সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ফের সম্মান রক্ষার বলি হতে হল এক বছর কুড়ির তরুণীকে। মেয়ের নৃশংস মৃত্যু তাড়িয়ে তাড়িয়ে উপভোগ করল বাবা মা। মৃতের নাম সুষমা। দলিত ছেলেকে বিয়ে করতে চেয়েছিলেন তিনি। বাবা মাকে বার বার রাজি করানোর চেষ্টাও করেন। তাতে ফল হল উলটো। মেয়েকে বিষ মেশানো জুস খাইয়ে মেরে ফেলার অভিযোগ উঠল বাবা, মা ও মামার বিরুদ্ধে। শুধু বিষ খাওয়ানোই নয়, প্রায় ছঘণ্টা ধরে যন্ত্রণায় ছটফট করেছেন সুষমা। গোটা দৃশ্যের প্রত্যক্ষদর্শীর ভূমিকায় ছিল বাবা-মা। মেয়ের মৃত্যু হয়েছে বুঝতে পেরে প্রমাণ লোপাটের জন্য দেহটিকে নিজেদেরই খামার বাড়িতে পুঁতে দেয় তারা। ঘটনাটি ঘটেছে মাইসুরুর গোলানাবিদু গ্রামে।
[রঙের উৎসবে রক্তের দাগ, হোলি খেলতে গিয়ে গণপিটুনিতে মৃত দলিত কিশোর]
দলিত ছেলেকে বিয়ে করতে চেয়েই বড় মাপের অপরাধ করে ফেলেছিলেন সুষমা। বাবা গোয়াদা কুমারকে প্রেমের বিষয়ে জানিয়েওছিলেন। কিন্তু কোনও ফল হয়নি। বেশ কয়েকবার মা জয়ন্তী, মামা কেমপান্না ও বাবা তাঁকে নিষেধ করে। মারধরও করা হয়। কিন্তু কোনওভাবেই মেয়েকে আটকানো যাচ্ছিল না। মেয়েকে থামাতে এলাকায় সালিশিও ডাকা হয়। কড়া অনুশাসনের মধ্যে দিয়ে তাকে বোঝানোর চেষ্টা হয়। উপায় খুঁজে না পেয়ে বাড়ি থেকে দূরে এক আত্মীয়ের বাড়িতে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। সেখানেই ছিলেন সুষমা। মাঝে মাঝে তাঁকে বাড়িতে ডেকে পাঠিয়ে মত বদলের উপরে জোর দেওয়া হত। তবে কোনও বক্তব্যেই সুষমাকে প্রভাবিত করা যায়নি। তিনবার মেয়েকে বাড়িতে ডাকে গোয়াদা কুমার। গত ২০ ফেব্রুয়ারি ফের সুষমাকে ডাকা হয়। এবার আর তাঁকে মারধর করা হয়নি। মেয়ে ফিরতেই তাঁকে ফলের রস এনে দেয় মা। কয়েক চুমুক নেওয়ার পরই ওই পানীয়টিতে আপত্তি জানিয়েছিলেন সুষমা। অভিযোগ, তখন মামা, মা দুজনে মিলে তাঁকে ধরে রাখে। বাবা নাক বন্ধ করে জোর করিয়ে বিষ মেশানো জুস খাইয়ে দেয়। এরপর প্রায় ছঘণ্টার মতো সময় যন্ত্রণায় ছটফট করেছেন সুষমা। চোখের সামনে মেয়ের ছটফটানি দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে দেখেছে বাবা মা। ২১ তারিখ ভোর চারটে নাগাদ মৃত্যু হয় সুষমার। বাবা মা আর দেরি করেনি, মামার সাহায্যে নিজেদেরই খামার বাড়ির মাটিতে পুঁতে দেয় সুষমার দেহ।
[রাজ্য সম্মেলনের আগে বামেদের পোস্টারেও প্রিয়া প্রকাশ]
এরপরই গুজব ছড়ায় যে মেয়েকে মেরে ফেলেছে গোয়াদা। গত বুধবার ঘটনার তদন্তে নামে স্থানীয় থানার পুলিশ। গোয়াদা কুমারকে আটক করা হয়। জেরায় মেয়েকে খুনের কথা স্বীকার করেছে সে। এদিকে পুলিশে জানাজানি হতেই পলাতক মৃত তরুণীর মা ও মামা। তাদের খোঁজে তল্লাশি শুরু হয়েছে। খামার বাড়িতে সুষমার পচাগলা দেহ উদ্ধারের জন্যও চলছে তল্লাশি। তিনজনের বিরুদ্ধে খুন ও প্রমাণ লোপাটের স্বতঃপ্রণোদিত অভিযোগ দায়ের করে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।
The post দলিত যুবকের সঙ্গে প্রেম, ফলের রসে বিষ মিশিয়ে তরুণীকে খুন মা-বাবার appeared first on Sangbad Pratidin.