সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: নাচতে ভালবাসত বোন। কেরিয়ার হিসেবে মডেলিং বেছে নেওয়ার ইচ্ছা ছিল তাঁর। তাই তাঁকে গুলি করে খুন করল দাদা। ফের ‘অনার কিলিং’য়ের এহেন নৃশংস ঘটনার সাক্ষী থাকল পাকিস্তান (Pakistan)।
[আরও পড়ুন: ‘বাক্সে স্বামীর কাটা মাথা পাঠাব’, ইউক্রেনীয় মহিলাদের হুমকি রুশ সেনার]
পিটিআই সূত্রে খবর, এই হত্যাকাণ্ডটি ঘটেছে পাকিস্তানের পাঞ্জাব প্রদেশের রাজধানী লাহোর থেকে প্রায় ১৩০ কিলোমিটার দূরের রেনালা খুর্দ ওকারা নামের একটি গ্রামে। ওই গ্রামেরই বাসিন্দা ছিলেন ২১ বছরের তরুণী সিদরা। স্থানীয় একটি পোশাক ব্র্যান্ডের জন্য মডেলিং করতেন তিনি। একইসঙ্গে ফয়সলাবাদ শহরের থিয়েটারে মাঝেমধ্যে নৃত্য পরিবেশনও করতেন। আর এটাই নাপসন্দ ছিল পরিবারের। কিন্তু শত বাধা সত্ত্বেও কিছুতেই নিজের পছন্দ ত্যাগ করেননি সিদরা। আর প্রাণ দিয়ে সেই ‘অপরাধের’ খেসারত দিতে হল তাঁকে।
স্থানীয় পুলিশ জানিয়েছে, ইদ উপলক্ষে বাড়িতে এসেছিলেন সিদরা। তখন ফের তাঁর মডেলিং ও নাচের বিষয় নিয়ে কথা কাটাকাটি শুরু হয় পরিবারের সদস্যদের মধ্যে। মডেলিং ছাড়ার জন্য সিদরাকে মারধরও করা হয় বলে অভিযোগ। কিন্তু যখন কিছুতেই তাঁকে বাগে আনা সম্ভব হয়নি, তখন প্রবল অক্রোশে ওই তরুণীকে গুলি করে তাঁর দাদা হামজা। বৃহস্পতিবারের ওই ঘটনার পর অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে খবর। পুলিশ আধিকারিক ফরাজ হামিদ জানিয়েছেন, সিদরা নাচের একটি ভিডিও হামজাকে পাঠিয়েছিলেন এক আত্মীয়। আর তাতেই প্রবল রেগের বশে বোনকে খুন করে সে।
উল্লেখ্য, পাঞ্জাব প্রদেশে এহেন ঘটনা নতুন কিছু নয়। পরিবারের সম্মান ও ইসলামের দোহাই দিতে এর আগেও বহু নৃশংস হত্যালীলা ঘটে গিয়েছে সেখানে। গতবছর, পরিবারের অমতে বিয়ে করায় দুই মেয়ে-সহ পরিবারের ৭ সদস্যকে জীবন্ত পুড়িয়ে মেরেছিল এক ব্যক্তি। ওই ঘটনাও ছিল পাঞ্জাব প্রদেশের। উল্লেখ্য, ২০১৬ সালের ১৫ জুলাই মুলতানের বাড়ি থেকে উদ্ধার হয় বিখ্যাত মডেল ও সোশ্যাল মিডিয়া তারকা কান্দিল বালোচের মৃতদেহ। ঘুমের মধ্যে তাঁকে শ্বাসরোধ করে খুন করা হয়েছিল। সেই ঘটনায় তাঁর দাদা মহম্মদ ওয়াসিমকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের নির্দেশ দেয় মুলতানের আদালত। সবমিলিয়ে পাকিস্তানে অনার কিলিংয়ের ঘটনায় কিছুতেই রাশ টানা যাচ্ছে না।