সুমিত বিশ্বাস, পুরুলিয়া: প্রসব যন্ত্রণায় কাতরাচ্ছিলেন পরীক্ষার্থী। ওই অবস্থাতেই পরীক্ষাকেন্দ্রে উপস্থিত হন উচ্চমাধ্যমিক (Higher Secondary) পরীক্ষা দেওয়ার জন্য। কিন্তু পরীক্ষার্থীর এমন অবস্থা দেখে প্রথম দিনের উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার ব্যবস্থা করা হয়েছিল হাসপাতালে। প্রসব বেদনা সামলেই পরীক্ষা দিচ্ছিলেন তিনি। পরীক্ষার প্রায় শেষ যখন, ঠিক সেই মুহূর্তে কন্যাসন্তানের জন্ম দিলেন পরীক্ষার্থী। শনিবার পুরুলিয়ার (Purulia) বাঘমুন্ডিতে এই ঘটনায় ওই ছাত্রীর মনের জোরকে কুর্নিশ জানিয়েছেন সকলে।
বাঘমুন্ডি গার্লস হাই স্কুলের ওই ছাত্রীর নাম সরস্বতী মাহাতো। এখন পাথরডি ব্লক স্বাস্থ্য কেন্দ্রে চিকিৎসাধীন। তিনি ও তার সদ্যোজাত কন্যাসন্তান (Girl child) দু’জনেই সুস্থ আছে বলে হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে। ওই পরীক্ষা কেন্দ্রের ইনচার্জ তথা বাঘমুন্ডির অবর বিদ্যালয় পরিদর্শক অভিষেক পাল বলেন, ” ওই ছাত্রীর মনের জোরের প্রশংসা করতেই হয়। প্রসব যন্ত্রণার পরীক্ষা দিতে দিতে শেষ মুহূর্তে ওই ছাত্রী কন্যাসন্তানের জন্ম দেন।”
[আরও পড়ুন: মেলা থেকে জোর করে তুলে নিয়ে গিয়ে নাবালিকাকে গণধর্ষণ! ফের নৃশংস ঘটনার সাক্ষী মালদহ]
এবছর পরীক্ষার নিয়ম অনুযায়ী, সরস্বতী মাহাতোর পরীক্ষাকেন্দ্র ছিল তার নিজের স্কুলেই। এদিন স্বামীর সঙ্গে পরীক্ষাকেন্দ্রে এসেছিলেন তিনি। স্কুলের গেটে ঢোকার মুখে ওই ছাত্রীকে দেখে পরীক্ষাকেন্দ্র কর্তৃপক্ষ তাকে সঙ্গে সঙ্গে বাঘমুন্ডির পাথরডি ব্লক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে যাওয়ার ব্যবস্থা করে। সেখানেই সরস্বতী পরীক্ষা দেবেন বলে কর্তৃপক্ষকে জানায়। স্বাস্থ্যকেন্দ্রের একটি ঘরে তাঁর পরীক্ষা দেওয়ার ব্যবস্থা হয়। প্রসব যন্ত্রণার (Labour pain) মধ্যেই পরীক্ষা দিতে দিতে একেবারে শেষ মুহূর্তে তিনি কন্যাসন্তানের জন্ম দেন। সদ্য মা হওয়া সরস্বতী বলেন, “পরীক্ষা ভাল হয়েছে। এই দিনটার কথা কোনওদিনও ভুলব না।” এই খবর শুনে অনেকেই বলছেন, সরস্বতী যার নাম, তিনি তো এমন অসাধ্য সাধন করবেনই।