সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: শরদিন্দু বন্দ্যোপাধ্যায়ের 'মরণ ভোমরা'য় যতবার কালো ভ্রমর ঘুরপাক খেয়েছে ততবারই ঘটেছে প্রাণহানি। সে না হয় ছিল গল্পের পাতায়। তবে বাস্তবের মাটিতে মৃত্যুদূত ভ্রমর নয়, মৌমাছি। শোনা যাচ্ছে, পোলো খেলার মাঝে এই ছোট্ট পতঙ্গ গিলে ফেলে হার্ট অ্যাটাকে প্রাণ হারিয়েছেন করিশ্মা কাপুরের প্রাক্তন স্বামী। ঠিক কী কারণে ঘটল এমন অঘটন?
বিশেষজ্ঞদের মতে, মৌমাছি গলার ভিতরে ঢুকে কামড়ালে তা অবশ্যই প্রাণহানির কারণ হতে পারে। 'কাউনিস সিনড্রোম' দেখা দিতে পারে। তার ফলে হৃদপিণ্ডে রক্ত সরবরাহকারী প্রধান রক্তনালি করোনারি আর্টারিতে সমস্যা দেখা যায়। রক্ত সঞ্চালনের হার একধাক্কায় অনেকটা বেড়ে যায়। তার ফলে প্রদাহ শুরু হয়। আর তা থেকে শুরু হয় শ্বাসকষ্ট। এভাবে বেশ কিছুক্ষণ সময় গেলে যে কোনও মানুষের হার্ট অ্যাটাকের সম্ভাবনা বেড়ে যায় অনেকটা।
আবার কারও কারও মতে, মৌমাছির হুলে থাকা বিষ থেকে শরীরে অ্যালার্জি দেখা যায়। চিকিৎসা পরিভাষায় যাকে 'অ্যানাফিল্যাক্সিস' বলে। তার ফলে আচমকা রক্তচাপ কমে যায়। শ্বাসকষ্ট শুরু হয়। শেষ পর্যন্ত হার্ট অ্যাটাক হয় রোগীর। গলার ভিতরে ঢুকে মাত্র একবার মৌমাছি কামড়ালেও এমন ভয়ংকর পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে পারেন যে কেউ।
বর্তমান সময়ে হার্ট অ্যাটাকের পরিমাণ বেড়েছে। গড় হিসাব বলছে, ৩০-৩৫ বছর বয়সি থেকে যে কেউই এই সমস্যার মুখোমুখি হতে পারেন। তাই হার্ট অ্যাটাকের উপসর্গ দেখতে পেলেই সাবধান হওয়া প্রয়োজন। যেমন -
* বুকে অস্বস্তি
* বুকে যন্ত্রণা
* শ্বাস নিতে সমস্যা
* আচমকা ঠান্ডা লাগা
* বমি বমি ভাব
* অত্যধিক ক্লান্তি
* অজ্ঞান হয়ে যাওয়া
চিকিৎসা ব্যবস্থা এগিয়ে গিয়েছে অনেক। তা সত্ত্বেও কখন হার্ট অ্যাটাক হতে পারে, আগে থেকে জানা সম্ভব নয়। তবে বয়স পঞ্চাশের কাঠগড়ায় পৌঁছলেই সতর্ক থাকতে হবে প্রতি মুহূর্তে। জেনে নিন ঠিক কোন কোন সতর্কতা অবলম্বন করা প্রয়োজন।
* চিকিৎসকের পরামর্শমতো রক্তচাপ, কোলেস্টেরল, রক্তের শর্করার মাত্রা এবং ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে।
* অতিরিক্ত ফ্যাট জাতীয় খাবার, নুন, খাসির মাংস, চিনি খাওয়া অনুচিত। তার পরিবর্তে ফল, সবজি, মাছ খেতে হবে।
* প্রতিদিন কমপক্ষে দেড় ঘণ্টা শরীরচর্চা করতে হবে।
* ধূমপান এবং মদ্যপান থেকে বিরত থাকা প্রয়োজন।
* মানসিক অবসাদ দূর করতে যোগচর্চা, ধ্যান করতে পারেন।
* দিনে কমপক্ষে ৭ থেকে ৮ ঘণ্টা ঘুমোতে হবে।
সমস্যা বেশি দেখা গেলে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। অযথা সমস্যা লুকিয়ে নিজের বিপদ বাড়াবেন না।