সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: চিনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদের শাস্তি! আর সেকারণেই বন্ধ হচ্ছে হংকংয়ের গনতন্ত্রপন্থী সংবাদপত্র অ্যাপল ডেইলি। বৃহস্পতিবারই এটির শেষ সংস্করণ মুদ্রিত হল। আর এরপরই বন্ধ হচ্ছে সংবাদপত্রটির অফিস। বুধবার অ্যাপল ডেইলির পক্ষ থেকেই এক বিবৃতিতে একথাই ঘোষণা করা হয়েছে।
হংকংয়ের বিতর্কিত জাতীয় নিরাপত্তা আইন লঙ্ঘন করেছে অ্যাপল ডেইলি। সম্প্রতি এমন অভিযোগেই এই সংবাদমাধ্যমের দপ্তরে হানা দিয়েছিল হংকং পুলিশ। তাও একবার নয়, একাধিকবার। গ্রেপ্তার করা হয় মুখ্য সম্পাদক এবং আরও পাঁচ শীর্ষ সাংবাদিককে। এর আগে সংবাদপত্রটির মালিক জিমি লাইকেও সরকার বিরোধী বিক্ষোভে অংশ নেওয়ায় জেলে পাঠানো হয়েছিল। এখানেই শেষ নয়, পরবর্তীতে সংস্থার সব সম্পত্তিও ‘ফ্রিজ়’ করে দেওয়া হয়েছে। ফলে কর্মীদের বেতন দেওয়া বা সংস্থা চালানোর মতো ক্ষমতাও আর নেই অ্যাপল ডেইলি। এরপরই সংস্থার পক্ষ থেকে বৃহস্পতিবার থেকে সংবাদপত্র বন্ধের কথা ঘোষণা করা হয়।
[আরও পড়ুন: রাশিয়ার জলসীমা লঙ্ঘন ব্রিটিশ রণতরীর, পালটা গোলা ছুঁড়ে জবাব রুশ যুদ্ধবিমানের]
অ্যাপল ডেইলির পক্ষ থেকে প্রকাশিত বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘‘আমাদের কর্মীদের নিরাপত্তার কথা ভেবে আমরা বুধবার মধ্যরাত থেকে সব কাজকর্ম বন্ধ করে দিচ্ছি।’’ যদিও এই ঘটনায় আন্তর্জাতিক স্তরে তীব্র কটাক্ষের মুখে পড়তে হয়েছে হংকং প্রশাসনকে। ব্রিটেনের বিদেশমন্ত্রী ডমিনিক রাবের কথায়, ‘‘হংকংয়ের মানুষের বাক স্বাধীনতায় এই ঘটনা বিপুল এক আঘাত।’’ জানা গিয়েছে, এদিন খবরের কাগজটির শেষ মুদ্রিত সংস্করণ প্রকাশিত হবে। সংবাদমাধ্যম সংগঠন ‘হংকং ফ্রি প্রেস’-এর ওয়েবসাইটে জানানো হয়েছে, স্মারক সংস্করণ হিসেবে অ্যাপল ডেইলির প্রায় ১০ লক্ষ কপি ছাপা হচ্ছে।
প্রসঙ্গত, ‘অ্যাপল ডেইলি’র মালিকানা রয়েছে হংকংয়ের গণতন্ত্রকামী নেতা তথা ধনকুবের জিমি লাইয়ের হাতে। বরাবর বেজিংয়ের অত্যাচার এবং নিপীড়নের বিরুদ্ধে সরব হয়েছে সংবাদপত্রটি। স্বশাসিত প্রদেশটিতে বিগত কয়েক মাস ধরেই জিমি লাইকে রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগে বন্দি করে রেখেছে শি জিনপিংয়ের প্রশাসন। প্রসঙ্গত, ২০২০ সালের জুন মাসে আন্তর্জাতিক মঞ্চের প্রতিবাদ হেলায় উড়িয়ে হংকং নিয়ে বিতর্কিত জাতীয় নিরাপত্তা বিল পাশ করে চিন। বিতর্ক উপেক্ষা করেই ‘National security legislation for Hong Kong’ শীর্ষক বিলটিতে সই করেন চিনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং। এর ফলে স্বায়ত্বশাসিত প্রদেশটির উপর বেজিংয়ের রাশ আরও শক্তিশালী হয়েছে। তারপরই চিনের উপর চাপ বাড়িয়ে হংকংয়ের (Hong Kong) ৩০ লক্ষ বাসিন্দাকে নাগরিকত্ব দেওয়ার কথা ঘোষণা করে ব্রিটেন। শুধু তাই নয়, সদ্য হংকংয়ের ‘চিনপন্থী’ প্রশাসক ক্যারি লাম-সহ ১০ জন উচ্চপদস্থ চিনা আধিকারিকের উপর ভ্রমণ ও আর্থিক বিষয় সংক্রান্ত নিষেধাজ্ঞা চাপিয়েছে ওয়াশিংটন।