দীপঙ্কর মণ্ডল: মাথাব্যাথা নন বিমল গুরুং (Bimal Gurung), তাঁর গুরুত্বও নেই। তাই মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকে তাঁর প্রসঙ্গই উঠল না। মঙ্গলবার নবান্নে মুখ্যমন্ত্রী, মুখ্যসচিবের সঙ্গে ২০ মিনিটের বৈঠক সেরে সাংবাদিক সম্মেলনে এমন দাবিই করলেন গোর্খা জনমুক্তি মোর্চার প্রেসিডেন্ট বিনয় তামাং (Binay Tamang)। জানালেন, নবান্নে স্রেফ জিটিএ নিয়েই কথা হয়েছে, যা বেশ সদর্থক। বিনয় তামাং, অনীত থাপাদের আরও দাবি, ”কে গুরুং? সিলেবাসেই নেই। গুরুং চ্যাপ্টার ক্লোজড পাহাড়ে।”
একদিকে, নবান্নে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে জিটিএ নেতাদের বৈঠক, অন্যদিকে, মঙ্গলবার সকালেও গুরুং বিরোধী মিছিল সরগরম পাহাড়। দার্জিলিং জুড়ে বিনয় তামাংপন্থীদের বড়সড় মিছিল। আর সেখান থেকে গুরুং বিরোধী স্লোগানের সুর উত্তরোত্তর চড়ছে। একে হাতিয়ার করেই বিনয় তামাংরা গুরুংকে গুরুত্ব দিতে নারাজ।
[আরও পড়ুন: ভুয়ো নথিতেই সল্টলেকে রমরমিয়ে চিকিৎসা, শেষমেশ পুলিশের জালে ‘ডাক্তার’]
এদিন দুপুর প্রায় পৌনে তিনটে নাগাদ নবান্নে যান বিনয় তামাং, অনীত থাপারা। বৈঠকে যোগ দেওয়ার জন্য তাঁরা সোমবারই চলে এসেছিলেন কলকাতায়। এদিন সকালেও বিনয় তামাং সুর চড়িয়েছিলেন গুরুংয়ের বিরুদ্ধে। আর বিকেলে নবান্নে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee), মুখ্যসচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায় ও পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম, পূর্তমন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস, জিটিএ’র প্রধান সচিব সুরেন্দ্র গুপ্তার সঙ্গে প্রায় মিনিট কুড়ির বৈঠক হয় বিনয়, অনীতদের। তারপর তাঁরা চলে যান সল্টলেকের গোর্খাভবনে। বিকেলে সেখানেই সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন তাঁরা।
[আরও পড়ুন: রাজ্যপালের সঙ্গে বৈঠকের পরই দার্জিলিংয়ের জেলাশাসক বদল, তুঙ্গে জল্পনা]
পাহাড়ে রোজ গুরুং বিরোধী মিছিলের ছবি সামনে রেখে সাংবাদিক বৈঠকে বিনয় তামাং বললেন, ”দেখছেন না পাহাড়ে রোজ কত মানুষ গুরুংয়ের বিরুদ্ধে মিছিল করছে। তাঁরা আর বিমল গুরুংকে চায় না। গত তিন বছর ধরে পাহাড় শান্ত আছে, সেই পরিস্থিতি জারি থাকুক, এটাই সবাই চান। গুরুং পালিয়ে বেড়ানো মানুষ। তাঁর কী-ই বা গুরুত্ব। পাহাড়ে গুরুং অধ্যায় শেষ। আমরা গুরুংয়ের বিপরীত পথে হেঁটেই শান্তি বজায় রাখব।” পঞ্চমীর দিন গুরুংয়ের আচমকা প্রত্যাবর্তন এবং তৃণমূলের সঙ্গে জোটবার্তার পর দলের তরফে তাঁকে স্বাগত জানিয়ে যে টুইট করা হয়েছিল, সেই প্রসঙ্গে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে বিনয় তামাংয়ের পালটা প্রশ্ন, ”কোনও নেতার মুখে কি এ ধরনের কোনও মন্তব্য শুনেছেন?” মুখে যতই গুরুংকে ‘গুরুত্বহীন’ বলুন, পাহাড়ের একদা জনপ্রিয়, প্রতাপশালী নেতাকে নিয়ে কি সত্যিই এতটা নির্ভার গোর্খা জনমুক্তি মোর্চার বর্তমান নেতৃত্ব? প্রশ্নটা থাকছেই।
ছবি: পিন্টু প্রধান।