দিব্যেন্দু মজুমদার, হুগলি: ছোট থেকে মেধাবী ছেলে। প্রথম ছাড়া কখনও দ্বিতীয় হয়নি সে। অথচ করোনাকালে অনলাইন ক্লাস করতে গিয়েই যত গণ্ডগোল। পড়াশোনায় আশানুরূপ ফল করতে পারছে না সে। সন্দেহ হয় মায়ের। প্রথমে ভেবেছিলেন হয়তো অনলাইন ক্লাস বলেই সমস্যা হচ্ছে। তবে ছেলের ব্যবহৃত স্মার্টফোন (Smartphone) হাতে যাওয়ামাত্রই চক্ষু চড়কগাছ। ছেলে তার বন্ধুদের সঙ্গে অশ্লীল চ্যাটে সারাক্ষণ ব্যস্ত থাকে বলেই জানতে পারেন মা। তারপরই লজ্জায় বাড়ি ছাড়ল নবম শ্রেণির মেধাবী ছাত্র। তার খোঁজ না পাওয়ায় হতাশ ছাত্রের পরিজনেরা।
চুঁচুড়া আমড়াতলা এলাকার বাসিন্দা ওই ছাত্র। পূর্ত দপ্তরের কর্মী নির্মল দাস ও তাঁর স্ত্রী রুবির একমাত্র সন্তান সে। করোনাকালে স্কুলে অনলাইন ক্লাস হওয়ার দরুন এখন প্রত্যেক ছাত্রের হাতেই স্মার্টফোন। নবম শ্রেণির মেধাবী ছাত্রটিও তার ব্যতিক্রম নয়। দিনদুয়েক আগে এই ফোনেই মা রুবি দাস ছেলেকে তার এক বন্ধুর সঙ্গে প্রাপ্তবয়স্কদের মতো কথা বলতে শোনেন। কিছু অভব্য কথাবার্তাও তার কানে আসে। এদিকে, শুক্রবার সন্ধেয় ফের ছেলের এক সহপাঠী বন্ধু মোবাইলে চ্যাট করে। সে সময় রুবিদেবী ছেলের হয়ে সেই চ্যাটে সাড়া দেন। সহপাঠীও নানা ধরনের কথাবার্তা বলে।
[আরও পড়ুন: কেপমারকে ধরতে গিয়ে লুটেরাদের পাল্লায় জ্যোতিষী, খাস কলকাতায় খোয়ালেন সর্বস্ব]
মেধাবী ছাত্রটি বুঝতে পারে মা অশ্লীল চ্যাট পড়ে নিয়েছেন। সে সঙ্গে সঙ্গেই বন্ধুকে ফোন করে বিষয়টি জানায়। এরপরই ছেলের মোবাইল নিয়ে রুবিদেবী ছেলের সহপাঠীর বাড়ি যাচ্ছেন বলে বাড়ি থেকে বেরোন। সে সময় ওই ছাত্রের বাবা বাড়িতে ছিলেন না। চুঁচুড়ার কাপাসডাঙ্গা নেপাল চৌধুরী বাগানের বাসিন্দা ওই সহপাঠীর বাড়িতে গিয়ে তার মা-বাবাকে পুরো বিষয়টি জানান রুবি। কিন্তু বাড়ি ফিরে দেখেন ছেলে বাড়িতে নেই।
তারপর থেকেই নিখোঁজ ওই মেধাবী পড়ুয়া। বাড়ি থেকে সেই ছাত্রের ব্যবহৃত দু’টি পোশাক এবং ১৫০০টাকাও উধাও। ছেলের খোঁজ না মেলায় দিশাহারা বাবা-মা। সম্ভাব্য সমস্ত জায়গায় পাগলের মতো ছেলেকে খুঁজে বেরোচ্ছেন তাঁরা। এ বিষয়ে চুঁচুড়া থানায় একটি নিখোঁজ ডায়েরিও করেছেন ওই মেধাবী ছাত্রের বাবা। চুঁচুড়া থানার পুলিশ ওই ছাত্রের পরিচিতদের সঙ্গে কথা বলছে।