সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: প্রায় দেড় বছর মাটিতে পা দেওয়ার সুযোগ হয়নি। প্রথমে ভেবেছিলেন দিওয়ালিতে বাড়ি ফিরতে পারবেন। তা হয়নি। বড়দিনে অন্তত একটা সুখবর পাওয়া যাবে। তাও মেলেনি। নতুন বছরেও কোনও সুরাহা হল না। সারা বিশ্ব যখন ২০২১ সালকে স্বাগত জানিয়ে করোনামুক্ত বিশ্বের স্বপ্নে বুঁদ। তখন চিনা বন্দরে বন্দিদের মতো জীবন পাঠাচ্ছেন পুনের ২৯ বছরের গৌরব সিং (Gaurav Singh)। শুধু গৌরব নন তাঁর অনুমান, প্রায় দেড় হাজার ভারতীয় নাবিক এভাবেই চিনা বন্দরে আটকে রয়েছেন অনন্ত ৭৪টি জাহাজে।
ফোনে গৌরব জানান, প্রথমে করোনার অজুহাত দিয়ে তাঁদের আটকানো হয়েছিল। তারপর বলা হয়েছিল বন্দরে আরও জাহাজ পণ্য খালাসের লাইনে রয়েছে। আরও সময় লাগবে। এভাবেই নানা অজুহাতে দিনের পর দিন, মাসের পর মাস কাটতে থাকে। গৌরব ‘এমভি আনাস্টাসিয়া’র অফিসার। কয়লা নিয়ে ২০ জুন অস্ট্রেলিয়া থেকে ছেড়েছিল ভারতীয় জাহাজটি। ৩ আগস্ট চিনা বন্দরে পৌঁছায়। কোভিডের (COVID-19) জন্য কাউকে বন্দরে নামতে দেওয়া হয়নি বলেই জানা গিয়েছে। সময়ের সঙ্গে মানসিক অবসাদ বাড়ছে নাবিকদের।
[আরও পড়ুন: নতুন বছরের শুরুতে সামান্য স্বস্তি! কমল করোনার দৈনিক সংক্রমণ ও মৃত্যু]
গৌরব জানান, কিছুদিন আগেই এক নাবিক হাতের শিরা কেটে আত্মহত্যা করার চেষ্টা করেন। অনেকে অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। সামুদ্রিক আবহাওয়ায় চর্মরোগ বাড়ছে। মেডিক্যাল সুবিধা দেওয়ার আশ্বাস নাকি দেওয়া হয়েছে। কিন্তু, কূটনৈতিক মহল থেকে এখনও তাঁদের সঙ্গে কোনওরকম যোগাযোগ করা হয়নি বলে দাবি গৌরবের।
উল্লেখ্য, চিনা বন্দরে আটক ভারতীয় নাবিকদের দুর্দশার কথা লিখে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে (PM Narendra Modi) চিঠি লিখেছেন কংগ্রেস নেতা অধীর রঞ্জন চৌধুরী (Adhir Ranjan Chowdhury)। ‘এমভি জগ আনন্দ’ এবং ‘এমভি আনাস্টাসিয়া’র মতো জাহাজগুলি ছাড়িয়ে আনার কাজ অবিলম্বে শুরু করার আবেদন জানিয়েছেন তিনি। শোনা গিয়েছে, বিষয়টি নিয়ে চিন্তিত বিদেশমন্ত্রকও। মন্ত্রকের মুখপাত্র অনুরাগ শ্রীবাস্তব এর আগে জানিয়েছেন, চিনের কেন্দ্রীয় সরকার এবং প্রদেশ কর্তৃপক্ষের সঙ্গে নিরন্তর যোগাযোগ রাখা হচ্ছে ভারতের বেজিং দূতাবাসের পক্ষ থেকে। চলছে আলোচনা। নাবিকদের বন্দরে নামার অনুমতি দেওয়া নিয়েও কথা হচ্ছে।