তারক চক্রবর্তী, শিলিগুড়ি: বেডরুমে উদ্ধার স্বামী-স্ত্রীর নিথর দেহ। পাশে পড়ে পোড়া কাঠকয়লা। ঘটনায় তীব্র চাঞ্চল্য ছড়াল শিলিগুড়ির সুভাষপল্লি এলাকায়। মৃতদের নাম উজ্জ্বল সিনহা এবং দীপালি সরকার।
স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, শ্বশুরবাড়িতেই থাকতেন তিরিশ বছরের উজ্জ্বল। তাঁর দীপালি ওরফে পূজার বয়স ২৮। শাশুড়ি শিপ্রা সরকার থাকতেন দোতলার ঘরে। শারীরিক অসস্থতার জন্য নিচে খুব একটা আসেন না। মঙ্গলবার সকাল সাড়ে দশটা বেজে গেলেও মেয়ে-জামাই উঠছে না দেখে তিনি চিন্তিত হয়ে পড়েন। পরিচিতদের খবর দেন। আরেক মেয়েকেও বলেন। তাঁরাও এসে বিস্তর ডাকাডাকি করেন। কিন্তু উজ্জ্বল ও দীপালির কোনও সাড়া পাওয়া যায় না।
[আরও পড়ুন: ২৪ ঘণ্টা পার, বরানগর হাসপাতালের হস্টেলে ছাত্রের রহস্যমৃত্যুতে জারি বিক্ষোভ, ভোগান্তিতে রোগীরা]
শেষে এলাকার কাঠের মিস্ত্রিকে খবর দেওয়া হয়। তিনি এসে দরজা খুলে দেন। ভেতরের দৃশ্য দেখেই চমকে ওঠেন সকলে। খাটে পড়েছিল উজ্জ্বলের দেহ। আর মেঝেতে দীপালি। বিপদের আঁচ পেয়ে কোনওমতে নিচে নেমে আসেন শিপ্রাদেবী। দেখেন মেয়ে-জামাই দু’জনেরই শরীর ঠান্ডা। হৃৎপিণ্ডে কোনও স্পন্দন নেই।
ঘটনায় তীব্র চাঞ্চল্য ছড়ায় এলাকায়। খবর দেওয়া হয় পুলিশে। পুলিশ এসে জোড়া মৃতদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠায়। মৃতদের শরীরে কোনও আঘাতের চিহ্ন ছিল কিনা তা এখনও পর্যন্ত জানা যায়নি। তবে ঘরের পাশে পোড়া কাঠকয়লা উদ্ধার হয়েছে। বেডরুমে কেন এভাবে পোড়া কাঠকয়লা রাখা তা জানার চেষ্টা করা হচ্ছে। মেয়ে-জামাইয়ের মৃত্যুতে শোকবিহ্বল শিপ্রা সরকার। জানান, টিউশনি করে রোজগার করতেন উজ্জ্বল। দীপালি ভাল আঁকতেন। আঁকা শেখানোর পাশাপাশি বিভিন্ন এগজিবিশনেও পাঠাতেন। লকডাউনে তাঁদের রোজগারেও কোপ পড়েছিল। তবে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে খুবই মিল ছিল বলে জানান শিপ্রাদেবী। কীভাবে, কেন এমন ঘটনা ঘটল, তা বুঝে উঠতে পারছেন না বৃদ্ধা। ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।