সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: সম্প্রতি ভারতের বেশ কিছু রাজ্যে বায়ু দূষণের মাত্রা উদ্বেগজনক হারে বেড়েছে। বিশেষত, রাজধানী দিল্লিতে বায়ুর গুণমান সূচক 'Severe' অর্থাৎ মারাত্মক পর্যায়ে থাকছে। এই সমস্ত জায়গায় সূক্ষ্ম ধূলিকণা PM2.5-এর পরিমাণ বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নির্ধারিত নিরাপদ মাত্রার চেয়ে বহুগুণ বেশি। দিল্লি ছাড়াও পাঞ্জাব ও হরিয়ানার মতো রাজ্য এবং পশ্চিমবঙ্গে কলকাতা ও মালদার মতো শহরগুলিতেও দূষণের প্রবণতা দিন দিন বাড়ছে। উল্লেখ্য, শীতকালেই বায়ু দূষণের সমস্যা বেশি দেখা যায়। এমনকী ক'দিন আগেই দিল্লির থেকেও খারাপ অবস্থায় পৌঁছেছিল ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়ালের আশপাশের বায়ুর একিউআই। ওই একই সময়ে দিল্লির একিউআই যখন ২৯৯, কলকাতায় তখন AQI ছিল ৩৪২।
দিল্লিতে দূষণের কারণে মানুষ তীব্র শ্বাসকষ্টের সমস্যায় ভুগছেন। গত তিন বছরে এখানকার হাসপাতালগুলিতে দুই লক্ষেরও বেশি তীব্র শ্বাসতন্ত্রের রোগীর চিকিৎসার রেকর্ড রয়েছে। ফুসফুসের সমস্যা ছাড়াও দিল্লিবাসীরা নানারকম সমস্যায় ভুগছেন। দীর্ঘমেয়াদি রোগ যেমন হাঁপানি ও ক্রনিক অবস্ট্রাকটিভ পালমোনারি ডিজিজ (COPD)-এ আক্রান্ত হচ্ছেন। দূষণের ফলে অকাল মৃত্যুর হারও উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়েছে। ফলে, দিল্লির ভুল থেকে শিক্ষা নিয়ে বাংলাকে আগেভাগে প্রস্তুত থাকা উচিত।
ফুসফুসের ক্ষতি কীভাবে হয়?
বায়ু দূষণে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয় ফুসফুস। বাতাসে মিশে থাকা অতিক্ষুদ্র কণা, বিশেষ করে PM2.5, নিঃশ্বাসের মাধ্যমে সরাসরি ফুসফুসের অ্যালভিওলাইতে প্রবেশ করে। এই কণাগুলি রক্তনালীর মাধ্যমেও শরীরে ছড়িয়ে পড়তে পারে। ফুসফুসে কণাগুলির উপস্থিতির ফলে দীর্ঘমেয়াদী প্রদাহ তৈরি হয়। ফলস্বরূপ ফুসফুসের কার্যকারিতা কমতে থাকে। ক্রমাগত দূষণের সংস্পর্শে এলে ফুসফুসের টিস্যু ক্ষতিগ্রস্ত হয়। শেষ পর্যন্ত পালমোনারি ফাইব্রোসিস বা ক্রনিক ব্রঙ্কাইটিসের মতো মারাত্মক রোগ দেখা দিতে পারে।
ফুসফুসের ক্ষতি প্রতিরোধে আগাম ব্যবস্থা
১) দূষণের মাত্রা বাড়লে বাইরে বেরোনোর সময় অবশ্যই N95 বা N99 রেসপিরেটর মাস্ক ব্যবহার করুন। এটি সূক্ষ্ম কণা প্রবেশে বাধা তৈরি করে।
২) বাড়ির ভেতরে এয়ার পিউরিফায়ার ব্যবহার করুন। জানালা ও দরজা বন্ধ রাখুন।
৩) সে সমস্ত জায়গায় দূষণের মাত্রা অত্যন্ত বেশি, সেই এলাকায় সকালে ও সন্ধ্যায় বাড়ির বাইরে শারীরিক পরিশ্রম সম্পূর্ণরূপে এড়িয়ে চলুন।
৪) প্রচুর পরিমাণে জল পান করুন। ভিটামিন সি এবং অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ খাবার গ্রহণ করে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ান।
৫) শ্বাসকষ্ট বা অবিরাম কাশির মতো উপসর্গ দেখা দিলে দেরি না করে একজন পালমোনোলজিস্টের পরামর্শ নিন।
৬) ফুসফুসের কার্যক্ষমতা বজায় রাখতে নিয়মিত যোগাভ্যাস ও ডিপ ব্রেদিং এক্সারসাইজ করুন।
