সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: অনিয়ন্ত্রিত জীবনযাপন নানা রোগভোগের আঁতুড়ঘর। রোজদিন ফাস্ট ফুড খাওয়া কিংবা অলস জীবন-যাপন স্বাভাবিক ভাবেই শরীরে চর্বি বাড়িয়ে তোলে। আর এই স্থূলত্বের হাত ধরেই ঘাড়ে নিশ্বাস ফেলে ফ্যাটি লিভার। লিভারে চর্বি জমলে কিন্তু বিপদ। কারণ, লিভার সাধারণত পাঁচ শতাংশ চর্বি শোষণ করতে পারে। তার থেকে বেশি চর্বি জমা হলেই তা বিপজ্জনক। প্রথম থেকে সাবধান না হলে ঘটতে পারে বড়সড় বিপদ। ফ্যাটি লিভারের সমস্যা দূর করতে অনেকেই অনেক কিছু করেন। এক্ষেত্রে আপনার রান্নাঘরে থাকা একটি ছোট্ট উপাদানই কিন্তু লিভারের সেরা দাওয়াই হতে পারে।
আয়ুর্বেদ শাস্ত্রে আদা হল এক মহৌষধ। এই শাস্ত্রমতে, লিভার হল 'পিত্ত' শক্তির কেন্দ্র। পিত্তের ভারসাম্য রক্ষায় লিভার অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আমাদের হজম শক্তি দুর্বল হয়ে পড়লে শরীরে টক্সিন বা 'আম' জমা হতে শুরু করে। এই 'আম'ই ধীরে ধীরে চর্বি বা 'মেদ' হিসেবে লিভারে জমা হয়। আমাদের 'জঠরাগ্নি'র শক্তি কমে গেলে খাবার সঠিকভাবে হজম হয় না। এই হজম না হওয়া অংশটি শরীরে বিষাক্ত, আঠালো এবং ভারী বর্জ্য হিসেবে জমতে শুরু করে। প্রথমে এটি পরিপাকতন্ত্রে জমা হয়। তারপর ধীরে ধীরে রক্তপ্রবাহের মাধ্যমে শরীরের দুর্বল স্থানে পৌঁছায়—যেমন জয়েন্ট (জয়েন্ট পেইন তৈরি করে) বা লিভার। আয়ুর্বেদ মতে, প্রায় সমস্ত রোগের মূল কারণ হল এই 'আম' জমা হওয়া।
আর এইখানেই কাজ শুরু করে আদা। আদার প্রকৃতি হল গরম (উষ্ণ বীর্য)। এটি দ্রুত হজম শক্তিকে উদ্দীপিত করে। জঠরাগ্নিকে সবল করতে এর কোনও বিকল্প নেই। ফলে আদার ব্যবহারে লিভারে জমে থাকা অতিরিক্ত চর্বি খুব ধীর প্রক্রিয়ায় গলতে শুরু করে।
কীভাবে আদা ব্যবহার করবেন?
প্রতিদিন সকালে মাত্র এক কুচি আদা ভালো করে ছেঁচে নিন। এর সঙ্গে সামান্য সৈন্ধব লবণ মিশিয়ে খাবারের ঠিক আগে খেয়ে নিন। অথবা, আদা দিয়ে গরম জল বা ভেষজ চা পান করতে পারেন। সরাসরি চিবিয়েও সকালে খালি পেটে আদা খেতে পারেন। আদা খেলে রক্ত সঞ্চালন বাড়ে এবং শরীর থেকে বিষাক্ত পদার্থ দ্রুত বের হয়ে যায়। তবে মনে রাখবেন, শুধু আদা খেলেই ম্যাজিক হবে না। তেল-মশলাযুক্ত খাবার এড়িয়ে চলতে হবে। সঙ্গে নিয়মিত যোগ ব্যায়াম করা দরকার। খাওয়া-দাওয়ায় বিশেষ ডায়েট মেনে চলা জরুরি। এই অভ্যাস রপ্ত করতে পারলেই ধীরে ধীরে লিভারে জমা হওয়া চর্বি গলতে শুরু করবে।
