সোমনাথ রায়, নয়াদিল্লি: কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ যখন বাংলায় এসে রাজ্যে ক্ষমতা দখলের হুঙ্কার দিচ্ছেন, তখনই দিল্লিতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির দরবারে বহরমপুরের প্রাক্তন সাংসদ তথা কংগ্রেস ওয়ার্কিং কমিটির সদস্য অধীর চৌধুরী (Adhir Ranjan Chowdhury)। দেশজুড়ে, বিশেষত বিজেপি শাসিত রাজ্যগুলিতে যেভাবে বাংলাভাষীদের বাংলাদেশি সন্দেহে হেনস্তা করা হচ্ছে, তা নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর কাছে নালিশ জানিয়ে এলেন অধীর। একই সঙ্গে এসআইআরের জেরে মতুয়াদের কীভাবে হেনস্তা হতে হচ্ছে, সেটা নিয়েও অভিযোগ করেন প্রাক্তন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি।
সম্প্রতি ওড়িশায় বাংলা বলার অপরাধে গণপিটুনি দেওয়া হয় মুর্শিদাবাদের বাসিন্দা, পরিযায়ী নির্মাণ শ্রমিক জুয়েল রানাকে। পরবর্তীতে যাঁর মৃত্যু হয়। এই ধরনের আরও নানা ঘটনা ঘটেই চলেছে বিভিন্ন বিজেপিশাসিত রাজ্যে। অধীর উদ্বেগপ্রকাশ করে বলেন, এই ধরনের ঘটনা ঘটতে থাকলে রাজ্যে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্ট হতে পারে এবং হিংসার ঘটনা ঘটতে পারে। প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি লিখে অধীরের অভিযোগ, 'এসব পরিযায়ী শ্রমিকদের একমাত্র দোষ তাঁরা বাংলা ভাষায় কথা বলেন।"
অধীরের কথায়, "বাংলার কিছু অংশে মুসলিম জনসংখ্যা সংখ্যাগরিষ্ঠ। এই এলাকাগুলি বাংলাদেশের সীমান্তবর্তী। দেশের বিভিন্ন প্রান্তে পরিযায়ী শ্রমিকদের উপর হামলার ঘটনায় এই সব এলাকায় সাম্প্রদায়িক উত্তেজনা বাড়ছে।' প্রাক্তন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি বলছেন, প্রধানমন্ত্রীকে দ্রুত এ বিষয়ে হস্তক্ষেপ করতে হবে। পরিযায়ী শ্রমিকদের প্রতি বৈষম্য, হিংসা এবং নিপীড়নের বিরুদ্ধে সমস্ত রাজ্যের সরকারকে সতর্ক করতে হবে।
বাংলার ভোটের ঠিক আগে আগে অধীরের মোদি সাক্ষাৎ বেশ তাৎপর্যপূর্ণ। বিরোধীরা দীর্ঘদিন ধরেই অভিযোগ করেন, অধীরবাবুর সঙ্গে বিজেপির গোপন আঁতাঁত রয়েছে। অতীতে তাঁকে সরাসরি বিজেপিতে যোগদানের আহ্বানও জানিয়েছেন বিজেপির একাধিক নেতা। যদিও অধীর ঘনিষ্ঠদের দাবি, এই সাক্ষাতে রাজনীতি খোঁজার কোনও কারণ নেই। মালদহ-মুর্শিদাবাদের পরিযায়ী শ্রমিকদের দুর্দশা ঘোচাতেই সক্রিয় হয়েছেন তিনি। তাছাড়া SIR-এ যেভাবে মতুয়াদের নাগরিকত্ব প্রশ্নের মুখে, সেটা নিয়েও প্রধানমন্ত্রীকে হস্তক্ষেপ করতে বলেছেন অধীর।
