সোমনাথ রায়, নয়াদিল্লি: সংসদের বাজেট অধিবেশনে সেভাবে তাঁকে দেখা যায়নি। প্রধানমন্ত্রীর ভাষণের দিনও অনুপস্থিত ছিলেন। কিন্তু বৃহস্পতিবার অধিবেশনে যোগ দিয়েই রীতিমতো বিস্ফোরণ ঘটালেন প্রাক্তন কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গান্ধী। ঘোষণা করে দিলেন, বর্তমান কেন্দ্রীয় সরকার চালাচ্ছেন চারজন। কেন্দ্রকে তোপ দাগতে ব্যবহার করলেন পরিবার নিয়ন্ত্রণে ব্যবহৃত হওয়া পুরনো স্লোগান। রাহুলের (Rahul Gandhi) কথায়, “আগে পরিবার নিয়ন্ত্রণের একটা স্লোগান ছিল, ‘হাম দো, হামারে দো।’ করোনা যেভাবে অন্য রূপে এসেছে। এই স্লোগানও অন্য রূপে এসেছে। এখন এই দেশ চালাচ্ছেন চারজন, হাম দো, হামারে দো। এই চারজনের নাম সকলেই জানেন। সবাই জানে এটা কার সরকার।” রাহুল কারও নাম না নিলেও রাজনৈতিক মহলের ধারণা, তিনি মোদি (Narendra Modi), শাহ (Amit Shah) এবং দুই শিল্পপতি মুকেশ আম্বানি এবং গৌতম আদানির কথা বলতে চেয়েছেন।
কৃষক আন্দোলন ইস্যুতে বলার আগেই অবশ্য রীতিমতো চমক দিয়েছেন প্রাক্তন কংগ্রেস (Congress) সভাপতি। দিল্লির কৃষক বিক্ষোভে (Farmers Protest) মৃত ‘২০০ জন’ কৃষককে শহিদ আখ্যা দিয়ে তাঁদের স্মরণে দু’মিনিটের নীরবতা পালন করেন তিনি। রাহুলের পাশাপাশি কংগ্রেসের অন্য সাংসদরাও উঠে দাঁড়িয়ে মিনিট দুয়েকের নীরবতা পালন করেন। তাৎপর্যপূর্ণভাবে রাহুলের সঙ্গে যোগ দেন ডিএমকে (DMK) এবং তৃণমূলের সাংসদরাও (TMC)। গতকাল প্রধানমন্ত্রী সংসদে নিজের ভাষণে দাবি করেছিলেন, কংগ্রেস কৃষি আইন বিরোধী বিক্ষোভের কারণ এবং উদ্দেশ্য নিয়ে কোনও আলোচনা করছে না। কথা বলছে শুধু আন্দোলনের ধরন নিয়ে। এদিন রাহুল প্রধানমন্ত্রীর ‘ইচ্ছে’ পুরণ করতেই এই আন্দোলনের কারণ বর্ণনা করলেন কংগ্রেস নেতা।
[আরও পড়ুন: ‘আত্মনির্ভর হওয়ার স্বপ্ন দেখিয়েছিলেন’, দীনদয়াল উপাধ্যায়ের পুণ্যতিথিতে শ্রদ্ধাঞ্জলি মোদির]
রাহুলের দাবি, “এই তিন কৃষি আইনের (Farm Laws) প্রথমটির লক্ষ্য আসলে প্রধানমন্ত্রীর একজন বন্ধুর হাতে গোটা দেশের সব ফসলের মালিকানা তুলে দেওয়া। যা আমাদের দেশের ঠেলাওয়ালা, ছোট দোকানদার, এবং মাণ্ডি কর্মীদের ভবিষ্যৎ শেষ করে দেবে। দ্বিতীয় আইনের উদ্দেশ্য, দ্বিতীয় বন্ধুকে সাহায্য করা। যিনি কিনা ভারতের মোট ফসলের ৪০ শতাংশ গুদামজাত করে রাখবেন। যাতে ওঁরা ইচ্ছামতো অত্যাবশ্যকীয় পণ্যের দাম বাড়াতে পারে। আর তৃতীয় আইনের লক্ষ্য হল, ফসলের উপযুক্ত দাম চেয়ে কৃষকরা যাতে আদালতে যেতে না পারে, সেটা নিশ্চিত করা। রাহুলের দাবি, এই তিন আইনের ফলে দেশ তিনটি মাত্র বিকল্প পেয়েছে। ক্ষুধা, বেকারত্ব এবং আত্নহত্যা।”