রমেন দাস: টিউমারের ভারে ডানহাত কার্যত অকেজো হয়ে গিয়েছিল। হাত তুলতেই পারছিলেন বছর ষাটের মায়া মল্লিক। সেইসঙ্গে তীব্র যন্ত্রণা। অনেকদিন ধরে এই সমস্যায় ভুগছিলেন। কিন্তু বিপদ যে ঠিক কতখানি, তা বুঝতে পারেননি। শেষমেশ চিকিৎসার জন্য এমআর বাঙ্গুর হাসপাতালের দ্বারস্থ হতেই ব্যাপারটা স্পষ্ট হল। চিকিৎসকরা পরীক্ষা করে জানালেন, ডানহাতে বাসা বেঁধেছে ২ কেজি ওজনের একটি টিউমার! যা অত্যন্ত বিপজ্জনক। তবে গলফগ্রিনের মায়াদেবীকে বিপন্মুক্ত করতে ঝুঁকি নিতে পিছপা হলেন না এমআর বাঙ্গুরের চিকিৎসকদল। অবশেষে অস্ত্রোপচারে বাদ গেল রাক্ষুসে টিউমার। আপাতত সুস্থ মায়াদেবী। হাতে জোর ফিরে পেয়েছেন আর মুখে হাসি।
গলফগ্রিনের বাসিন্দা মায়াদেবী স্থূলকায়া। হাইপারটেনশনের রোগী অর্থাৎ প্রেশার বেশি ছিল। তাঁর শরীর থেকে টিউমার বাদ দেওয়ার বিষয়টি একেবারেই সহজ ছিল না বলে মত চিকিৎসকদের। কিন্তু ২ কেজির 'রাক্ষুসে' টিউমার বাদ না দিলে যে সমূহ বিপদ হতো বছর ষাটের মহিলার। তাই ঝুঁকিপূ্র্ণ হলেও অপারেশনের সিদ্ধান্ত নেন চিকিৎসকরা। তৈরি হয় বিশেষজ্ঞদের টিম। সার্জিক্যাল টিমের সদস্য ডাঃ নিলয় নারায়ণ সরকার, ডাঃ জয়দীপ রায়। অ্যানাস্থেশিয়া করেন ডাঃ বিএন দাস, ডাঃ বোধিসত্ত্ব বাগচী। তাঁরাই দায়িত্ব নিয়ে গত ২৩ তারিখ অপারেশন করেন। একঘণ্টার অপারেশনে মায়াদেবীর শরীর থেকে বাদ যায় ২ কেজির টিউমারটি।
এমআর বাঙ্গুরের সুপার ড. শিশির নস্কর জানিয়েছেন, ''ওঁর ডানহাতে একটা বড় টিউমার ছিল। তার ভারে উনি হাত তুলে কিছু করতে পারতেন না। হাত ক্রমশ অকেজো হয়ে পড়ছিল। আমরা ঝুঁকিপূর্ণ অপারেশনের সিদ্ধান্ত নিই। তবে তাও সহজ ছিল না। হাতে শিরা, স্নায়ুতে আঘাত লাগতে পারত, সেখান থেকে সংক্রমণের আশঙ্কাও ছিল। তাতে গোটা হাতই বাদ যেতে পারত। কিন্তু আমাদের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা অত্যন্ত সতর্কতার সঙ্গে অস্ত্রোপচার করেছেন এবং তা ১০০ শতাংশ সফল। এটা সার্জারি বিভাগের সাফল্য।'' অপারেশনের পর স্থিতিশীল মায়া মল্লিক। হাতে জোর ফিরে পেয়েছেন। এমন বিপদ থেকে বেরিয়ে হাসিমুখে চিকিৎসকদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছেন মায়াদেবী।