সুকুমার সরকার, ঢাকা: আন্দোলন প্রত্যাহারের ঘোষণা স্বেচ্ছায় করা হয়নি! যৌথ বিবৃতি দিয়ে এমনটাই জানিয়েছে ছাত্র আন্দোলনের ছয় কো-অর্ডিনেটর। সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কার দাবি ঘিরে উত্তাল হয়ে উঠেছিল বাংলাদেশ। প্রাণ ঝরেছে দুশোর কাছাকাছি মানুষের। গ্রেপ্তার হন প্রায় ১১ হাজার। ছয় ছাত্রনেতাকে হেফাজতে নেয় ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিবি)।
শুক্রবার এক যৌথ বিবৃতিতে ছয় কো-অর্ডিনেটর নাহিদ ইসলাম, সারজিস আলম, হাসনাত আবদুল্লাহ, আসিফ মাহমুদ, আবু বাকের মজুমদার ও নুসরাত তাবাসসুম আন্দোলন প্রত্যাহারের বিষয়টি অস্বীকার করেন। তাঁরা বলেন, ডিবি-র হেফাজতে থাকাকালীন স্বেচ্ছায় কোনও বিবৃতি দেওয়া হয়নি। হেফাজতে রেখে ওই ছয়জনকে অত্যাচার করে জোর করে আন্দোলন প্রত্যাহার করে বিবৃতি দিতে বাধ্য করা হয়েছিল। দিন তিনেক আগে এমনই অভিযোগ করেছিলেন আন্দোলনের এক কো-অর্ডিনেটর আব্দুল কাদের। তিনি বলেছিলেন, যতদিন না ছয়জনকে ছাড়া হচ্ছে ততদিন প্রতিবাদ-বিক্ষোভ চলবে। কিন্তু গতকাল বৃহস্পতিবার, বেলা দেড়টার দিকে ডিবির হেফাজত থেকে ছয় কো-অর্ডিনেটরকে ছেড়ে দেওয়া হয়। তার পরই সকলে মুখ খোলেন। ফলে ফের শুরু হয়েছে বিতর্ক।
[আরও পড়ুন: নিষিদ্ধ করায় হাসিনা সরকারের কড়া নিন্দা জামাতের, চুপ থেকে জল মাপছে বিএনপি?]
এদিকে, 'প্রার্থনা ও ছাত্র-জনতার গণমিছিল' পালনে জোড়ো হন পড়ুয়ারা। অন্য জায়গাগুলো শান্ত থাকলেও দেশের দক্ষিণের জেলা খুলনায় ছাত্র-জনতার গণমিছিল কর্মসূচিকে কেন্দ্র শিক্ষার্থীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ হয় আজ। পরে বিপুল সংখ্যক শিক্ষার্থী মিছিল নিয়ে এগিয়ে গেলে পুলিশ ধীরে ধীরে পিছু হটে যায়। সেখানে শিক্ষার্থীদের সরিয়ে দেওয়া নিয়ে বিকেল ৪টের দিকে দ্বিতীয় দফায় সংঘর্ষ শুরু হয়। এই সময় পুলিশ টিয়ালসেল ও রাবার বুলেট ছুড়ছে বলে অভিযোগ করেন শিক্ষার্থীরা।
অন্যদিকে, ছাত্র আন্দোলনে হিংসা ছড়ানোর অভিযোগে বাংলাদেশ জামাত-ই-ইসলামি ও ইসলামি ছাত্রশিবিরকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে হাসিনা সরকার। জারি করা হয়েছে বিজ্ঞপ্তি। যার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন জামাতের আমির বা প্রধান ডা. শফিকুর রহমান। তিনি বলেন,“সরকার ছাত্রদের অরাজনৈতিক আন্দোলনকে দমন করার জন্য দলীয় ক্যাডার ও রাষ্ট্রীয় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী দিয়ে গণহত্যা চালিয়েছে। সরকারের এই গণহত্যার বিরুদ্ধে দেশের শিক্ষক সমাজ, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব, সাংবাদিক ও বিভিন্ন পেশার মানুষ ঐক্যবদ্ধভাবে আন্দোলন করে যাচ্ছে। বিশ্বসম্প্রদায় এই গণহত্যার নিন্দা জানিয়েছে। সরকার নিজেদের অপকর্ম ঢাকার জন্য বাংলাদেশ -জামাত-ই ইসলামি ও ইসলামি ছাত্রশিবির-কে নিষিদ্ধ ঘোষণা করে চলমান আন্দোলনকে অন্যদিকে ঘুরিয়ে দিতে চাইছে।" জামাতকে নিষিদ্ধ করে বিজ্ঞপ্তি জারির পর ঢাকার নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে।