রাহুল রায়: মোমিনপুর অশান্তির জল গড়িয়েছে আদালত পর্যন্ত। বুধবার পুলিশের ভূমিকা নিয়ে ক্ষোভ উগরে দিলেন বিচারপতি। এই ধরনের একটি ঘটনায় এনআইএকে কেন জানানো হয়নি, সেই প্রশ্ন তোলে বিচারপতি জয়মাল্য বাগচীর ডিভিশন বেঞ্চ।
মোমিনপুরের ঘটনায় শহরে কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েনের আরজি নিয়ে আগেই কলকাতা হাই কোর্টের প্রধান বিচারপতির দৃষ্টি আকর্ষণ করে চিঠি দিয়েছিলেন জনৈক ব্যক্তি। এবার ঘটনার প্রসঙ্গ টেনে জোড়া জনস্বার্থ মামলা দায়ের হল কলকাতা হাই কোর্টে। বুধবার এই মামলাটি ওঠে হাই কোর্টের বিচারপতি জয়মাল্য বাগচীর এজলাসে। সেখানেই পুলিশের ভূমিকা নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন বিচারপতি। বোমা বিস্ফোরণের ঘটনার পর কেন NIA’কে জানানো হয়নি? ওই এলাকায় সম্প্রীতি ফেরাতে কী উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে? সেই প্রশ্ন তোলে বিচারপতি জয়মাল্য বাগচীর ডিভিশন বেঞ্চ। পাশাপাশি বুধবার বেলা দুটোয় রাজ্যের কাছে মোমিনপুর সংক্রান্ত রিপোর্ট তলব করেছে হাই কোর্ট। সেখানে জানাতে হবে, নিরাপত্তার জন্য কী পদক্ষেপ করা হয়েছে, ক্ষতিপূরণ নিয়ে কী চিন্তাভাবনা করেছে রাজ্য এবং সম্প্রীতি ফেরাতে কী করা হচ্ছে। নির্দেশ না মানলে ডাকা হতে পারে পুলিশ কমিশনারকে।
[আরও পড়ুন: জোড়া ঘূর্ণাবর্তে আলোর উৎসবেও দুর্যোগের আশঙ্কা, কালীপুজোতেও ভাসবে রাজ্য?]
ঘটনার সূত্রপাত শনিবার রাতে মোমিনপুরের ময়ূরভঞ্জ রোডে। দুই গোষ্ঠীর সংঘর্ষে ইটবৃষ্টি হয়। রবিবার দুপুরে ফের উত্তেজনা ছড়ায় ওয়াটগঞ্জ ও একবালপুর থানা এলাকায়। একবালপুর থানা ঘেরাও করে উত্তেজিত জনতা। পরিস্থিতি সামাল দিতে কাঁদানে গ্যাস ছোঁড়ে পুলিশ। ঘটনায় কলকাতা পুলিশের উচ্চপদস্থ আধিকারিক-সহ বেশ কয়েকজন আহত হন। ঘটনায় এপর্যন্ত ৪২ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে কলকাতা পুলিশের তরফে জানানো হয়েছে। ঘটনার পর থেকে এলাকায় বিশাল পুলিশ বাহিনী মোতায়েন করা হয়। নামানো হয় র্যাফ।
পুলিশ সূত্রে আরও জানা গিয়েছে, ঘটনার সিসিটিভি ফুটেজ দেখে আরও ৩৫ জনকে চিহ্নিত করা হয়েছে। নোটিস পাঠিয়ে ৪১ জনকে সতর্ক করা হয়েছে। অশান্তির ছবি ছড়ানোর জন্য ৮০টি ভিন্ন ভিন্ন মামলা দায়ের করা হয়েছে। সোমবার জনৈক নব্যেন্দু কুমার বন্দ্যোপাধ্যায় ইমেল মারফত হাই কোর্টের প্রধান বিচারপতি প্রকাশ শ্রীবাস্তবকে চিঠি দেন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে এনিয়ে স্বতঃপ্রণোদিত জনস্বার্থ মামলা দায়ের করারও আবেদন জানান তিনি। এনিয়ে মঙ্গলবার মামলাও দায়ের করেন নব্যেন্দু কুমার বন্দ্যোপাধ্যায়। অন্যদিকে, বিজেপি আইনজীবী সেলের তরফে মামলা দায়ের করেন সুস্মিতা সাহা দত্তও।