ধীমান রায়, কাটোয়া: পুজোমণ্ডপে পাড়ার ছেলেদের সঙ্গে নাচানাচি করেছিলেন স্বামী। আর সবার সামনে নাচ পছন্দ হয়নি স্ত্রীর। তা নিয়ে অশান্তি থেকে গায়ে আগুন লাগিয়ে আত্মঘাতী এক বধূ। পূর্ব বর্ধমানের কাটোয়ার ২০ নম্বর ওয়ার্ডের পানুহাট দাসপাড়ার ঘটনা।
পুলিশ জানায় মৃত বধূর নাম চিন্তা দাস (২৭)। গত মঙ্গলবার নবমীর রাতে বাড়িতেই নিজের গায়ে আগুন লাগান চিন্তা। তাঁকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় কাটোয়া মহকুমা হাসপাতালে ভরতি করা হয়। বুধবার চিকিৎসারত অবস্থায় তাঁর মৃত্যু হয়। পুলিশ জানিয়েছে, এ নিয়ে নির্দিষ্ট কোনও অভিযোগ দায়ের হয়নি। একটি অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা দায়ের করে ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।
[আরও পড়ুন: প্রশাসনিক গাফিলতিতেই বিপদ? মাল নদীতে হড়পা বানে প্রাণহানির ঘটনায় প্রশ্নের ভিড়]
পানুহাট দাসপাড়া এলাকার বাসিন্দা মিঠুন দাস এক ডেকরেটার্সের ব্যবসায়ীর কাছে প্যাণ্ডেল মিস্ত্রির কাজ করেন। তাঁর স্ত্রী চিন্তার বাপেরবাড়ি কেতুগ্রামের গঙ্গাটিকুরি গ্রামে। আট বছর আগে তাঁদের বিয়ে হয়। দু’টি কন্যাসন্তানও রয়েছে দম্পতির। মিঠুনের দাদা উত্তম দাস জানান, তাঁদের পাড়াতেই বারোয়ারি দুর্গাপুজো হয়। নবমীর রাতে মেয়েদের নিয়ে চিন্তা পুজোমণ্ডপে ছিলেন। তার আগে থেকেই পাড়ার বন্ধুবান্ধবদের সঙ্গে ছিলেন মিঠুন। মাইকে গান বাজছিল। পাড়ার কয়েকজন যুবক নাচানাচি করছিলেন। তাঁদের সঙ্গেই নাচানাচি করেছিলেন মিঠুন। কিন্তু পাড়ার মধ্যে ওভাবে নাচানাচি পছন্দ হয়নি মিঠুনের স্ত্রী চিন্তার। রাতে বাড়ি ফেরার পর তা নিয়ে দু’জনের মধ্যে অশান্তি হয়।
মঙ্গলবার রাতে স্বামী-স্ত্রী অশান্তি হয়। সবাই ঘুমিয়ে পড়েন। এরপর মাঝরাতে ঝগড়াঝাটি আওয়াজ কানে পৌঁছয়। তাতেই ঘুম ভাঙে মিঠুনের। তিনি দেখেন স্ত্রীর শরীর দাউদাউ করে জ্বলছে। মিঠুন চিৎকার করে লোকজন ডাকেন। নেভানোর চেষ্টাও করেন। পরিবারের লোকজন ও প্রতিবেশীরা ঘটনাস্থলে গিয়ে আগুন নেভান। আগুনে অল্পবিস্তর পুড়ে জখম হন মিঠুনও। কাটোয়া হাসপাতালে চিন্তাকে নিয়ে যাওয়া হলে বুধবার মৃত্যু হয় তাঁর। মৃতার বাবা গণেশ দাস ও মা সবিতা বৃহস্পতিবার কাটোয়া হাসপাতালে যান। দেহটি ময়নাতদন্তে পাঠানো হয়েছে।