সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: স্বাধীনতার দাবিতে উত্তাল পাক অধিকৃত কাশ্মীর (PoK)।ইসলামাবাদের শাসনের বিরুদ্ধে গর্জে উঠেছে সাধারণ মানুষ। ‘কাশ্মীর বনেগা হিন্দুস্তান’ স্লোগানও দিয়েছেন কাশ্মীরের বাসিন্দারা। শুধু তাই নয়, পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানকেও বিক্ষোভের মুখে পড়তে হয়েছে। এহেন পরিস্থিতিতে PoK-তে ‘গণভোট’ করার কথা বললেন ইমরান।
জার্মান সংবাদমাধ্যম ডয়চে ভেলে-কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ইমরান বলেন, “আজাদ কাশ্মীরের মানুষ পাকিস্তানের সঙ্গে থাকতে চান নাকি স্বাধীনতা চান, তা তারাই স্থির করুক।” তিনি আরও বলেন, “আজাদ কাশ্মীরে অবাধ এবং শান্তিপূর্ণ নির্বাচন হয়। স্থানীয় বাসিন্দারাই নিজেদের সরকারকে নির্বাচিত করেন। প্রয়োজনে আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষকদের PoK সফরের জন্য আমার দেশের সরকার প্রস্তুত।” এদিকে, ইমরান খান মুখে যায় বলুন না কেন, তাতে চিড়ে ভিজছে না। ইমরণকে সরাসরি ‘মিথ্যাবাদী’ বলেছেন বেশ কয়েকজন কাশ্মীরি নেতা। দুনিয়াকে বিভ্রান্ত করতেই এহেন মন্তব্য পেশ করেছেন পাক প্রধানমন্ত্রী বলে অভিযোগ PoK-র রাজনীতিবিদদের।
উল্লেখ্য, পাক অধিকৃত কাশ্মীরের সংবিধান অনুসারে স্থানীয় নির্বাচনে অংশ নিতে হলে বাধ্যতামূলকভাবে পাক অন্তর্ভুক্তিকে সমর্থন করতে হয়। শুধু তাই নয়, ‘পাকিস্তানের প্রতি আনুগত্যের’ শপথও নিতে হয় বাসিন্দাদের। আর স্বাধীনতার দাবি জানালে চূড়ান্ত রাষ্ট্রীয় দমনপীড়নের মধ্যে পড়তে হয় পাক অধিকৃত কাশ্মীরের বাসিন্দাদের। যে কারণে পাক দখলদারির বিরুদ্ধে PoK-র বাসিন্দারা প্রবল ক্ষুব্ধ।
[আরও পড়ুন: ইয়েমেনের সেনা প্রশিক্ষণ ক্যাম্পে জঙ্গি হামলা, মৃত কমপক্ষে ৬০]
১৯৪৯ সালের ২৮ এপ্রিল পাকিস্তান সরকার ও আজাদ কাশ্মীরের সরকারের মধ্যে করাচি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। এটি সম্পূর্ণভাবে পাকিস্তানের সপক্ষে ছিল। পাক অধিকৃত কাশ্মীরের মানুষের ক্ষমতা ও দায়িত্ব অনেকাংশে ক্ষুণ্ণ করা হয়েছিল। ব্রাসেলসের ইউনাইটেড কাশ্মীর পিপলস ন্যাশনাল পার্টির (UKPNP) জামি মাকসুদ বলেছেন, চুক্তি পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে পড়ার পর তাঁরা জানতে পারেন এলাকার প্রশাসনিক দায়িত্ব নিয়েছে পাকিস্তান। কিন্তু উন্নয়নের কোনও দায়িত্বই তারা নেয়নি। এলাকার উন্নয়নের জন্য একটি পয়েন্টও চুক্তিতে নেই।
করাচি চুক্তির মতে, পাক অধিকৃত কাশ্মীরে কোনও ভাগ বাঁটোয়ারা ছাড়াই পাকিস্তানের সরকার চলবে বলে জানানো হয়েছিল। তখন থেকেই PoK ও গিলগিট বালটিস্তানের মানুষের সঙ্গে অমানবিক ব্যবহার করতে থাকে পাক প্রশাসন। যখন এলাকার দায়িত্ব নেয় তারা, তখন তার পরিবর্তে এলাকার মানুষকে তাদের মৌলিক, রাজনৈতিক, সামাজিক, গণতান্ত্রিক ও জাতীয় অধিকার দেওয়ার কথা হয়েছিল। এলাকাটিকে তারা দেশের উত্তরাংশের অন্তর্ভূক্ত করে। কিন্তু বাস্তব তখন থেকেই আলাদা। পাক অধিকৃত কাশ্মীর ও গিলগিট বালটিস্তানের মানুষ এখন এই চুক্তি সম্পূর্ণ বাতিল করার দাবি জানাচ্ছে। সেই সঙ্গে তারা সমস্ত অধিকার ফেরতেরও দাবি জানাচ্ছে।
The post স্বাধীনতার দাবিতে উত্তাল পাক অধিকৃত কাশ্মীর, গণভোটে ‘রাজি’ ইমরান appeared first on Sangbad Pratidin.