রূপায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়: নাগরিকত্ব আইন লাগু নিয়ে প্রকাশ্যে মন্তব্য করতেই বিজেপি সাংসদ শান্তনু ঠাকুরের রাজনৈতিক অবস্থান নিয়ে আলোচনা শুরু হয়েছিল। তৃণমূলের তরফে তাঁকে দলে আহ্বানও জানানো হয়। এই পরিস্থিতিতে নিজের রাজনৈতিক অবস্থান স্পষ্ট করলেন বনগাঁর সাংসদ। সাফ জানালেন, সিএএ (CAA) বিরোধীদের সঙ্গে হাত মেলানোর কোনও প্রশ্নই নেই।
মতুয়াদের নাগরিকত্ব প্রদানের বিষয়ে যথেষ্ট উদগ্রীব বিজেপি সাংসদ তথা মতুয়া মহাসংঘের সংঘাধিপতি শান্তনু ঠাকুর (Shantanu Thakur)। তাই দ্রুত নাগরিকত্ব আইন কার্যকর করতে চেয়ে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহকে চিঠি লিখেছিলেন তিনি। এই ইস্যুতে দলের সঙ্গে তাঁর সাময়িক দূরত্বও তৈরি হয়েছিল। পরে বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতা কৈলাস বিজয়বর্গীয় বনগাঁর ঠাকুরবাড়িতে গিয়ে মানভঞ্জন করেন তাঁর। এসবের মাঝে বঙ্গ সফরে এসে অমিত শাহ জানান, করোনা পরিস্থিতির উন্নতি হলে, ভ্যাকসিন আসার পরই সিএএ কার্যকর করা হবে। এরপরই গত সপ্তাহে একটি সভা থেকে কেন্দ্রকে খোঁচা দিয়ে শান্তনু বলেছিলেন, “২০১৯ সালে আইন হলেও তা কার্যকর করতে এত ভয় কীসের? বিরোধিতার ভয়ে পিছিয়ে যাচ্ছে। দাঙ্গার ভয়ে পিছিয়ে যাচ্ছে। কেউ দাঙ্গা করলে সেটা আমরা বুঝে নেব।” এরপরই জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক শান্তনুকে উদ্দেশ করে বলেছিলেন, বিজেপিতে থেকে মতুয়াদের উন্নতি করা সম্ভব নয়। এক মঞ্চে দাঁড়িয়ে লড়াইয়ের আহ্বানও জানিয়েছিলেন। এসব কারণেই শান্তনুকে নিয়ে জোর জল্পনা শুরু হয়েছিল। সোমবার রাতে বাইপাসের ধারের একটি হোটেলে বনগাঁর সাংসদকে ডেকে পাঠিয়েছিলেন দিলীপ ঘোষ (Dilip Ghosh)। অভিযোগ শোনার পাশাপাশি শান্তনুকে সর্তক করে সংবাদমাধ্যমে অবস্থান স্পষ্ট করার নির্দেশও দিয়েছিলেন তিনি।
[আরও পড়ুন:২ সদ্যোজাতের শরীরে মিলল করোনার অ্যান্টিবডি! গর্ভাবস্থাতেই সংক্রমণের আশঙ্কা]
এরপর বুধবারই সাংবাদিক বৈঠক করলেন শান্তনু ঠাকুর। তাঁর সঙ্গে ছিলেন বিজেপি নেতা মুকুল রায়। এদিন বনগাঁর সাংসদ স্পষ্টভাবে বলেন, “বিজেপি সরকার সিএএ এনেছে। তাঁরাই তা কার্যকর করবে। আমি সাংসদ হিসেবে, মতুয়াদের সদস্য হিসেবে কবে এই আইন বলবৎ হবে, কেবল তা জানতে চেয়েছি। আর আমার তৃণমূলে যাওয়ার কোনও প্রশ্নই ওঠে না। কারণ তৃণমূল সিএএ’র বিপক্ষে।” এদিন নাগরিত্ব আইনের পক্ষে সুর চড়ানোর পাশাপাশি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সরকারকে আক্রমণ করেন মুকুল রায়। বলেন, “মতুয়াদের নিয়ে রাজনীতি করছেন মুখ্যমন্ত্রী। সিএএ লাগু করে কেন্দ্র তাঁদের নাগরিকত্ব দিতে চাইছে, এবিষয়ে মমতার আচরণ অত্যন্ত দুর্ভাগ্যের।” এদিন মুকুল রায় জানিয়েছেন, তাঁদের তরফে মতুয়া ডেভলপমেন্ট বোর্ড তৈরির চিন্তাভাবনা চলছে। পাশাপাশি ঠাকুরনগর স্টেশন সংস্কারের জন্য কথা বলা হচ্ছে রেলমন্ত্রীর সঙ্গে।