সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ইরানের রাজধানী তেহরানে মৃত্যু হয়েছে হামাসের রাজনৈতিক প্রধান ইসমাইল হানিয়েহর। এই হত্যাকাণ্ডে অভিযোগের আঙুল উঠেছে ইজরায়েলের গুপ্তচর সংস্থা মোসাদের দিকে। এই ঘটনার পর বারুদের স্তূপের উপর দাঁড়িয়ে রয়েছে মধ্যপ্রাচ্য। এহেন পরিস্থিতিতে শুক্রবার কাতারে সমাধিস্থ করা হয়েছে হানিয়েহকে। তাঁর শেষকৃত্যে যোগ দিয়েছেন হাজার হাজার মানুষ।
গত ৩০ জুলাই, মঙ্গলবার, ইরানের নতুন প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেস্কিয়ানের শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানে গিয়েছিলেন প্যালেস্টাইনের জঙ্গি সংগঠন হামাসের রাজনৈতিক প্রধান হানিয়েহ। এর কয়েক ঘণ্টা পরই খুন করা হয় তাঁকে। সংবাদ সংস্থা রয়টার্স সূত্রে খবর, এদিন কাতারের রাজধানী দোহার সর্ববৃহৎ মসজিদে কবর দেওয়া হয় হানিয়েহকে। সেখানে উপস্থিত ছিলেন এই হামাস নেতার কন্যারা। ছিলেন হাজার হাজার মানুষও। হানিয়েহর কফিনবন্দি দেহ নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল তখন সকলে প্যালেস্টাইনের পতাকা হাতে নিয়ে স্লোগান দিচ্ছিলেন। তাঁদের সকলের চোখেই যেন প্রতিশোধের আগুন। তাহের আদেল নামে এক ছাত্রের কথায়, "তিনি নেতা ও প্রতিরোধের প্রতীক ছিলেন। তাঁর মৃত্যুতে মানুষ ক্ষুব্ধ।" হানিয়েহর মৃত্যুতে শুক্রবার একদিনের জাতীয় শোক ঘোষণা করেছিল পাকিস্তান ও তুরস্ক।
[আরও পড়ুন: কমলা হ্যারিসের প্রার্থীপদ নিশ্চিত, ঘোষণা আগামী সপ্তাহেই]
এদিকে, হামাস নেতা হানিয়েহর মৃত্যুতে ইজরায়েল ও হামাসের মধ্যে যুদ্ধবিরতির সম্ভাবনা আরও ক্ষীণ হয়ে উঠেছে। কারণ এক্ষেত্রে বৈঠকের টেবিলে হানিয়েহর গুরুত্ব ভূমিকা ছিল। এই ঘটনায় ক্ষোভে ফুঁসছে প্যালেস্টাইনের জঙ্গি সংগঠনটি। মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনেও মুখ খুলেছেন হানিয়েহর মৃত্যু নিয়ে। এই মুহূর্তে তিনি চিন্তিত যুদ্ধবিরতির চুক্তি নিয়ে। অন্যদিকে, হানিয়েহর হত্যার বদলা নিতে ইজরায়েলের উপর আক্রমণের নির্দেশ দিয়েছেন ইরানের ‘সর্বশক্তিমান’ সুপ্রিম লিডার আয়াতোল্লা আলি খামেনেই। ফলে যেকোনও সময় ইহুদি দেশটির উপর ভয়ংকর আঘাত হানতে পারে তেহরান। ফলে গাজা যুদ্ধের মাঝেই মধ্যপ্রাচ্যে শুরু হয়ে যেতে পারে আরেক ভয়ংকর লড়াই।
মার্কিন সংবাদপত্র নিউ ইয়র্ক টাইমস সূত্রে খবর, মোসাদ এজেন্টের বোমা লুকিয়ে থাকার তথ্য জানা গিয়েছে ইরানের সেনাবাহিনীর এলিট ‘রেভলিউশনারি গার্ড’ বাহিনীর আধিকারিকদের মারফত। দুমাস ধরে তেহরানে গা ঢাকা দিয়েছিল মোসাদের চর! তার পরে সুযোগ বুঝে খুন করা হয়েছে হানিয়েহকে। প্রাথমিকভাবে জানা গিয়েছিল, ড্রোন হামলায় নিহত হয়েছেন হামাসের রাজনৈতিক প্রধান। কিন্তু পরে জানা যায়, ঘরের মধ্যে বোমা ফেটেই মৃত্যু হয়েছে হানিয়েহ এবং তাঁর নিরাপত্তারক্ষীর। ইরানের প্রশাসনিক কর্তারা সাফ জানিয়েছেন, ঘরের মধ্যে বহু আগে থেকেই বোমা রাখা হয়েছিল। যদিও সরকারিভাবে এই হামলা নিয়ে ইজরায়েলের তরফে কোনও মন্তব্য করা হয়নি।