সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: গল ফেস রোড থেকে প্রেমদাসা স্টেডিয়ামের দূরত্ব মিনিট পনেরোর। কিন্তু দুটো জায়গার মধ্যে ভাল বৈপরীত্য রয়েছে। গল ফেস চত্বর একেবারে ঝাঁ-চকচকে। ঠিক সামনেই ভারত মহাসাগর। কিছুটা এগোলেই আবার বিশাল শপিং মল। এশিয়া কাপের (Asia Cup) পোস্টারে ছয়লাপ চারদিক। প্রেমদাসার সামনে সে’সব নেই তেমন। এলাকাটাও পুরেনো। বাড়িঘর একটু প্রাচীন আমলের। স্টেডিয়ামের বাইরের দিকটাও খানিকটা তাই। কোথাও এবড়ো-খেবড়ো। কোথাও সামান্য জল-কাদা। তবে প্রেমদাসার আলাদা একটা গুরুত্ব রয়েছে শ্রীলঙ্কা ক্রিকেটে। ঐতিহ্যেও যে বিত্তশালী।
ভারতীয় দল এদিন প্রেমদাসায় ঢুকল সন্ধে সাড়ে সাতটা নাগাদ। তার খানিক আগে বাংলাদেশ প্র্যাকটিস শেষ করে বেরিয়েছে। একটা নেটে অবশ্য শ্রীলঙ্কার জনা কয়েক ক্রিকেটার তখনও রয়েছেন। তা দেখা গেল, বিরাট কোহলি বাইরের প্র্যাকটিস এরিয়াতেই নেট শুরু করে দিলেন!
[আরও পড়ুন: গ্রেপ্তার অন্ধ্রপ্রদেশের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী চন্দ্রবাবু নায়ডু, আটক পুত্রও]
পাল্লেকেলের ভারত-পাক ম্যাচে ভারতীয় টপ অর্ডারকে প্রবল ভুগিয়েছিলেন শাহিন শাহ আফ্রিদি (Shaheen Shah Afridi)। নেট দেখে মনে হল, এবার পাকিস্তানের শাহিনকে খেলার প্রস্তুতি আরও ভালভাবে সারতে চাইছেন ভারতীয় ব্যাটাররা। বিরাট (Virat Kohli) শুরুতেই ডেকে নিলেন নুয়ানকে। ভারতীয় টিমের থ্রো ডাউন স্পেশালিস্টের টিমের সদস্য। নুয়ানের বিশেষত্ব হল, তিনি বাঁ-হাতে থ্রো ডাউন দেন। ভারতীয় দলে যেহেতু কোনও বাঁ-হাতি পেসার নেই, তাই বিরাটকে নেটে দীর্ঘক্ষণ নুয়ানকে খেলে গেলেন। কখনও সপাটে পুল মারছিলেন। কখনও কভার ড্রাইভ। তারপর মাঠে কিছুক্ষণ ফুটবল। সে’সব শেষ করেই সবাই আবার বাইরের প্র্যাকটিস চত্বরে।
[আরও পড়ুন: ইডেনে উন্মোচিত বিশ্বকাপ ট্রফি, অলিম্পিকেও যুক্ত হোক ক্রিকেট, প্রস্তাব ভারতীয় তারকাদের]
এমনিতে ভারত বনাম পাকিস্তান কিছু না কিছু উত্তাপ বয়ে নিয়ে আসেই। বলা হয়, মাঠের বাইরের চাপটা নাকি থাকে মারাত্মক। যদিও ভারতীয় দলকে দেখে একবারের জন্য মনে হবে না, কোনওরকম চাপ আছে। সবাই ফুরফুরে। দুপুরের দিকে রোহিত শর্মা (Rohit Sharma) আবার গিয়েছিলেন পার্সি অভয়শেখরার বাড়িতে। শ্রীলঙ্কান টিমের সবচেয়ে জনপ্রিয় সমর্থক। টিমের সঙ্গে আগে সর্বত্র ট্রাভেল করতেন। কিন্তু বার্ধক্যের কারণে এখন আর হয়ে ওঠে না। ভারতীয় টিমের মধ্যে রোহিত আর বিরাট প্রচণ্ড পছন্দের পার্সির। ইদানিং শরীরটা যাঁর একেবারেই ভাল যাচ্ছে না। সেই কথা শোনার পর রোহিত পার্সির বাড়ি গিয়ে দেখা করে আসেন। ব্যাটে সই করেন। পার্সি প্রচণ্ড আবেগতাড়িত হয়ে পড়েন। তিনি ভাবতেও পারেননি রোহিত এমন ‘সারপ্রাইজ’ দেবেন তাঁকে।
রবিবার এরকম কিছু ‘সারপ্রাইজ’ অবশ্য ভারতীয় টিমেও থাকতে পারে। পাল্লেকেলে দুটো ম্যাচেই চার পেসার (হার্দিক পাণ্ডিয়াকে নিয়ে) খেলেছিল ভারত। তবে প্রেমদাসায় খুব সম্ভবত সেই কম্বিনেশন বদলাতে চলেছে। প্রেমদাসার প্র্যাকটিস পিচগুলোতে (ম্যাচ উইকেটের ঠিক পাশেই) যেরকম বল ঘুরছিল, তাতে তিন স্পিনারে খেলার সম্ভাবনাই বেশি। অর্থাৎ রবীন্দ্র জাদেজার আর কুলদীপ যাদবের সঙ্গে জুড়ে দেওয়া হবে অক্ষর প্যাটেলকে। সেক্ষেত্রে শার্দূল ঠাকুরকে বাইরে বসতে হবে। জসপ্রীত বুমরাহ ফিরে এসেছেন। এখন মহম্মদ শামি না মহম্মদ সিরাজ, কার জায়গায় বুমরাকে খেলানো হয়, সেটাই জিজ্ঞাস্য। তবে পাকিস্তান ম্যাচে লোকেশ রাহুলের খেলার কোনও সম্ভাবনা নেই। চোট সারিয়ে টিমের সঙ্গে দু’দিন আগে যোগ দিয়েছেন। এদিন ব্যাটিংয়ের থেকেও রাহুলকে বেশি সময় উইকেটকিপিং নিয়ে পড়ে থাকতে দেখা গেল। রাহুল চলে আসায় সঞ্জু স্যামসন দেশে ফিরে গেলেন।