shono
Advertisement

শ্যামপুরে নিহতকে দলীয় কর্মী বলে দাবি বিজেপির, রাজনীতি চাইছেন না মৃতের স্ত্রী

মেয়ের সম্ভ্রম রক্ষা করতে গিয়ে বাবার মৃত্যুর ঘটনায় গ্রেপ্তার ৩।
Posted: 07:34 PM Jan 25, 2023Updated: 07:39 PM Jan 25, 2023

মনিরুল ইসলাম, উলুবেড়িয়া: শ্যামপুরে মেয়ের সম্ভ্রম রক্ষা করতে গিয়ে দুষ্কৃতীদের মারে বাবার মৃত্যুর ঘটনা নিয়ে রাজনীতি চান না নিহতের স্ত্রী। হাওড়া গ্রামীণ বিজেপি নেতৃত্বকে সাফ জানান, “আমি কোনও রাজনীতি চাই না। আপনাদের যদি ইচ্ছা হয় আমাদের পাশে থাকতে পারেন।” এই ঘটনায় তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এদিকে, এখনও থমথমে গোটা এলাকা।

Advertisement

বুধবার বিজেপির হাওড়া গ্রামীণ জেলা কমিটির পক্ষ থেকে মৃতের পরিবারের সঙ্গেও দেখা করা হয়। মৃতকে তাদের সদস্য বলে দাবি করে বিজেপি নেতৃত্ব। মৃতের স্ত্রীর পাশে থাকার কথাও জানায়। যদিও এ ব্যাপারে মৃতের স্ত্রীর স্পষ্ট বক্তব্য, তিনি কোনও রাজনীতি চান না। এবং তাঁর স্বামী বিজেপি কর্মী হওয়ার কথাও কার্যত অস্বীকার করেন। মৃতের স্ত্রী বলেন, “আমি কোনও রাজনীতি চাই না। আপনাদের যদি ইচ্ছা হয় আমাদের পাশে থাকতে পারেন।”

বিকেলে বিজেপির গ্রামীণ এলাকার পক্ষ থেকে শ্যামপুর মোড় থেকে শ্যামপুর থানা পর্যন্ত বিক্ষোভ মিছিল করা হয়। সেখানে শ্যামপুর থানার ওসিকে বদলের দাবি তোলা হয়। থানার সামনে বসে পড়ে অবস্থান বিক্ষোভ দেখান কর্মী-সমর্থকরা। পরে কয়েকজন সদস্য ওসির কাছে স্মারকলিপি জমা দেন। এদিকে হঠাৎই বিজেপি কর্মী সমর্থকরা খেপে গিয়ে থানায় ঢোকার মুখের ব্যারিকেড ভাঙার চেষ্টা করে। পুলিশের সঙ্গে ধস্তাধস্তি হয়। পুলিশকে লক্ষ্য করে জুতো ছোঁড়েন বিক্ষোভকারীরা। যদিও পুলিশ সংযতভাবেই সেই বিক্ষোভ নিয়ন্ত্রণ করে।

[আরও পড়ুন: মোদিকে নিয়ে BBC’র তথ্যচিত্র দেখানো হবে প্রেসিডেন্সিতেও, আবেদন SFI-আইসির]

এই ঘটনায় এখনও পর্যন্ত তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। মঙ্গলবার অভিযুক্ত কিল্টন বাগকে গ্রেপ্তার করা হয়। ওই রাতে আরও এক অভিযুক্ত শান্তনু হাপরকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। বুধবার সকালে তৃতীয় অভিযুক্ত টিটন বাগকে গ্রেপ্তার করে শ্যামপুর থানার পুলিশ। পুলিশ তাদের বিরুদ্ধে খুন, চক্রান্ত-সহ পকসো ধারায় মামলা রুজু করে। মৃতের পরিবারের এফআইআরে কিল্টন এবং টিটনের নাম থাকলেও শান্তনুর নাম ছিল না। কিন্তু পুলিশ তদন্তে শান্তনুর নামও জানতে পারে। তাকেও গ্রেপ্তার করে। জানা গিয়েছে কিল্টন ও লিটন দুই ভাই এবং শান্তনু কিল্টনের সম্পর্কে শ্যালক হয়।

বুধবার হাওড়া গ্রামীণ এলাকার পুলিশ সুপার স্বাতী ভাঙালিয়া গোবিন্দপুর এলাকায় আসেন। শ্যামপুর বাগনান রোড থেকে উত্তর দিকে ঢালাই রাস্তা নেমে গিয়েছে বুড়িতলা স্টপেজ থেকে। সেই রাস্তা থেকে কয়েক কিলোমিটার গেলেই মৃত ও নির্যাতিতার বাড়ি। আর শ্লীলতাহানি এবং নির্যাতিতার বাবাকে খুনের ঘটনাটি ঘটেছে গোবিন্দপুরের খিদিরপুর এলাকায়। স্বাতী ভাঙ্গালিয়া সংশ্লিষ্ট ঘটনাস্থলের কাছে পরিদর্শন করেন। পুলিশ সুপার স্বাতী ভাঙ্গালিয়া বলেন, “আমরা এই ঘটনায় অভিযুক্ত তিনজনকেই গ্রেপ্তার করেছি। তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।”

স্থানীয়দের বক্তব্য, ওই এলাকায় রমরমিয়ে মদের ব্যবসা চলে। তার মূল পাণ্ডা শান্তনু। চোলাই মদের কার্যত বেআইনি ডিলারশিপ রয়েছে তার। ওই এলাকা এবং শ্যামপুরের বিভিন্ন এলাকায় শান্তনুই চোলাই সরবরাহ করে। তার সহযোগী জামাইবাবু কিল্টন এবং ভাই টিটন বাগ। শান্তনুদের চোলাইয়ের পারিবারিক ব্যবসা। তার দাদু এই ব্যবসা করত।

পরবর্তীকালে তার বাবাও এই ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। পরে স্থানীয় বাসিন্দাদের চাপে তার বাবা ব্যবসা বন্ধ করে দেয়। বছর ১৫ আগে থেকে চোলাইয়ের ব্যবসায় হাতেখড়ি হয় শান্তনুর। কিন্তু স্থানীয়দের চাপে তা বন্ধ হয়ে যায়। বর্তমানে শান্তনু উলুবেড়িয়ার বিভিন্ন জায়গা থেকে চোলাই নিয়ে এসে শ্যামপুরের বিভিন্ন এলাকায় সরবরাহ করে। স্থানীয় এক মহিলার দাবি, দোকানের সামনে গুটখা, চা, চিপসের প্যাকেট দোকানের মতো সাজিয়ে রেখে তার আড়ালে চোলাইয়ের ব্যবসা চলছে এলাকায়। পুলিশ সব জেনেশুনেও চুপ। এ ব্যাপারে হাওড়ার গ্রামীণ এলাকার পুলিশ সুপার স্বাতী ভাঙ্গালিয়া বলেন, “আমরা বিভিন্ন সময় এলাকায় অভিযান চালাই। তারপরেও কেউ কোথাও ছোটখাট ব্যবসা চালাচ্ছে খবর পেয়েছি। আমরা আরও অভিযান বাড়াবো।”

[আরও পড়ুন: বাসিন্দাদের অ্যাকাউন্টে বিপুল লেনদেন, জানেনই না গ্রামবাসীরা, সিউড়িতে CBI হানায় মিলল তথ্য]

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement
toolbarHome ই পেপার toolbarup ছাঁদনাতলা toolbarvideo শোনো toolbarshorts রোববার