সংবাদ প্রতিদিন ব্যুরো: সবুজ ঝড়ই বজায় থাকবে নাকি নিজেদের ‘গড়’ দখলে রাখবেন হেভিওয়েটরা? রাজ্যের পুরভোট বিরোধী শিবিরের হেভিওয়েটদের জন্য ছিল ‘প্রেস্টিজ ফাইট’। ভোটের দিন তাই স্বমহিমায় হেভিওয়েটরা। মুর্শিদাবাদে নিজের গড় ধরে রাখতে কার্যত দৌড়ে বেড়ালেন অধীররঞ্জন চৌধুরী (Adhir Ranjan Chowdhury)। আবার ভোটের আগের রাত থেকেই খড়গপুরে বাংলোয় ওঠেন দিলীপ ঘোষ। এলাকার ভোটার না হওয়ায় কাঁথিতে দেখা গেল না শুভেন্দুকে। তবে ভোট দিতে যাওয়ার পথে পুলিশের বিরুদ্ধেই মেজাজ হারালেন বর্ষীয়ান সাংসদ শিশির অধিকারী। পথে নেমে বিক্ষোভের মুখে পড়লেন সৌমেন্দু। ভাটপাড়ায় তুলকালাম অর্জুন সিংয়ের। স্বমেজাজে দেখা গেল কামারহাটির তৃণমূল বিধায়ক মদন মিত্র এবং বীরভূম জেলা তৃণমূল সভাপতি অনুব্রত মণ্ডলকেও।
শনিবারই একটি অডিও ভাইরাল হয়। ওই অডিও ক্লিপিংয়ে ‘শুভেন্দুর প্রার্থী’কে ভোট দেওয়ার আরজি শোনা যায়। যদিও সেই অডিওর সত্যতা যাচাই করেনি SangbadPratidin.in। তারপর ২৪ ঘণ্টা কাটতে না কাটতেই ভোট দিতে বেরিয়ে পুলিশের উপর মেজাজ হারালেন বর্ষীয়ান সাংসদ শিশির অধিকারী (Sisir Adhikari)। গালিগালাজ করতেও শোনা যায় তাঁকে। তৃণমূলের হয়ে ভোটে লড়ে জয়ী সাংসদের গলায় নিজের দলের কর্মী-সমর্থকদের বিরুদ্ধেই বিস্ফোরক অভিযোগ করে বসেন তিনি। শাসকদলের বিরুদ্ধে বুথ দখলের অভিযোগে সরব হলেন বর্ষীয়ান সাংসদ। যদিও মৎস্যমন্ত্রী অখিল গিরি সে অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। বুথ দখলের অভিযোগ ভিত্তিহীন বলেই দাবি তাঁর।
[আরও পড়ুন: ওষুধ সংস্থার কর্মী সেজে কোটি টাকার প্রতারণা! কলকাতা পুলিশের জালে নাইজেরিয়ার যুবক]
কাঁথি পুরসভার ভোটপ্রচারে বারবার দেখা গিয়েছিল শুভেন্দু অধিকারীকে (Suvendu Adhikari)। তবে ভোটের দিন দেখা গেল না তাঁকে। বরং পথে নেমে শাসকদলের বিরুদ্ধে সুর চড়াতে দেখা যায় সৌমেন্দু অধিকারীকে। কাঁথির জাতীয় বিদ্যালয়ের সামনে তাঁকে ঘিরে বিক্ষোভও দেখান তৃণমূল কর্মী-সমর্থকরা।
ভোটার না হওয়ায় শুভেন্দুর মতোই পুরভোটের দিন ময়দানে দেখা যায়নি খড়গপুরের বিজেপি সাংসদ দিলীপ ঘোষকে (Dilip Ghosh)। তবে কর্মীরা মার খেলে পথে নামতে যে দু’বার ভাববেন না, সেই হুঁশিয়ারি দেন তিনি। শনিবার রাতে খড়গপুরের বাংলোয় পৌঁছন দিলীপ। তবে বাংলোয় থাকতে পারবেন কিনা, তা নিয়ে পুলিশের সঙ্গে বচসাতেও জড়ান তিনি।
বালুরঘাটে বাইক দেখে নেমে দৌড়তেও দেখা যায় বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদারকে।
তবে গড়রক্ষার লড়াইয়ে পুরভোটে সকাল থেকে কার্যত কোমর বেঁধে নেমে পড়েন অধীর চৌধুরী। ঠিক যেন দাবাং-য়ের ভূমিকায় দেখা গেল তাঁকে। ফোনে মহিলার কান্না শুনে ঘুম ভাঙে তাঁর। তারপর থেকে বুথে বুথে ঘুরে বেড়ান বহরমপুরের সাংসদ। বেলা বাড়তেই তাঁর গাড়ির সামনে বসে বিক্ষোভ দেখান তৃণমূল কর্মীরা।
অধীরের মতোই দলীয় কর্মীদের রক্ষা করতে রাস্তায় নামেন বিজেপি সাংসদ অর্জুন সিং (Arjun Singh)। পুলিশের সঙ্গে বচসাতেও জড়ান সাংসদ। কথা কাটাকাটির মাঝে এক তৃণমূল কর্মীকে চড়ও মারেন অর্জুন।
বারাকপুরের বিজেপি সাংসদ অর্জুন সিং এবং বহরমপুরের সাংসদ অধীরের বিরুদ্ধে নির্বাচন কমিশনে যাওয়ারও হুঁশিয়ারি ঘাসফুল শিবিরের।
আগামী ২ মার্চ ভোটের ফলপ্রকাশ। শেষ হাসি কে হাসে, সেদিকে নজর সকলের।