ধীমান রায়, কাটোয়া: ভোররাতে বোমা (Bomb) ফেটে উড়ল মাটির বাড়ির চাল, হুড়মুড়িয়ে ভেঙে পড়ল গোটা বাড়িটি। ধ্বংসস্তুপে চাপা পড়ে আহত হলেন বাড়ির তিন সদস্য। তাঁদের কোনওক্রমে উদ্ধার করে প্রতিবেশীরা ভরতি করান হাসপাতালে। প্রাথমিক চিকিৎসার পর দু’জনকে ছেড়ে দেওয়া হলেও এক মহিলা এখনও চিকিৎসাধীন। ঘটনা ঘিরে ভোরে তীব্র উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ল পূর্ব বর্ধমানের ভাতার (Bhatar) থানা এলাকার বাণেশ্বরপুর গ্রামে। পুলিশের প্রাথমিক অনুমান, ঘরের মধ্যেই বোমা মজুত করা ছিল। তা ফেটে এই দুর্ঘটনা। এলাকা ঘিরে রেখেছে পুলিশ। তদন্তের জন্য বম্ব স্কোয়াডের সাহায্য নেওয়া হতে পারে।
স্থানীয় সূত্রে খবর, ঘড়িতে রাত প্রায় পৌনে তিনটে। বাণেশ্বরপুর গ্রাম কেঁপে ওঠে বোমার শব্দে। ঘুম ভেঙে যায় সকলের। শব্দের উৎস খুঁজতে গিয়ে দেখা যায় জনৈক জামরুল মল্লিকের মাটির বাড়িটি ভেঙে গিয়েছে। তার নিচে চাপা পড়ে রয়েছেন বছর পঞ্চান্নর জামরুল মল্লিক, তাঁর স্ত্রী মারজেদা বিবি ও ছেলে লালচাঁদ। প্রতিবেশীরাই তাঁদের কোনওক্রমে ভেঙে পড়ার বাড়ির নিচ থেকে উদ্ধার করে ভাতার গ্রামীণ হাসপাতালে নিয়ে যান। প্রাথমিক চিকিৎসার পর জামরুল ও লালচাঁদকে ছেড়ে দেওয়া হয়। মারজেদা বিবির আঘাত বেশি থাকায় তিনি এখনও হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
[আরও পড়ুন: সর্ষের মধ্যেই ভূত! ১৮ কোটি টাকা জালিয়াতির অভিযোগে গ্রেপ্তার খোদ ব্যাংকের ম্যানেজার]
জানা গিয়েছে, জামরুল মল্লিক ও তাঁর ছেলে লালচাঁদ কেরলে নির্মাণ শ্রমিক হিসেবে কাজ করেন। সপ্তাহ তিনেক আগে তাঁরা ভাতারের বাণেশ্বরপুর গ্রামে ফিরেছেন। বৃহস্পতিবার রাতের দিকে পাশের গ্রাম কুলনগরের জনা কয়েক যুবকের সঙ্গে লালচাঁদ ও তাঁর বন্ধুদের বচসা হয়েছিল। তার জেরেই কি লালচাঁদ নিজের বাড়িতে বোমা মজুত করেছিল? নাকি এর পিছনে অন্য কোনও কারণ ছিল, তা তদন্তসাপেক্ষ। তবে ঘরে থাকা বোমা ফেটেই যে এই দুর্ঘটনা ঘটেছে, সে বিষয়ে প্রাথমিকভাবে নিশ্চিত তদন্তকারীরা।
[আরও পড়ুন: করোনা কালে ছাত্রছাত্রীদের জন্য খোলা আকাশের নিচে বিশেষ ক্লাস গৃহশিক্ষকদের]
ধ্বংসস্তূপে পরিণত হওয়া বাড়িটি ঘিরে রেখেছে পুলিশ। জামরুল ও লালচাঁদকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করা হয়েছে। পুলিশ সূত্রে আরও খবর, বছর দেড়েক আগে লালচাঁদকে অবৈধভাবে অস্ত্র রাখার অভিযোগে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। পরে ছেড়ে দেওয়া হয়। সে কেরলে বাবার কাছে গিয়ে কাজ শুরু করে। এবার বাড়িতে ফিরে ফের ঘরে বোমা মজুতের ঘটনায় সন্দেহের তির তাই তাঁর দিকেই।