রমণী বিশ্বাস, তেহট্ট: রাজ্যজুড়ে নানা স্তরের নির্বাচনে ঘাসফুলের দাপটের মাঝেও অক্ষত তেহট্টের (Tehatta) বাম দুর্গ। তেহট্ট সমবায় সমিতির নির্বাচনে ফের বড় ব্যবধানে জিতল সিপিএম। সমবায় সমিতির দখল রাখল লাল পার্টি। রবিবার ভোটের ফলাফল বেরতেই উচ্ছ্বসিত বাম শিবির। সন্ধেবেলাতেই কাস্তে-হাতুড়ি-তারা হাতে বিজয় মিছিল করেন নেতা, কর্মীরা। ১৯৬৬ সাল থেকে থেকেই তেহট্টের সমবায় সমিতি বামেদের (Left Front) দখলে। ‘শূন্য’ ভোটবাক্সেও সেই ধারা অব্যাহত।
নদিয়ার (Nadia) তেহট্টের কৃষি সমবায় উন্নয়ন সমিতির মোট আসন সংখ্যা ৬৯। সিপিএম ও তৃণমূল সব কটি আসনেই প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে। রবিবার ফল প্রকাশিত হলে দেখা যায়, ৫০ টি আসনে জিতেছে সিপিএম ও বাম সমর্থিত প্রার্থীরা। ১৯ টি আসন জিতেছে তৃণমূল (TMC)। একেবারে নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতায় সমবায় সমিতি ফের দখল করে বামপন্থীরা। সিপিএমের তেহট্ট দক্ষিণ এরিয়া কমিটির এক সদস্য জানান, এর আগে তৃণমূল ও বিজেপি হাতে হাত মিলিয়ে বামেদের ধরাশায়ী করার চেষ্টা করেছিল। কিন্তু সেই চেষ্টা ব্যর্থ করে সিপিএমকে (CPM)জিতিয়েছেন তেহট্টের সাধারণ মানুষজন। রাজ্যজুড়ে চলতে থাকা দুর্নীতিতে যেভাবে নাম জড়াচ্ছে শাসকদলের নেতাদের, তার বিরুদ্ধে এই জয় বড় জবাব বলে মনে করছেন তিনি।
[আরও পড়ুন: ‘তৃণমূলে নবজোয়ার’ কর্মসূচির মাঝে মালদহ সফরে মমতা, রয়েছে ঠাসা কর্মসূচি]
অন্যদিকে, এলাকায় তৃণমূলের অঞ্চল সভাপতি সুব্রত বিশ্বাসের দাবি, তাঁরা ২০ টি আসনে জিতেছেন। আগের নির্বাচনে এই সংখ্যা ছিল মাত্র ২। সেদিক থেকে তৃণমূলের নৈতিক জয় হয়েছে বলেই দাবি সুব্রতবাবুর। তেহট্ট সমবায় সমিতিতে হারের পিছনে কি এলাকায় বিধায়ক তাপস সাহার নাম নিয়োগ দুর্নীতিতে জড়িয়ে পড়ার কোনও যোগ রয়েছে? তার উত্তরে সুব্রতবাবু জানাচ্ছেন, মোটেই তা নয়। বরং সিপিএম-বিজেপি হাত মিলিয়েই তৃণমূলকে হারিয়েছে। এর প্রভাব আসন্ন পঞ্চায়েত ভোটে পড়বে না বলে আত্মবিশ্বাসী তৃণমূলের অঞ্চল সভাপতি।
[আরও পড়ুন: নিয়োগ কাণ্ডে নতুন রহস্যময়ী! অয়ন শীল ঘনিষ্ঠ ‘লীলা’র সন্ধান শুরু করল ইডি]
১৯৬৬ সাল থেকে তেহট্টের এই সমবায় সমিতি রয়েছে বামেদের দখলেই। ২০১১ সালে রাজ্যে পালাবদলের পরও তাতে ভাঁটা পড়েনি। কার্যত নজির গড়েই জয়ের ধারা অব্যাহত রেখেছে লাল পার্টি। গত ১২ ফেব্রুয়ারি এখানে ভোট হওয়ার কথা থাকলে পুলিশ পর্যাপ্ত নিরাপত্তা দিতে পারবে না বলে জানানোয় ভোট বাতিল হয়। পরে ফের হাই কোর্টের দ্বারস্থ হয়ে নির্বাচনের অনুমতি আদায় করে সিপিএম। শেষপর্যন্ত রবিবার ভোট হল।