ভাস্কর মুখোপাধ্যায়, বোলপুর: ছাত্র আন্দোলনের অচলাবস্থার মধ্যে সোমবার থেকে বিশ্বভারতীতে (Vishva Bharati) শুরু হওয়ার কথা ছিল উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা। প্রথম দিন বাংলা এবং হিন্দি পরীক্ষা। কিন্তু পড়ুয়াদের আন্দোলনের চাপে পরীক্ষাই শুরু করা যায়নি। দিনভর চলতে থাকে বিক্ষোভ। যার জেরে রাতে বিজ্ঞপ্তি জারি করে বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ জানিয়ে দেয়, পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত স্থগিত থাকবে মাধ্যমিক এবং উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা।
এদিন সকালে আন্দোলনকারী ছাত্রছাত্রীরা সরাসরি বাধা না দিলেও উচ্চমাধ্যমিক (HS) পরীক্ষার্থীদের একাংশ আন্দোলনকারীদের সর্মথনে পরীক্ষা বয়কট করেন এবং ভাষা ভবন ও বিদ্যাভবনের গেট আটকে দেন। এর জেরে পরীক্ষার্থীদের একটা বড় অংশ ভবনে ঢুকতে পারেননি। ছাত্রছাত্রী এবং অভিভাবকদের একাংশের অভিযোগ, বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ পরীক্ষা নেওয়ার কোনও উদ্যোগ নিচ্ছে না। অনিশ্চিত হয়ে পড়ে প্রায় ২০০ ছাত্রছাত্রীর ভবিষ্যৎ।
বিশ্বভারতীর দু’টি স্কুল পাঠভবন এবং শিক্ষাসত্রের কয়েকশো ছাত্রছাত্রী এবার উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা দেওয়ার কথা। ভাষা-বিদ্যাভবন বিল্ডিংয়ে সকাল ৯ টা থেকে ১২টা পর্যন্ত বাংলা এবং হিন্দি ভাষার পরীক্ষা হওয়ার কথা ছিল। এ বছর প্রায় দু’শোর বেশি ছাত্রছাত্রী পরীক্ষা দিচ্ছেন। কিন্তু এই পরীক্ষা নিয়ে চরম অনিশ্চয়তায় ভুগছিলেন ছাত্রছাত্রীরা। কারণ, বিশ্বভারতীতে লাগাতার ছাত্র আন্দোলন চলছে। পঠনপাঠন স্বাভাবিক হলেও কোনও পরীক্ষা হচ্ছে না। তাই এবার কড়া সিদ্ধান্ত নিল বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ।
[আরও পড়ুন: যান্ত্রিক ত্রুটির জেরে গতিপথ বদল, করাচিতে জরুরি অবতরণ দিল্লি-দোহা যাত্রীবাহী বিমানের]
এদিকে উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা নিয়ে আন্দোলনরত ছাত্রছাত্রীরা পরীক্ষার্থীদের অভিভাবকদের সঙ্গে বৈঠকে বসেন। প্রাথমিকভাবে ঠিক হয়েছে, ছাত্রছাত্রীদের দাবি মতো মাধ্যমিক এবং উচ্চমাধ্যমিক অনলাইনে পরীক্ষা হওয়ার কথা। কিন্তু কর্তৃপক্ষ জানিয়ে দিয়েছে, এই দুটি পরীক্ষা অফলাইনে হবে। তাই অভিভাবকরা চাইলে এই পরীক্ষা বন্ধ করতে পারে। আন্দোলনরত ছাত্রছাত্রীরা পরীক্ষা বন্ধ করতে যাবেন না।
এই বিষয়ে এসএফআই (SFI) নেতা সোমনাথ সৌ এবং শুভ নাথ জানান, ”উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষায় আন্দোলনরত ছাত্রছাত্রীরা বাধা দিতে যাবে না। অবিভাবকদের সঙ্গে বৈঠক করে আমরা জানিয়ে দিয়েছি। এখন অভিভাবকরা চাইলে তাঁরা পরীক্ষা বন্ধ করবেন। কারণ, এই পরীক্ষা অনলাইনে হওয়া উচিত।”
[আরও পড়ুন: সরকারি স্কুলে নীল-সাদা পোশাকে থাকবে ‘বিশ্ব বাংলা’ লোগো, নির্দেশিকা সমগ্র শিক্ষা মিশনের]
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ছাত্র জানায়, ”ঝামেলা হতে পারে, এই আশঙ্কা করে সকাল ৮টা থেকে পরীক্ষাকেন্দ্রে চলে এসেছি। কিন্তু কয়েকজন গেট বন্ধ করে দিয়েছেন। আন্দোলনকারী কয়েকজন ছাত্রছাত্রী রয়েছেন। পরীক্ষা না হলে কী করব, জানি না। বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ কিছু বলছে না।”
এক অভিভাবক জানান, ”আমরা খুব চিন্তার মধ্যে আছি। দু’শোর বেশি ছাত্রছাত্রীর মধ্যে কয়েকজন পরীক্ষা দিতে চাইছে না। বাকিরা পরীক্ষা দেবে। অ্যাডমিট যখন নিয়েছে ছাত্রছাত্রীরা পরীক্ষা দেবে। কিন্তু কর্তৃপক্ষের কাছে বারবার সাহায্য চাইলেও তারা কোনও সাহায্য করছে না।”