সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: তাঁদের দুজনের সম্পর্ক নিয়ে কত কথা! নিন্দুকরা বলেন, দুজনের সম্পর্কে বরফ জমেছে। বাক্যালাপ পর্যন্ত বন্ধ তাঁদের। একজন সর্বভারতীয় ফুটবল ফেডারেশনের প্রেসিডেন্ট কল্যাণ চৌবে (Kalyan Chaubey)। অন্যজন ভারতের ফুটবল দলের হেডস্যর ইগর স্টিমাচ (Igor Stimac)। এঁদের দুজনের সম্পর্ক নিয়ে যখন কাশ্মীর থেকে কন্যাকুমারী জল্পনা করছে, তখন এহেন সংঘাতের বিতর্কে জল ঢেলে দিলেন স্বয়ং কল্যাণ চৌবে এবং ইগর স্টিমাচ। জানিয়ে দিলেন, দলের সাফল্য আনতে হলে মাঠ ও মাঠের বাইরে টিমের মতো করেই খেলতে হবে। আর তা নিয়ে দুজনেই জানালেন নিজেদের ভবিষ্যৎ লক্ষ্যের কথা।
এশিয়ান কাপে ভারতের ভরাডুবি ঘটেছে। সেই হারের ক্ষতে প্রলেপ দিয়ে ভারতের পাখির চোখ এখন ২০২৬ বিশ্বকাপের যোগ্যতাঅর্জনকারী পর্ব। চলতি মাসের ২১ ও ২৬ তারিখ আফগানিস্তানের সঙ্গে ভারতের খেলা রয়েছে। ২১ তারিখ সৌদি আরবে অ্যাওয়ে ম্যাচ। ২৬ তারিখ গুয়াহাটিতে ভারতের হোম ম্যাচ। এই ম্যাচের আগে একযোগে মাঠে নামার বার্তা দিলেন সর্বভারতীয় ফুটবল ফেডারেশনের সভাপতি এবং সুনীল ছেত্রীদের হেডস্যর।
[আরও পড়ুন: টাউন-মহামেডান ম্যাচে ক্রিকেট হয়নি, গড়াপেটা বিতর্কে বিস্ফোরক রিপোর্ট আম্পায়ারদের]
বৃহস্পতিবার ট্রেল ব্লেজার্সের অনুষ্ঠানে ফেডারেশন সভাপতি বলে দেন, কোচের সঙ্গে সংঘাত রয়েছে, এমন গুজব ছড়ানো উচিত নয়। আমার কোচের সঙ্গে কথা হয়েছে। আমাদের টেকনিক্যাল কমিটি আছে। ওরা ৩০০-র বেশি ম্যাচের সঙ্গে যুক্ত। কোচ এবং সাপোর্ট স্টাফদের সঙ্গে সেই কমিটির সদস্যদের আলোচনাও হয়েছে। ওরা সচিবকে রিপোর্ট জমা দেবে। আর সচিব আমাকে দেবে সেই রিপোর্ট। আমি আর কোচ একসঙ্গে বসে আছি মানেই দুজনে সব আলোচনা করে নেব, তা তো নয়। তাহলে তো কমিটি তৈরির কোনও অর্থই নেই।
এর পরই তিনি যোগ করেন, ফেডারেশনের সঙ্গে অনেক মানুষ যুক্ত। ফেডারেশন নিজেই একটা গোটা টিম। তাই সেখানে একা একা কিছু বদলানো সম্ভব নয়। সবাই মিলেই উন্নতির কথা ভাবতে হবে। শুধু আমি-আমি করলে ফুটবলের উন্নতি বন্ধ হয়ে যাবে। যদিও অন্যের কাছে নিজেকে প্রমাণ করার বিষয়টা আমি বিশ্বাস করি না।
আফগান-যুদ্ধের আগে স্টিমাচ ৩৫ জনের সম্ভাব্য স্কোয়াড ঘোষণা করেছেন। এশিয়ান কাপ ভুলে তাঁর ফোকাস এখন বিশ্বকাপের যোগ্যতাঅর্জন পর্ব। প্রথম ম্যাচে কুয়েতকে ০-১ গোলে হারিয়েছে ভারত। ফলে বিশ্বকাপের যোগ্যতাঅর্জন পর্বে আশার আলো দেখতেই পারে ভারত। আসন্ন যুদ্ধের আগে ইগরের দাবি, ”ভারতে অনেক প্রতিভা রয়েছে। আমাদের ফোকাস করতে হবে যে সেই প্রতিভা কীভাবে আরও শাণিত করা যায়। আমরা চাইলে আফগানিস্তানের থেকে বেশি ভালো দল হিসেবে নিজেদের প্রমাণ করতেই পারি। তবে পুরোটাই মাঠের পারফরম্যান্স দিয়ে।” নব্বই মিনিটের মাঠের লড়াই সব অর্থেই অন্যধরনের। মরিয়া লড়াইয়ের কাছে মাথা নত করতে পারে প্রবল শক্তিশালী কোনও প্রতিপক্ষ। কুয়েতের মতো প্রতিপক্ষকে মাটি ধরিয়ে ভারতীয় শিবিরে স্বস্তির হাওয়া বললেও অত্যুক্তি করা হবে না। ইগর স্টিমাচ সমষ্টিতে বিশ্বাসী। ব্যক্তি তাঁর কাছে পিছনের সারিতে। তারই প্রতিধ্বনি শোনা গেল ইগরের বক্তব্যে, ফুটবলের উন্নতির স্বার্থে তিনি কখনও ব্যক্তিতে বিশ্বাসী নন। টিম গেমেই ভরসা রাখেন। ফুটবল তো দলগত খেলা। একা একজনের পক্ষে একদিন-দুদিন ম্যাচ জেতানো সম্ভব হয়, রোজ রোজ হয় না। দল হিসেবে সংগঠিত হয়ে উঠলে তবেই প্রতিপক্ষের চোখে চোখ রেখে লড়ে ম্যাচ বের করে আনা সম্ভব হয়।
তাই ফেডারেশন সভাপতির কথার সূত্র টেনেই স্টিমাচ বলে দেন, ”আমরা কখনওই একা নয়, চিরকাল আমরাই ছিলাম। আর অন্যের কাছে নয়, নিজের কাছে নিজেকে প্রমাণ করতে পারলেই উন্নতি হবে।”
বিতর্ক, সংঘাতের কালো মেঘ উড়িয়ে দিয়ে একসঙ্গে চলার বার্তা দিয়ে গেলেন ইগর এবং কল্যাণ।