সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: স্বামী-সন্তান নিয়ে সংসার ছিল। কিন্তু এর মাঝেই এক যুবকের প্রেমে পড়েন যুবতী। দু'জনের মধ্যে ভালোবাসা দৃঢ় হয়। প্রেমিকের হাত ধরে স্বামীর ঘর ছাড়ার ছক কষেন। আর নিজেদের পরিকল্পনা সফল করতে নৃশংস কাণ্ড ঘটালেন দু'জনে। প্রেমিকের সঙ্গে হাত মিলিয়ে এক নিরীহ দলিত বৃদ্ধকে পুড়িয়ে হত্যা করলেন যুবতী! শুধু তাই নয়, পোড়ানোর আগে বৃদ্ধকে নিজের পোশাক, গয়না পরিয়ে দিয়েছিলেন। এই ভয়ংকর ঘটনা গুজরাটের পাটন জেলার।
জানা গিয়েছে, ঘটনার সূত্রপাত মঙ্গলবার ভোরে। অভিযুক্ত যুবতীর নাম গীতা। স্বামীর নাম সুরেশ গেঙ্গা ভীমা অহির। ৩ দিন বছরের ছেলের কান্নায় সেদিন ঘুম ভেঙে যায় সুরেশের। আশপাশে কোথাও গীতাকে দেখতে পাননি। স্ত্রীকে খোঁজার জন্য বাড়ির পিছনের উঠানে যান। সেখানেই একটি আধপোড়া মৃতদেহ দেখতে পান। গায়ে মহিলার পোশাক ও গয়না। পা থেকে মাটি সরে যায় সুরেশের। তিনি আশঙ্কা করেন যে গীতা হয়তো আত্মঘাতী হয়েছেন। খবর দেন স্থানীয় থানায়।
খবর পেয়ে মৃতদেহটি উদ্ধার করে পুলিশ। কিন্তু ময়নাতদন্তের রিপোর্ট হাতে পেয়ে অবাক হয়ে যান তদন্তকারীরা। কারণ ওই দেহটি এক পুরুষের ছিল। তদন্তে নেমে জানতে পারেন ওই ব্যক্তির নাম হরজি সোলাঙ্কি। পাশের গ্রাম ভাউভায় একাই থাকতেন। দিনমজুরের কাজ করতেন। তদন্তে ধীরে ধীরে পুলিশের হাতে চাঞ্চল্যকর তথ্য আসে। তদন্তকারীরা জানিয়েছেন, গীতা কয়েক মাস ধরে ভারত লুভা অহির নামের এক যুবকের সঙ্গে সম্পর্কে জড়িয়েছিলেন। দুজনে মিলে পরিকল্পনা করেন, গীতার আত্মঘাতী হওয়ার গল্প ফাঁদবেন। তারপর পালিয়ে গিয়ে নতুন জীবন শুরু করবেন। সেই পরিকল্পনা সার্থক করতে হরজিকে হত্যার ছক কষেন দু'জনে।
পুলিশ আরও জানিয়েছে, হরজিকে হত্যার আগে ভারত তাঁকে ফাঁকা জায়গায় নিয়ে যান। তারপর প্রথমে শ্বাসরোধ করার চেষ্টা করেন। অচেতন হলে তাঁকে বেঁধে বাইকে করে নিয়ে যান জাখোত্রা গ্রামে। যেখানে রাতে গীতাও চলে আসেন। হরজিকে গীতার পোশাক পরিয়ে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। ময়নাতদন্তের রিপোর্টে দেখা গিয়েছে, হরজি তখনও বেঁচে ছিলেন। তাঁকে জীবন্ত পুড়িয়ে মারা হয়েছে। পাশের একটি পেট্রোল পাম্পের কর্মীরা পুলিশকে জানিয়েছেন, গীতা সেদিন এক ক্যান পেট্রোল কিনেছিলেন। ঘটনার পর গীতা ও ভারত সান্তলপুর, রাধানপুর হয়ে পালিয়ে যান বাণাসকাঁঠার পালনপুরে। কিন্তু শেষরক্ষা হয়নি। সেখানকার স্টেশন থেকে বুধবার ভোররাতে তাঁদের গ্রেপ্তার করে পুলিশ। তাঁদের কাছ থেকে জোধপুরের টিকিট পাওয়া যায়। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ভারতীয় ন্যায় সংহিতার একাধিক ধারায় মামলা রুজু হয়েছে। ঘটনার তদন্ত চলছে।
