সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর কার্যত নৈরাজ্য চলছে প্রশাসনবিহীন বাংলাদেশে। আওয়ামি লিগের সদস্যদের পাশাপাশি বেছে বেছে টার্গেট করা হচ্ছে সংখ্যালঘু হিন্দুদের। পরিস্থিতি এমন পর্যায়ে গিয়েছে যে ভিটেমাটি ছেড়ে ভারতে চলে আসতে মরিয়া সেখানকার জনগণ। সীমান্তপারে অপেক্ষারত বাংলাদেশি হিন্দুদের সেই করুণ ছবি ইতিমধ্যেই প্রকাশ্যে এসেছে। এবার পশ্চিমবঙ্গ, ত্রিপুরা ও মেঘালয়ে অবৈধভাবে সীমান্ত পারের চেষ্টায় বিএসএফের হাতে গ্রেপ্তার হলেন ১১ জন বাংলাদেশি।
রবিবার এই তথ্য প্রকাশ্যে এনেছে দক্ষিণবঙ্গ বিএসএফের হেডকোয়ার্টারের জনসংযোগ দপ্তর। তাদের তরফে জানানো হয়েছে, ''অবৈধভাবে বাংলাদেশ সীমান্ত পেরিয়ে ভারতে অনুপ্রবেশের চেষ্টা করছিলেন ১১ জন। তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বাংলাদেশ লাগোয়া দেশের ৩ সীমান্ত থেকে এই ১১ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। পশ্চিমবঙ্গ থেকে ২ জন, ত্রিপুরা থেকে ২ জন এবং মেঘালয় সীমান্ত থেকে ৭ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। অভিযুক্তদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। পাশাপাশি বিস্তারিত তদন্তের জন্য রাজ্য পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হবে বাংলাদেশিদের।" পাশাপাশি আরও জানানো হয়েছে, ''সীমান্ত অবৈধ অনুপ্রবেশ আটকাতে ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ও বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে। এছাড়াও, এই পরিস্থিতি সামাল দিতে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)-এর সঙ্গে যোগাযোগ রাখছে বিএসএফ।''
[আরও পড়ুন: হিন্ডেনবার্গের নয়া রিপোর্ট, মোদিকে দুষে সংসদীয় কমিটির তদন্ত দাবি খাড়গের]
বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের উপর নির্যাতন ভয়াবহ আকার নেওয়ায় ইতিমধ্যেই এ বিষয়ে কেন্দ্রের তরফে উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছে। তবে অবৈধভাবে কাউকেই যে ভারতে প্রবেশ করতে দেওয়া হবে না সে কথা স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছে সরকার। গুরুতর এই পরিস্থিতির মাঝে সীমান্ত সমস্যা সমাধানে বিজিবির সঙ্গে ফ্ল্যাগ মিটিং করছে বিএসএফ। এদিকে সামনেই স্বাধীনতা দিবস সে কথা মাথায় রেখে বাংলাদেশের মধ্যে ৪ হাজার ৯৬ কিলোমিটার দীর্ঘ সীমান্তে নিরাপত্তায় যাতে কোনও খামতি না থাকে সেদিকেও তৎপর বিএসএফ কর্তারা। নিরাপত্তা জোরদার করতে সীমান্ত এলাকার জেলা প্রশাসন, পুলিশ এবং কাস্টমস-এর মতো সহযোগী এজেন্সিগুলির সঙ্গে আলোচনা চালাচ্ছে বিএসএফ।
[আরও পড়ুন: ‘আয় নয়, আত্মহত্যাই দ্বিগুণ হয়েছে’, কৃষক অস্ত্রে শান দিয়ে মোদিকে তোপ পওয়ারের]
অন্যদিকে, বাংলাদেশের অভ্যন্তরে হিন্দুদের উপর বেলাগাম হিংসার ঘটনায় একজোট হয়ে প্রতিবাদে নামতে দেখা গিয়েছে হিন্দুদের। গত দিন দুয়েক ধরে বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকা-সহ চিটাগংয়ের মতো বড় বড় শহরে বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন সকলে। বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম সূত্রে খবর, শনিবার চিটাগংয়ের ঐতিহাসিক চেরাগী পাহাড় চত্বরে লক্ষ লক্ষ মানুষ বিক্ষোভ কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করেছিলেন। এর জেরে প্রায় ৩ ঘণ্টা যান চলাচল স্তব্ধ হয়ে যায় সেই অঞ্চলে। এই পরিস্থিতিতে হিন্দু-সহ অন্যান্য সংখ্যালঘুদের উপর হামলার তীব্র নিন্দা করে ইউনুস বলেন, “সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের উপর হামলা খুবই জঘন্য কাজ।” হিন্দু, খ্রিস্টান, বৌদ্ধ পরিবারদের উপর যাতে হামলা না হয় তার আহ্বান জানিয়েছিলেন আন্দোলনকারী পড়ুয়ারাও।