিও শিল্পী সঞ্জু কুণ্ডু কলকাতার পুজো নিয়ে ব্যস্ত থাকায় সেইভাবে প্রতিদিন সময় দিতে পারছেন না। তবে তাঁরই সহ-শিল্পী বাবুল ঢালীর তত্ত্বাবধানে প্রতিদিন ধীরে ধীরে রানাঘাটের বুকে মেয়েরা সম্মিলিতভাবে গড়ে তুলছেন বৌদ্ধগুম্ফা।
মহিলা শিল্পীদের সুনিপুণ এই কাজ দেখে খুশি ক্লাব কর্তৃপক্ষও। ক্লাবের সম্পাদক অভিষেক তরফদার জানান, “চারদিকে যুদ্ধ ও দাঙ্গার দামামা বাজছে। সেই কারণেই আমরা পুজোর বিষয়ভাবনার মধ্যে দিয়ে শান্তির বার্তা দিতে চাইছি। থিমের নাম ‘শান্তির খোঁজে’। ১৫ জন মেয়েই মণ্ডপ নির্মাণ করছে, যা সারা পশ্চিমবঙ্গে কেউ কল্পনাও করতে পারেনি। এটা আমাদের একটা অভিনব প্রচেষ্টা। তবে মানুষের ভালো লাগাটাই আমাদের কাছে আসল। আশা করি এই অভিনবত্ব মানুষ খুব ভালোভাবে গ্রহণ করবে।”
প্যান্ডেলটির ভিতরের অংশে থাকবে রং তুলি দিয়ে শিল্পীদের হাতে আঁকা। তার মধ্যে থাকবে কাচের সূক্ষ্ম কারুকার্য। মণ্ডপের মাঝে থাকবে একটি বৌদ্ধ মূর্তি। সবমিলিয়ে রানাঘাটবাসীর কাছে ক্রমেই আকর্ষণের কেন্দ্র হয়ে উঠলে নারীশক্তির আরাধনায় নারীদের হাতে তৈরি বৌদ্ধ গুম্ফা।