সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: আসন্ন বাদল অধিবেশনে (Monsson Session) সংসদ চত্বরে কোনওরকম বিক্ষোভ, ধরনা বা অনশন করা যাবে না। নতুন এই ফরমান জারি হয়েছে শুক্রবারই। এই পরিস্থিতিতে কেন্দ্রকে খোঁচা মেরে প্রাক্তন কংগ্রেস নেতা কপিল সিব্বল দাবি করলেন, দেশে গণতন্ত্র কার্যত প্রহসনে পরিণত হয়েছে। তাঁর মতে, দেশ যুক্তরাষ্ট্রীয় পরিকাঠামো থেকে দমনমূলক একনায়কতন্ত্রের দিকে চলেছে।
আধুনিক যুক্তরাষ্ট্রীয় পরিকাঠামো নিয়ে একটি আলোচনাসভায় অংশ নিয়েছিলেন এই মুহূর্তে রাজ্যসভার নির্দল সাংসদ কপিল। সেখানেই বর্ষীয়ান নেতাকে মোদি সরকারকে কাঠগড়ায় তুলতে দেখা গিয়েছে। তিনি বলেন, ”বিজেপি শাসিত ভারত ক্রমেই যুক্তরাষ্ট্রীয় পরিকাঠামো থেকে সরে যাচ্ছে দমনমূলক একনায়কতন্ত্রের দিকে। রাজ্যপাল ও বিভিন্ন কেন্দ্রীয় সংস্থাগুলি সরকারেরই দীর্ঘতর এক বাহুতে পরিণত হচ্ছে। একদিন এমন আসবে, যেদিন কেবল সংসদ নয়, সারা দেশেই প্রতিবাদ প্রদর্শন করা যাবে না।”
[আরও পড়ুন: বিলাসবহুল বাড়ির অন্দরে রমরমা মাদক কারবার, কাটোয়ায় STF-এর জালে প্রাক্তন নৌসেনা কর্মী]
কপিলের মতে, বিজেপির আমলে কেন্দ্র-রাজ্য সম্পর্কের চূড়ান্ত অবনতি হয়েছে। কেন্দ্র সমস্ত সিদ্ধান্ত চাপিয়ে দিচ্ছে রাজ্যগুলির দিকে। কংগ্রেসমুক্ত ভারত নয়, বিরোধীশূন্য দেশ চাইছে ভারত। মহারাষ্ট্র, কর্ণাটক, মধ্যপ্রদেশের উদাহরণ দেন তিনি।
শুক্রবার রাজ্যসভার সচিব পি সি মুদি এক বিজ্ঞপ্তিতে সাংসদদের জানিয়েছেন, কোনও সদস্য আর সংসদ চত্বরে ধরনা, প্রতিবাদ, বিক্ষোভ, অনশন বা কোনওরকম ধর্মীয় আচার পালন করতে পারবেন না। এক্ষেত্রে সব সদস্যের সহযোগিতা কামনা করা হচ্ছে। এরপর থেকেই এই নির্দেশকে ঘিরে বিতর্ক শুরু হয়েছে। বর্ষীয়ান কংগ্রেস (Congress) নেতা জয়রাম রমেশ টুইট করে বলেছেন, এটা বিশ্বগুরুর (পড়ুন মোদির) নতুন ফরমান। ডরনা (ধরনা) মানা হ্যায়…। প্রতিবাদে সরব হয়েছেন অন্য কংগ্রেস নেতারাও। এবার প্রতিবাদে শামিল হতে দেখা গেল হাত শিবিরের প্রাক্তন সাংসদ কপিল সিব্বলও।
[আরও পড়ুন: ‘সাধ্যমতো দেশের সেবা করেছি’, শ্রীলঙ্কার চরম আর্থিক সংকটে সাফাই প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি গোতাবায়ার]
প্রসঙ্গত, বাদল অধিবেশনের আগে শব্দ ‘ফতোয়া’ও জারি হয়েছে সংসদে (Parliament)। একগুচ্ছ শব্দতালিকা প্রকাশ করেছে লোকসভার সচিবালয়। সেগুলিকে ‘অসংসদীয়’ শব্দ হিসেবে দাগিয়ে দিয়ে বলা হয়েছে এগুলি সংসদে বলা যাবে না। যদিও লোকসভার স্পিকার ওম বিড়লা জানিয়েছেন, কোনও শব্দকেই নিষিদ্ধ করা হয়নি। তিনি বলেছেন, ”কোনও শব্দই নিষিদ্ধ হয়নি। আমরা কেবল সেই শব্দগুলিকে একত্র করেছি যেগুলি মুছে ফেলা হয়েছে।” তবুও বিতর্ক থামার নাম নেই। বরং এর সঙ্গে যোগ হয়েছে সংসদ চত্বরে বিক্ষোভ, ধরনা বা অনশনে নিষেধাজ্ঞা জারি নিয়ে।