বিশ্বজ্যোতি ভট্টাচার্য, শিলিগুড়ি: অবিরাম বৃষ্টি ও ভূমিধসে বিপর্যস্ত উত্তর সিকিম। গতকালই বিপদসীমার উপর দিয়ে বইতে শুরু করে তিস্তা। এদিন জলস্তর আরও বেড়েছে। রবিবার সকালে চুংথাং বাঁধ প্রকল্পের মান নিয়ন্ত্রণ ল্যাবরেটরি ভেসে গিয়েছে। তিস্তার জলোচ্ছ্বাসে পাথর ও কংক্রিট ধসে ফিডাং বেইলি ব্রিজ মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। নেই বিদ্যুৎ, পানীয় জল। বিভিন্ন সড়ক অবরুদ্ধ হওয়ায় খাবারের সমস্যাও বাড়ছে। উত্তর সিকিমের বিভিন্ন এলাকায় অন্তত দেড় হাজার পর্যটক আটকে পড়েছেন। সিকিম প্রশাসনের তরফে পর্যটকদের হোটেলে থাকার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। রাস্তা খুলে গেলে তাঁদের গ্যাংটকে নামিয়ে আনা হবে।
মঙ্গনের পুলিশ সুপার সোনম দেচচু ভুটিয়া বলেন, "অবিরাম বৃষ্টিপাতের জেরে ভূমিধসে প্রধান সড়ক অবরুদ্ধ হয়েছে। লাচেনে ১১৫ জন এবং লাচুংয়ে ১,৩৫০ জন পর্যটক আটকে পড়েছেন।" ভূমিধসের জন্য উভয় দিক থেকে বেরনোর পথ অবরুদ্ধ। নিরাপত্তার জন্য পর্যটকদের হোটেলেই থাকতে বলা হয়েছে। বৃষ্টি কিছুটা নিয়ন্ত্রণে এলে রাস্তা খোলার কাজ জোরকদমে চলবে। রাস্তা খুলে গেলে পর্যটকদের নিরাপদে নামিয়ে আনা হবে। বিভিন্ন এলাকার রাস্তায় নতুন করে ধস নেমেছে। বহু জায়গায় জলের তোড়ে রাস্তা ভেসে গিয়েছে। শুধু তাই নয়, বড় বড় পাথর ভেঙে পড়ে আটকে একাধিক রাস্তা।
টানা বৃষ্টির কারণে খাবার ও পানীয় জলের সমস্যাও দেখা দিয়েছে। সাধারণ বাসিন্দাদের কাছে ত্রাণ পৌঁছনোর জন্য কাজ চলছে। বিভিন্ন এলাকায় পরিস্থিতি আয়ত্তে আনার জন্য কাজ চালাচ্ছে সেনাবাহিনী ও বিপর্যয় মোকাবিলা দপ্তরের লোকজন। সিকিম প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, শনিবার সন্ধ্যায় ধস সরিয়ে লাচুং রাস্তা পুনরুদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে। তবে চুংথাং থেকে শিপগিয়ার এবং সাঙ্কলং হয়ে ফিদাং যাতায়াতের রাস্তাটি একাধিক ভূমিধসে অবরুদ্ধ। শনিবার বিকেল থেকে মোবাইল পরিষেবা চালু হয়েছে। সন্ধ্যায় কিছু এলাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহ স্বাভাবিক হয়েছে। আজ, রবিবারের মধ্যে পানীয় জল সরবরাহ স্বাভাবিক করার চেষ্টা চলছে।
বৃহস্পতিবার রাতে লাচেন-লাচুং মহাসড়কের মুনসিথাংয়ের কাছে পর্যটকবোঝাই গাড়ি হাজার ফুট গভীর খাদে পড়ে তিস্তায় গড়িয়ে গেলে একজনের মৃত্যু হয়। দুজনকে উদ্ধার করা হলেও এখনও আটজন নিখোঁজ। মঙ্গনের জেলাশাসক অনন্ত জৈন জানিয়েছেন, তিস্তায় পর্যটকদের গাড়িটি যেখানে পড়েছিল সেখানেই আছে। নদীর জলস্তর কমলেই উদ্ধারকাজ শুরু হবে।
