সুকুমার সরকার, ঢাকা: মাদক কারবার রুখতে গিয়ে নিজের দেশেই রোহিঙ্গাদের হাতে খুন শরণার্থী শিবিরের চেয়ারম্যান৷ মৃত আবদুল মতলব হীলা ইউনিয়নের লেদা ক্যাম্পের ডেভেলপমেন্ট ব্যবস্থাপনা কমিটির চেয়ারম্যান ছিলেন। অপরদিকে, কক্সবাজারের টেকনাফে মাদক পাচার রুখতে বিজিবির গুলিতে নিহত হয়েছেন ১ রোহিঙ্গা মহিলা-সহ ৩ জন৷ নিহত তরুণী মাত্র কুড়ি বছরের রুমানা আখতার৷ সাম্প্রতিককালে মাদক বিরোধী অভিযানে নিহতদের মধ্যে তিনিই প্রথম মহিলা৷
[ আরও পড়ুন : বনানীর আতঙ্ক না কাটতেই ফের অগ্নিকাণ্ড ঢাকার গুলশনে]
সূত্রের খবর, রবিবার ভোররাতে টেকনাফ উপজেলার দমদমিয়া এলাকায় নিয়মিত রুটিন টহলে যান বিজিবির সদস্যরা। এই সময়েই মায়ানমার থেকে ওমরখাল পয়েন্ট দিয়ে একদল লোক বাংলাদেশের সীমান্তে ঢুকতে দেখা যায়৷ তাদের থামার জন্য সংকেত দেওয়া হয়৷ সেই সংকেত অমান্য করে তারা বিজিবির উপর অতর্কিত হামলা চালায় বলে অভিযোগ৷ শুরু হয় দু’পক্ষের গুলিযুদ্ধ৷ এরপর ফের ওমরখাল দিয়ে পালিয়ে যায় আক্রমণকারীরা৷ ভোরে টহলরত বিজিবি সদস্যরা এলাকা তল্লাশি করে এক নারীকে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় নৌকার মধ্যে পড়ে থাকতে দেখেন।তার পোশাকের মধ্যে থেকে ১০ হাজার পিস ইয়াবা ও ৩টি লোহার ধারালো কিরিচ উদ্ধার করা হয়। পরে ভ্যানিটি ব্যাগে তার পরিচয় পত্র পাওয়া যায়। দেখা যায়, নিহত তরুণী টেকনাফের লেদা রোহিঙ্গা ক্যাম্পে বসবাসকারী৷
[ আরও পড়ুন : আগুনের বলি উঠতি ক্রিকেটার, ঢাকায় লাফিয়ে বাড়ছে মৃতের সংখ্যা]
অন্যদিকে, হীলা ইউনিয়নের লেদা ক্যাম্পের ডেভেলপমেন্ট চেয়ারম্যান আবদুল মতলব ইয়াবা পাচারকারীদের বাধা দেওয়ায় তাঁকে গুলিবিদ্ধ হয়ে খুন হতে হয়েছে বলে অনুমান পুলিশের৷ শুরু হয়েছে তদন্ত৷ এদিকে সীমান্তে ইয়াবা কারবার ঠেকাতে গুলিযুদ্ধের পরও নিত্যনতুন কৌশলে বাংলাদেশে ইয়াবা আসছে। সেদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গা যুবতী ও শিশুদের কাজে লাগিয়ে নতুন উদ্যমে চোরাচালানের ছক সাজানো হচ্ছে৷ সূত্রের খবর, চালান প্রতি ২০ হাজার টাকায় মায়ানমার থেকে রোহিঙ্গারা পেটের ভিতর লুকিয়ে সীমান্তে পাচার করছে ইয়াবা৷ রবিবার পর্যন্ত টেকনাফ সীমান্ত অতিক্রম করা ২৩ রোহিঙ্গা-সহ ২৬ জনকে আটক করেছে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ দপ্তর। এক্স রে-র মাধ্যমে ১৩ জন রোহিঙ্গার পেট থেকে শুক্রবার রাত ১০টা পর্যন্ত বের করা হয়েছে ৩০ হাজার ইয়াবা।
[ আরও পড়ুন : OMG! প্রথম সন্তান জন্মের মাত্র ২৬ দিন পর ফের প্রসব তরুণীর]
এদিকে চোরাচালান ও অর্থপাচার বন্ধে বাংলাদেশ এবং ভারতের শুল্ক গোয়েন্দা সংস্থার ডিজি পর্যায়ের বৈঠকে বসেছে ঢাকায়৷ রবিবার সকালে রাজধানীর হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে এই বৈঠক শুরু হয়। রয়েছেন বাংলাদেশ শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্তকারী শাখার মোট ১৩ জন প্রতিনিধি৷ বৈঠকের নেতৃত্ব দিচ্ছেন শুল্ক গোয়েন্দার ডিজি ড. শহিদুল ইসলাম। আর ভারতের তরফে ডিরেক্টর অব রেভিনিউ ইন্টেলিজেন্সের মুখ্য পরিচালক দেবীপ্রসাদ দাসের নেতৃত্বে ৮ সদস্যের প্রতিনিধি দল বৈঠকে যোগ দিয়েছেন। সূত্রের খবর, বৈঠকে দু’ দেশের মধ্যে তথ্য আদানপ্রদান মাধ্যমে চোরাচালান, অর্থপাচার, শুল্ক ফাঁকি রদ ও সন্ত্রাস প্রতিরোধ বিষয়ে আলোচনা হবে। এর মধ্যে পারস্পরিক সহযোগিতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে বেশ কিছু সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। বৈঠকে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য প্রক্রিয়া আরও সরলীকরণ নিয়ে আলোচনা চলে। এছাড়া দু’দেশের জাতীয় নিরাপত্তা, সীমান্ত সমস্যা, তথ্য সহযোগিতাও আলোচনার বিষয়বস্তু৷ যা পরবর্তীতে দু’দেশের প্রতিনিধি দলের প্রধানদের স্বাক্ষরের মাধ্যমে চুক্তি তৈরি হবে৷
The post পেটে লুকিয়ে মাদক পাচার, সীমান্ত পেরনো রোহিঙ্গাদের কাজে লাগিয়ে সক্রিয় চক্র appeared first on Sangbad Pratidin.