shono
Advertisement

বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্কের জের, স্ত্রীকে ধারাল অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে আত্মঘাতী স্বামী

গুরুতর জখম ওই মহিলা বর্তমানে চুঁচুড়া ইমামবাড়া হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
Posted: 09:20 PM Mar 29, 2021Updated: 09:20 PM Mar 29, 2021

দিব্যেন্দু মজুমদার, হুগলি: স্বামীর অবৈধ সম্পর্ক মেনে নিতে পারেননি স্ত্রী। আর এই অবৈধ সম্পর্কের জেরে প্রথমে স্ত্রীকে ধারাল অস্ত্র দিয়ে কোপাল স্বামী। তারপর গলায় দড়ির ফাঁস লাগিয়ে আত্মঘাতী হল। সোমবার সকালে মর্মান্তিক ঘটনাটি ঘটেছে হুগলির (Hooghly) চুঁচুড়া (Chinsura) চকবাজার এলাকার শান্তিপল্লীতে। আত্মঘাতী স্বামীর নাম রাজু মালিক (৪৫)। অন্যদিকে, গুরুতর জখম স্ত্রী রিঙ্কু মালিক বর্তমানে আশঙ্কাজনক অবস্থায় চুঁচুড়া ইমামবাড়া হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।

Advertisement

আহত রিঙ্কুর পারিবারিক সূত্রে জানা গিয়েছে, দীর্ঘ দুই বছর ধরে স্থানীয় এক বিবাহিতা মহিলার সঙ্গে রাজুর অবৈধ সম্পর্ক গড়ে উঠেছিল। রিঙ্কু স্বামীর এই অবৈধ সম্পর্কের প্রতিবাদ করেছিলেন। এরপরই রাজু স্ত্রীর উপর অকথ্য অত্যাচার শুরু করে। অনেক বোঝানোর পর কোনও কাজ হয় না। দিন দিন অত্যাচারের মাত্রা বাড়তে থাকে। অত্যাচারের মাত্রা সহ্যের সীমা ছাড়িয়ে গেলে রিঙ্কু শ্বশুর বাড়ি ছেড়ে পিপুলপাতিতে নিজের বাপের বাড়িতে এসে থাকা শুরু করেন। এরপর থেকেই রাজু তাঁকে রাস্তাঘাটে নানাভাবে হেনস্থা করতে শুরু করে বলে অভিযোগ।

[আরও পড়ুন: নিখোঁজ স্ত্রীকে ফিরে পেতে এ কী করলেন ঝাড়গ্রামের যুবক! হতবাক গোটা এলাকা]

আর্থিক অনটনের কারণে সংসার চালানোর জন্য এর মধ্যে রিঙ্কু একটি রক্ত পরীক্ষা কেন্দ্রে কাজ করা শুরু করেন। সোমবার সকাল ১১ টা নাগাদ শ্বশুর বাড়ি শান্তি পল্লী এলাকায় এক রোগীর রক্ত সংগ্রহ করতে যাওয়ার কথা ছিল রিঙ্কুর। সেইমতো এদিন রিঙ্কু রক্ত সংগ্রহ করতে যান। কিন্তু স্ত্রীর আসার খবর আগে থাকতে পেয়ে যায় স্বামী রাজু। সে ধারাল অস্ত্র নিয়ে সুযোগের অপেক্ষায় থাকে। রোগীর বাড়ি থেকে রক্ত সংগ্রহ করে বেরোতেই রাজু ধারাল অস্ত্র নিয়ে স্ত্রীর উপর ঝাঁপিয়ে পড়ে। তারপর এলোপাথারি কোপ মারতে থাকে। কোপ মারার পর রাজু পালিয়ে যায়। ঘটনাস্থলেই রিঙ্কু রক্তাক্ত অবস্থায় রাস্তায় লুটিয়ে পড়েন। স্থানীয় মানুষই তাকে উদ্ধার করে চুঁচুড়া ইমামবাড়া হাসপাতালে ভর্তি করেন। চিকিৎসকরা রিঙ্কুর শরীরের বিভিন্ন ক্ষতে ১২৬ টি সেলাই করেন।

অন্যদিকে, ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে রাজু তাঁর নিজের বাড়িতে গিয়ে গলায় দড়ির ফাঁস লাগিয়ে আত্মঘাতী হয়। মৃতের মেয়ে জানিয়েছে, পাড়ারই এক বিবাহিতা মহিলার সঙ্গে তার বাবার সম্পর্ক গড়ে উঠেছিল। সম্পর্ক জানাজানি হওয়ার পর বাবাকে বারণ করা সত্ত্বেও কথা শুনত না। এরপর মা তার দাদুর বাড়িতে চলে আসে। কিছুদিন বাদে মাকে বুঝিয়ে ফের বাড়ি ফিরিয়ে নিয়ে আসে বাবা। কিন্তু সমান্তরালভাবে ওই বিবাহিতা মহিলার সঙ্গে সম্পর্ক চালিয়ে যায়। এরপরই মা কয়েক মাস আগে পাকাপাকিভাবে বাপের বাড়িতে চলে যায়। মেয়ের অভিযোগ, এরপর থেকেই তার বাবা রাস্তাঘাটে তার মাকে ফলো করে নানারকমভাবে হেনস্থা করত। তারপরই এদিনের ঘটনা। ইতিমধ্যে দম্পতির মেয়ে ওই বিবাহিতা মহিলার কঠোর শাস্তির দাবি করেছেন। তবে এই বিষয়ে এখনও পর্যন্ত চুঁচুড়া থানায় কোনো অভিযোগ দায়ের হয়নি। তবে পুলিশ জানিয়েছে, অভিযোগ জানালে পুলিশ পুরো ঘটনার তদন্ত করবে। মৃতের মেয়ে জানান তিনি ওই মহিলার বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তির দাবি জানিয়ে থানায় অভিযোগ দায়ের করবেন।

[আরও পড়ুন: ‘নন্দীগ্রামের গুলিকাণ্ড তৃণমূল-বিজেপির যৌথ ষড়যন্ত্র’, মমতার বয়ান বদলে প্রতিক্রিয়া সিপিএমের]

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement