সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: দেখা হয়েছে। কথাও হয়েছে। তবে ফলপ্রসূ কোনও আলোচনা হয়নি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডোর মধ্যে। লাওসে ২১তম আসিয়ান বৈঠকে মোদি ও ট্রুডোর সাক্ষাৎ প্রসঙ্গে এমনটাই জানা যাচ্ছে সংবাদমাধ্যম সূত্রে। ফলে খলিস্তানি জঙ্গি হত্যাকাণ্ডে দুই দেশের সম্পর্কে জমাট বাধা বরফ এখনও গলেনি বলে মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল।
মোদি সাক্ষাৎ প্রসঙ্গে শুক্রবার লাওসের রাজধানী ভিয়েনতিয়েনে সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে ট্রুডো বলেন, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে সাক্ষাতে সংক্ষিপ্ত মত বিনিময় হয়েছে। সেখানে কানাডার মানুষের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন তিনি। এবং সেই লক্ষ্য বেশকিছু কাজ করতে হবে বলেও জোর দিয়ে জানান তিনি। আলোচনার বিষয় নিয়ে স্পষ্টভাবে কিছুই জানাতে রাজি হননি কানাডার প্রধানমন্ত্রী। তবে এটা জানান যে, দুই দেশের সম্পর্কের উন্নতিতে বেশকিছু বাধা রয়েছে, সেই সমস্যা সমাধানে দুই দেশকে যৌথভাবে এগিয়ে আসতে হবে।
উল্লেখ্য, দুই দেশের সম্পর্কের টানাপোড়েনের সূত্রপাত ২০২৩ সালের জুন মাসে। কানাডায় এক গুরুদ্বারের বাইরে খলিস্তানপন্থী নিজ্জরকে গুলি করে হত্যা করে অজ্ঞাতপরিচয় দুষ্কৃতী। এই ঘটনার পিছনে ভারতের হাত রয়েছে বলে সরাসরি অভিযোগ করেন ট্রুডো। যদিও ভারত সে অভিযোগ পুরোপুরি অস্বীকার করে। এই ইস্যুতে দুই দেশের কূটনৈতিক সম্পর্ক একেবারে তলানিতে গিয়ে ঠেকে। সেই ঘটনার পর ইতালিতে জি-৭ সম্মেলন ও গত সেপ্টেম্বরে দিল্লিতে জি-২০ শীর্ষ সম্মেলনের ফাঁকে বৈঠক করেন মোদি ও ট্রুডো। যদিও তাতে জটিলতা বিশেষ কাটেনি।
এবার লাওসে মোদি-ট্রুডো সাক্ষাত প্রসঙ্গে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক আধিকারিক জানান, শুক্রবার সাক্ষাৎ হলেও নরেন্দ্র মোদি ও ট্রুডোর মধ্যে ফলপ্রসূ কোনও আলোচনা হয়নি। ভারত আশা করে কানাডার মাটিতে ভারত বিরোধী যে খলিস্তানি কার্যকলাপ চলছে তা কোনওভাবে সমর্থন করবে না সেখানকার সরকার। কানাডার ভূখণ্ড ব্যবহার করে যারা ভারতের বিরুদ্ধে সহিংসতা, চরমপন্থা এবং সন্ত্রাসবাদ চালাচ্ছে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ভারত কানাডার সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ককে গুরুত্ব দেয়। তবে খালিস্তানি কার্যকলাপকে যদি কানাডার সরকার মদত দিয়ে চলে সেক্ষেত্রে দুই দেশের সম্পর্ক মেরামত সম্ভব নয়।
এদিকে বৃহস্পতিবার এই ইস্যুতে মুখ খোলেন কানাডার পররাষ্ট্রমন্ত্রী মেলানি জোলি। ভারত-কানাডার সম্পর্ক বর্তমানে অত্যন্ত ‘উত্তেজনাপূর্ণ’ এবং ‘অত্যন্ত কঠিন’ বলে বর্ণনা করেন। এমনকী দাবি করেন, কানাডার মাটিতে নিজ্জরের মতো আরও হত্যাকাণ্ডের আশঙ্কা রয়েছে। সেই মন্তব্যের প্রেক্ষিতে সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে ট্রুডো বলেন, গত কয়েকমাস ধরে দেশজুড়ে ইন্দো-কানাডিয়ানদের উপর প্রাণঘাতী হামলার ইঙ্গিত পাচ্ছি আমরা। পরিস্থিতি সামাল দিতে আমরা যথোপযুক্ত ব্যবস্থা নেব।