শারীরিক ফিটনেসের দিকে তো ভালই নজর রাখেন! কিন্তু আর্থিকভাবে কতটা ‘ফিট’ আপনি? আইসিআইসিআই ব্যাংক মনে করে, গ্রাহক এবং বিনিয়োগকারীদের ফাইন্যান্সিয়াল ফিটনেস নিয়ে স্বচ্ছ ধারণা থাকা জরুরি। কীভাবে, হদিশ দিল টিম সঞ্চয়
নিজের ফাইন্যান্সিয়াল ফিটনেস কেমন, তা কি কখনও যাচাই করেছেন? আপনি শারীরিকভাবে নীরোগ থাকতে পারেন, তবে আর্থিকভাবে কতখানি সুস্থ, তা বোঝা দরকার মনে করে আইসিআইসিআই ব্যাংক। নিজেদের গ্রাহকদের জন্য তো বটেই, ইনভেস্টরদের প্রত্যেকে যাতে স্পষ্ট ধারণা নিয়ে চলেন, তা জানার উপর জোর দিচ্ছে সংস্থাটি। নিজের রোজগার কেমন এবং আগামিদিনে খরচ ঠিক কীরকম হতে পারে, তা প্রথমেই বোঝা দরকার। উত্তর অনুযায়ী বিনিয়োগকারীকে হতে হবে যথেষ্ট ‘ডিসিপ্লিনড’ এবং কিছু সাধারণ নিয়মও মেনে চলতে হবে। আজ এই প্রসঙ্গেই আমাদের ব্ল্যাকবোর্ড।
এ বিষয়ে কিছু জরুরি এবং প্রাথমিক প্রশ্ন–
# এক, আপনার নেট ইনকাম কি বছরে ৭ শতাংশ থেকে ৯ শতাংশ বাড়ছে? তা যদি না বেড়ে থাকে, তাহলে রিটেল ইনফ্লেশন (অর্থাৎ যা এখন ৭ শতাংশ) আপনাকে বিপর্যস্ত করেই রাখবে। তাই অ্যাক্টিভ এবং প্যাসিভ, দুইভাবেই যাতে নেট ইনকাম বাড়ে, তা নিশ্চিত করার চেষ্টা জারি রাখতে হবে।
[আরও পড়ুন: সেবির তালিকাভুক্ত সংস্থার বিরুদ্ধে ক্ষোভ, অভিযোগ জানান ‘স্কোরস’-এর মাধ্যমে]
# দুই, অ্যাসেট অ্যালোকেশন কেমন হওয়া উচিত, তা নিয়ে কি যথেষ্ট চিন্তাভাবনা করছেন? না করে থাকলে এখনই শুরু করা দরকার, কারণ অ্যাসেট অ্যালোকেশন ভুল হলে তার প্রতিফলন হবে কম রিটার্নে। এক্ষেত্রে সাধারণ বিনিয়োগকারী ‘50-30-20 রুল’ মেনে চলতে পারেন। সংক্ষেপে সেই নিয়ম এই রকম :
উপার্জনের ৫০% : নিয়মিত খরচ, যেগুলি সংসার চালানোর জন্য করতেই হবে।
৩০% : নিয়মিত নয়, এককালীন চাহিদা মেটানোর জন্য এই খরচগুলি করা হয়ে যায় মাঝে মাঝে।
২০% : সেভিংস তথা ইনভেস্টমেন্টের জন্য আলাদা করে আপনাদের করতেই হবে।
#তিন, এবার আসুন সম্ভাব্য ‘ফাইন্যান্সিয়াল শক’ বা হঠাৎ আসা বিপদের কথায়। হয়তো কোনও মেডিক্যাল এমার্জেন্সি এল বা অকারণে হয়তো বিরাট কোনও খরচার ধাক্কা খেলেন। আপনার কি পর্যাপ্ত সেভিংস আছে এমন আপদ-বিপদের জন্য? অর্থাৎ একটি ইমার্জেন্সি ফান্ড তাড়াতাড়ি গঠন করা দরকার। সব সাধারণ লগ্নিকারীই তা করে থাকেন।
.#চার, ইনসিওরেন্সকে ভোলা যাবে না, কারণ রিস্ক কমাতে জীবন বিমা (এবং অন্যান্য বিমা) খুবই জরুরি। এই দিকে মন দিতে হবে এবং বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে স্বাস্থ্য বিমা ইত্যাদির উপর কড়া নজর রাখতে হবে। এই ক্ষেত্রে ব্যাঙ্ক জানাচ্ছে যে, লাইফ কভার যেন যথাযথ হয়, এবং অ্যানুয়াল ইনকামের অন্তত ১০-৩০ গুণ হওয়াই বাঞ্ছনীয়।
এই চার ধরনের বার্তা ছাড়াও আইসিআইসিআই ব্যাংক সব লগ্নিকারীদের সতর্ক করে দিচ্ছে দুটি বিষয়ে। প্রথম, ডেট টু ইনকাম রেশিও। মানে, নিজের রোজগারের কত শতাংশ ডেট বা ঋণ? এই রেশিও যদি খুব বেশি হয়, তাহলে চিন্তার কারণ অবশ্যই থাকবে। কোনও নির্দিষ্ট নিয়ম না থাকলেও সাধারণত ১০-২০ শতাংশের বেশি যাতে না ছাপিয়ে যায়, তার প্রতি দৃষ্টি দেওয়া উচিত।
দ্বিতীয়, আপনার ক্রেডিট স্কোর কেমন? এই স্কোর বলে দেবে আপনার ঋণ সংক্রান্ত কস্ট কম না বেশি হবে? যে বিনিয়োগকারীর ক্রেডিট স্কোর বেশি, তিনি অপেক্ষাকৃত ভাল অবস্থায়। তাঁর জন্য ব্যাংকের দরজা একটু বেশিই খোলা, তাঁর উপর চাপও তুলনায় কম। খারাপ ক্রেডিট স্কোর আজকের যুগে অনেক অসুবিধা সৃষ্টি করতে পারে বলে ব্যাংকাররা মনে করেন।