চঞ্চল প্রধান, হলদিয়া: ২০০৬ সালে মুক্তি পেয়েছিল অমিতাভ বচ্চন, হেমা মালিনী, রানি মুখোপাধ্যায় অভিনীত ‘বাবুল’। ছবিতে বলরাজের চরিত্রে অভিনয় করেন বিগ বি। নিজের বিধবা পুত্রবধূকে বিয়ে দিয়েছিলেন বলরাজ। সিনেমার সেই কাহিনিই বাস্তব হয়ে উঠল হলদিয়ার সুতাহাটার অনন্তপুর এলাকায়। ২৩ বছরের বিধবা পুত্রবধূ শুভ্রাকে পাত্রস্থ করলেন শ্বশুর নকুল ঘাঁটি ও শাশুড়ি নন্দিতা ঘাঁটি।
একমাত্র অর্ণবের সঙ্গে বিয়ে দিয়ে শুভ্রাকে ঘরে এনেছিলেন নকুল ও নন্দিতা। তাঁকে বরাবর নিজের মেয়ের মতোই ভালবাসা দিয়েছেন। শুভ্রাও বাবা-মায়ের মতোই শ্রদ্ধা করেন তাঁদের। সবই ঠিক চলছিল। আচমকা দুর্ঘটনায় শোকের ছায়া নেমে এসেছিল গোটা পরিবারে। ২০২০ সালে মহিষাদল এলাকায় পথ দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয় অর্ণব ঘাঁটির। শুভ্রার কোলে তখন দেড় বছরের ছেলে মৈনাক।
[আরও পড়ুন: স্টেডিয়ামে ৭৫% দর্শক, রাজ্যের ঘোষণায় ভারত-ওয়েস্ট ইন্ডিজ টি-২০ নিয়ে আশাবাদী CAB ]
অর্ণবের মৃত্যুর পর অনেকেই তখন শুভ্রাকে শ্বশুরবাড়ি ছাড়ার পরামর্শ দিয়েছিলেন। তা মানেননি ২৩ বছরের যুবতী। শোকবিহ্বল শ্বশুর-শাশুড়িকে ছেড়ে যাননি শুভ্রা। তাঁদের মেয়ে হয়েই থেকে গিয়েছেন। কিন্তু এই বয়সে একা থাকবে কেমন করে মেয়েটা? এই প্রশ্নই কুরেকুরে খেত নকুল এবং নন্দিতাকে। ঠিক করেন বউমাকে আবার পাত্রস্থ করবেন। সেই মতো উপযুক্ত পাত্র খোঁজা শুরু হয়।
হলদিয়ার রামগোপালচকের ২৬ বছরের বাসিন্দা মধু সাঁতরা বিয়েতে রাজি হন। শুভ্রার দেড় বছরের ছেলেকেও নিজের ছেলে হিসেবে গ্রহণ করেন। গাড়ির শোরুমের কর্মচারী মধু। ধুমধান করেই তাঁর সঙ্গে শুভ্রার বিয়ে দিয়েছেন গাড়ি চালক তথা পশ্চিমবঙ্গ বিজ্ঞানমঞ্চের সদস্য নকুল ঘাঁটি। নবদম্পতিকে সোনার হার দিয়ে বরণ করেছেন নন্দিতা ঘাঁটি। কোভিডবিধি মেনেই বিয়ের অনুষ্ঠান সম্পন্ন হয়েছে। নিমন্ত্রিতরা এসে বর-কনেকে আশীর্বাদ করেছেন। সমাজের তোয়াক্কা না করে নকুল এবং নন্দিতা ঘাঁটি যে নিজের বিধবা বউমার কথা ভেবেছেন, তাতেই ধন্য ধন্য পড়ে গিয়েছে গোটা এলাকায়।