সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: সিন্ধুর জল বন্ধ হতেই বন্ধু চিনকে পাশে টেনে ব্রহ্মপুত্রের জল বন্ধের হুঁশিয়ারি দিয়েছে পাকিস্তান। যদিও পাক হুঁশিয়ারিতে বিন্দুমাত্র ভাবিত নয় ভারত। বরং শাহবাজ শরিফদের অবান্তর যুক্তির হাঁড়ি ভেঙে পাকিস্তানকে ভূগোলের পাঠ দিলেন অসমের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মা। তথ্য দিয়ে তিনি জানালেন, চিন ব্রহ্মপুত্র নদে বাঁধ দিলে অসুবিধা তো দূর বরং সুবিধাই হবে ভারতের।
আসলে নেহেরু আমলের সিন্ধু জলচুক্তি স্থগিত করার পর নাকের জলে চোখের জলে অবস্থা পাকিস্তানের। একাধিক রিপোর্টে দাবি করা হয়েছে, শিন্ধুর শাখানদীগুলির জলপ্রবাহ কমে যাওয়ায় পাঞ্জাব প্রদেশে ব্যাপক জলসংকট দেখা দিয়েছে। চাষের জন্য প্রয়োজনীয় জলও মিলছে না। গুরুতর এই পরিস্থিতিতে পাক সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে শাহবাজের ঘনিষ্ঠ সহযোগী ইহসান আফজল রীতিমতো হুঁশিয়ারির সুরে বলেন, "ভারত যদি পাকিস্তানের জল বন্ধ করতে পারে তাহলে চিনও ভারতের সঙ্গে একই কাজ করতে পারে। মনে হয় সেটা একেবারে ভালো কাজ হবে না। এমনটা চলতে থাকলে পৃথিবী জুড়ে নতুন এক যুদ্ধ শুরু হবে।"
এর জবাবে পাকিস্তানকে ভূগোলের পাঠ পড়িয়ে এক্স হ্যান্ডেলে হিমন্ত লেখেন, 'ব্রহ্মপুত্র নদের যে জলপ্রবাহ তার মাত্র ৩০ থেকে ৩৫ শতাংশ চিন থেকে আসে। এই উৎস মূলত তিব্বতের হিমবাহ ও বৃষ্টিপাতের ফলে তৈরি হওয়া জল। অন্যদিকে এই নদের বাকি ৬৫ থেকে ৭০ শতাংশ জলের উৎস ভারত। বর্ষাকালে অরুণাচলপ্রদেশ, অসম, নাগাল্যান্ড, মেঘালয়ের জল এসে মেশে ব্রহ্মপুত্রে। এই রাজ্যগুলির ভারী বৃষ্টি ও সুবানসিরি, মানস, লোহিত, কামেং, ধানসিঁড়ির মতো প্রধান শাখা নদীগুলির জলে পুষ্ট হয় ব্রহ্মপুত্র। এ ছাড়াও খাসি, গারো এবং জয়ন্তীয়া পাহাড়ের কৃষ্ণানই, দিগারু এবং কুলসির মতো ছোট নদীর জলও এসে মেশে ব্রহ্মপুত্রে। ফলে এই নদের প্রধান জলের উৎস ভারত নিজেই।'
আরও বিস্তারিত ব্যাখ্যা দিয়ে হিমন্ত বলেন, 'ভারত-চিন সীমান্তে ব্রহ্মপুত্রের জলের প্রবাহ প্রতি সেকেন্ডে ২০০০ থেকে ৩০০০ কিউবিক মিটার। অথচ বর্ষার সময় অসমে এই জলপ্রবাহ বেড়ে দাঁড়ায় ১৫০০০ থেকে ২০০০০ কিউবিক মিটার প্রতি সেকেন্ড। ফলে পাকিস্তানের উচিত আসল সত্যটা জানা। চিন যদি ব্রহ্মপুত্রের জলপ্রবাহ বন্ধ করে সেক্ষেত্রে ভারতের সমস্যা তো দূর বরং উপকারই হবে। কারণ প্রতিবছর অসমে লক্ষ লক্ষ মানুষ বন্যার জেরে সমস্যায় পড়েন। ফলে চিন তাদের সামান্য জলপ্রবাহ বন্ধ করলে ভারতের সুবিধাই হবে। অবশ্য সে সম্ভাবনা বড়ই কম। ফলে পাকিস্তানের এই মিথ্যাচারের কোনও ভিত্তিই নেই।'
