নির্মল ধর: কয়েক মাস আগে বাংলাদেশের চলচ্চিত্র উৎসবে সারা কলকাতায় ঝড় তুলেছিল ‘হাওয়া’ নামের ছবি। যদিও সেটি একটি শ্রীলঙ্কার সিনেমা থেকে অনুপ্রাণিত বলা যায়। ‘হাওয়া’র ঝড় থামতে না থামতেই খবর এল ওপার বাংলায় ‘সুড়ঙ্গ’ (Surongo) নামের একটি ছবি নাকি ‘হাওয়া’র মতো জনপ্রিয় হয়েছে। আনন্দের কথা, সেই ‘সুড়ঙ্গ’ কলকাতায় নিয়ে এল SVF। তাদের ধন্যবাদ। শুক্রবার থেকেই কলকাতার একাধিক হলে শুরু হয়েছে ছবির প্রদর্শনী!
‘হাওয়া’র ঝড়কে মনে রেখেই ঢুকেছিলাম হলে। দুর্দান্ত ফটোগ্রফি, সম্পাদনা, গান ও আবহর সঙ্গে গল্পেও নতুন কিছু স্বাদ থাকবে, শিল্পীদের অভিনয়েও চমকিত হব – ছিল এমন প্রত্যাশা। দুর্ভাগ্য, সেই আশা ও ভাবনা পূরণ হল না। ইলেকট্রিক মেকানিক মাসুদ ময়নাকে প্রথমবার দেখেই লাইট পোস্ট থেকে শুধু পড়ে যায়নি, হাড়গোর ভেঙে ময়নার প্রেমেও পড়েছে। পরিচালক ছবি শুরুর পাঁচ থেকে সাত মিনিটের মধ্যেই ওদের বিয়ে দিয়ে দিয়েছেন। আর প্রথম রাতেই ময়না বুঝিয়ে দিয়েছে, তাঁর কাছে প্রেম-ভালবাসার চাইতে অনেক বেশি দামী অর্থ, সুখ, স্বাচ্ছন্দ্য, বিলাসবহুল জীবন।
[আরও পড়ুন: ঠোঁটের উপরে গোঁফ, মাথায় টুপি, চিনতে পারছেন বাংলা সিরিয়ালের এই অভিনেত্রীকে?]
কিন্তু সাধারণ মেকানিক সাধ্যের বাইরে গিয়েও স্ত্রীর চাহিদা মেটাতে পারে না। এই সুযোগে স্বামীর বন্ধু জাহিরকে বিয়ে করে সংসার পাতে ময়না। মাসুদকে মুখের উপর বলে দেয়, পুরুষ হতে যোগ্যতা লাগে, শুধু ভালোবাসা দিয়ে স্ত্রী রাখা যায়না, দরকার টাকার। ময়নার এই কথা শুনেই মারাত্মক সিদ্ধান্ত নেয় মাসুদ। তার জন্যই খুড়তে থাকে ‘সুড়ঙ্গ’।
পরিচালক রায়হান রফি চিত্রনাট্য অকারণে দীর্ঘ করেছেন।কাহিনীতে অভিনবত্ব কিছু নেই, রয়েছে অতিনাটকের বাড়াবাড়ি, কাকতালীয় ঘটনার অহেতুক সমাবেশ। বাণিজ্যিক মশলায় ভরপুর, এমনকী একটি আইটেম গানও রয়েছে। প্রেম ও অর্থের মিলন না হলে পরিণতি কী হয় সেটাই অবশ্য দেখিয়েছেন পরিচালক। তবে দুই প্রধান শিল্পী আফরান নিশো (Afran Nisho) এবং তমা মির্জা সত্যিই অবাক করে দেন তাঁদের অভিনয় দিয়ে। একটু বাড়তি নম্বর পাবেন আফরান। বন্ধু জহির ও তদন্তকারী অফিসারের চরিত্রে মোস্তাফা মনওয়ার ও শহীদুজ্জামান সেলিমকে হয়তো দর্শক পছন্দ করবেন। কিন্তু ‘হাওয়া’ ঝড় ‘সুড়ঙ্গ’ তুলবে না এটা নিশ্চিত।
সিনেমা – সুড়ঙ্গ
অভিনয় – আফরান নিশো, তমা মির্জা, মোস্তাফা মনওয়ার, শহীদুজ্জামান সেলিম প্রমুখ
পরিচালনায় – রায়হান রফি