সোমনাথ রায়, নয়াদিল্লি: দেশের নিরাপত্তাকে ঢাল করে পরিবেশ ধ্বংসের পথে হাঁটছে কেন্দ্র, এমনই অভিযোগ উঠল। কেন্দ্রীয় পরিবেশমন্ত্রকের তরফে সম্প্রতি একটি বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়েছে। যার মাধ্যমে পাকিস্তান ও চিন সীমান্ত বরাবর ১০০ কিলোমিটার এলাকা পর্যন্ত প্রতিরক্ষা ও সামরিক সংক্রান্ত পরিকাঠামো উন্নয়নের জন্য এখন থেকে আর পরিবেশমন্ত্রকের ছাড়পত্রের প্রয়োজন হবে না।
কেন্দ্র জানিয়েছে, বর্তমান পরিসরের বৃদ্ধি না ঘটিয়ে এলওসি এবং এলএসি-র (LAC) ১০০ কিলোমিটারের মধ্যে থাকা বিমানবন্দরের টার্মিনাল বিল্ডিং, সড়ক-সহ অন্যান্য পরিকাঠামোর উন্নয়ন করতেও প্রয়োজন হবে না পরিবেশমন্ত্রকের অনুমোদন। এই জায়গাতেই সিঁদুরে মেঘ দেখছেন পরিবেশবিদরা। তাঁদের চিন্তা, এর ফলে নষ্ট হতে পারে সবুজের ভারসাম্য। এই বিজ্ঞপ্তিতে কয়লা, পেট্রোলিয়াম পণ্য ব্যবহার করে বায়োমাস নির্ভর বিদ্যুৎ কেন্দ্রের সীমাও বৃদ্ধি করা হয়েছে। পরিবেশমন্ত্রকের এই সিদ্ধান্তের সঙ্গে কেন্দ্রের অন্য পদক্ষেপকে এক সুতোয় বেঁধে চিন্তায় পরিবেশবিদরা।
[আরও পড়ুন: আন্তর্জাতিক বাজারে পড়েছে তেলের দাম, পেট্রল-ডিজেল রপ্তানিতে কর কমাল কেন্দ্র]
গত মাসে অরণ্য (সংরক্ষণ) বিধির গেজেট প্রকাশ করেছে কেন্দ্র। যার জেরে এখন থেকে বেসরকারি সংস্থা নিজেদের মতো করে কেটে ফেলতে পারবে জঙ্গলের গাছ। পরিবর্তন আনতে পারবে রাস্তাঘাটে। এর জন্য জঙ্গলের আদিবাসী বা স্থানীয়দের কোনও অনুমতির প্রয়োজন থাকবে না। সরাসরি রাজ্য সরকারই দিয়ে দেবে প্রয়োজনীয় অনুমোদন। ইতিমধ্যেই যার প্রতিবাদ শুরু করেছে বিরোধী দলগুলি। দুইয়ে মিলে আগামীদিনে সবুজের ভারসাম্য নিয়ে চিন্তিত পরিবেশবিদরা।
উল্লেখ্য, লাদাখ থেকে শুরু করে সিকিম ও অরুণাচল পর্যন্ত চিনের (China) সঙ্গে প্রায় সাড়ে তিন হাজার সীমান্ত রয়েছে ভারতের। একইভাবে পাকিস্তানের সঙ্গেও ভারতের সীমান্ত অনেকটাই লম্বা। ওই অঞ্চলগুলিতে যে বিশাল পরিমাণের জঙ্গল রয়েছে তা কার্যত দেশের ফুসফুসের মতো কাজ করছে। বিশ্লেষকদের মতে, এবার সামরিক পরিকাঠামো গড়ার ফলে যে হারে বনভূমি ধ্বংস হবে তা অত্যন্ত চিন্তার বিষয়।